হারুন-রুহুল’র বছরে আয় প্রায় কোটি টাকা
স্টাফ রিপোর্টার।।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিএসবির পাসপোর্ট ইন্ডোজ শাখা এএস আই হারুন অর রশীদ, রিজার্ভ অফিসার রুহুল আমীনের নেতৃত্বে চলছে পাসপোর্ট তদন্তের নামে নানা অনিয়ম। কনষ্টেবল নং ৬৭৭১ মোল্লা এলিন, কনস্টেবল নং ৫২৯৫ এস এম রইছ উদ্দিন ও পাসপোর্ট অফিসের ডাকবাহক হাফিজকে নিয়ে গঠিত টিম অবৈধ অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে গড়ে তুলেছে অবৈধ সম্পদ। সদ্য বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার মোজাম্মেল হকের আস্থাভাজন হয়ে পার্সপোর্ট প্রত্যাশীদের ভোগান্তিতে ফেলে লক্ষ টাকা আদায় করেছে তারা। এমনকি পার্সপোর্ট অফিসের দালাল চক্রও তাদের নিয়ন্ত্রনে। পুলিশে কর্মরত বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের জন্য শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলেও উর্দ্ধতনদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছে তারা।
খুলনা মেট্রোপলিট পুলিশের বিভিন্ন সূত্র জানায়, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিএসবির পাসপোর্ট ইন্ডোজ শাখায় কর্মরত এএসআই হারুন অর রশিদ বিদায়ী পুলিশ কমিশনারের সু-নজরে থেকে পাসপোর্ট তদন্ত কার্যক্রম নিয়ন্ত্রন করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। বেসামালভাবে অর্থ কামিয়েছে দু’হাতে। হারুনের দাম্ভিকতার অন্যান্য পাসপোর্ট তদন্তকারী কর্মকর্তারা থাকতেন তটস্থ। পাসপোর্ট তদন্তর পর জমা নেয়ার সময় প্রতি পাসপোর্ট বাবদ তাকে দিতে হয় ভাগার টাকা। এএসআই হারুন অর রশিদ পূর্ববর্তী কর্মস্থল কুষ্টিয়া জেলায় ২০২২ সালে আরও হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার পুলিশ সুপারের আস্থাভাজন হয়ে বদলি-নিয়োগ, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অবৈধ আয় করেন বলেও অভিযোগ আছে। রিজার্ভ অফিসার হিসাবে একজন এসআই থাকার কথা থাকলেও কুষ্টিয়া জেলার পুলিশ সুপারকে বিশেষপন্থায় প্রভাবিত করে দীর্ঘদিন রিজার্ভ অফিসার (আরও )এর দায়িত্ব পালন করেছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারনে বাগেরহাট জেলায় বদলি করা হলে লবিং এর মাধ্যমে এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারকে দিয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে সুপারিশ করিয়ে তৎক্ষণাৎ কেএমপিতে বদলি করায়। এএসআই হারুন অর রশিদ বিভিন্ন অপকর্মের কারণে চুয়াডাঙ্গা জেলায় কর্মরত থাকাকালীন অবস্থায় সাময়িক বরখাস্ত ছিল। এএসআই হারুন অর রশিদ সিটিএসবিতে যোগদান করার পর পাসপোর্ট ইন্ডোজ শাখাটি অতি লোভনীয়, তাই এএসআই আঃ রাজ্জাকের সহায়তায় পুলিশ কমিশনারের মাধ্যমে তৎকালীন পাসপোর্ট শাখার কর্মরত এএসআই মোঃ আনিসুর রহমানকে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশে বদলি করে পাসপোর্ট শাখায় এএসআই হারুন অর রশিদ দায়িত্ব নেয়।
অভিযোগ আছে সিটিএসবিতে রিজার্ভ অফিসার (আরও) হিসাবে কর্মরত এসআই রুহুল আমিন সিটিএসবির অফিসিয়াল কোন দায়িত্ব পালন না করলেও পাসপোর্ট তদন্তর ও চাকরির ভেরিভিশন (ভিআর) তদন্তের নামে পাসপোর্ট তদন্তের জন্য আবেদনকারীর বাড়িতে না গিয়ে মুঠোফোনের মাধ্যমে সিটিএসবি অফিসে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন রকম ভুল দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়, যদি কেউ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে তার ব্যাচম্যান ডিসি সিটিএসবি মহোদয়ের অফিস অডারলী দিয়ে ভুল ধরে ভয় ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পাসপোর্ট তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়।
সিটিএসবির রিজার্ভ অফিসার (আরও )এসআই রুহুল আমিন সিলেট রেঞ্জ অফিসে রিজার্ভ অফিসার (আরও ) হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ মফিজুর রহমান এর সহায়তায় নানান রকম অপকর্মের তথ্য পুলিশ হেডকোয়ার্টারে গেলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার এপিবিএন এরপর এসপিবিএন এ বদলি করলে টাকার জোরে দুই জায়গায় বদলি কাটিয়ে কেএমপিতে যোগদান করে, এই বদলির ব্যাপারে সহায়তা করেন তৎকালীন রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ মফিজুর রহমান।
কনষ্টেবল নং ৬৭৭১ মোল্লা এলিন গত ২৮আগস্ট কেএমপি সিটিএসবি হইতে কেএমপি উত্তর বিভাগে বদলি হয়েছে, সিটিএসবিতে ডাক ডিউটি হিসাবে কর্মরত ছিলেন, সেই সুবাদে প্রতিদিন সকালে অফিসে হাজির হয়ে খুলনা থানাধীন ডাকবাংলাস্থ খুলনা ডিজিটাল পোষ্ট অফিসের বাম পাশে অবস্থিত ফটোস্ট্যাটের দোকান দোকানদারের সাথে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসের দালাল চক্রর সাথে মিলিত হয়ে পাসপোর্ট অফিসের চিহ্নিত দালাল জাবেদ ওরফে ভেস্পা জাবেদ এর মাধ্যমে পাসপোর্ট জমা দেয়া, ছবি তোলা, ঠিকানা দুর্বলতা, কোনরকম , কাগজপত্র ভুল থাকা ইত্যাদি পাসপোর্ট দালাল আমতলার জাবেদ এর চুক্তি করে কনস্টেবল মোল্লা এলিন এর কাছে দিলে কনস্টেবল এলিন সিটিএসবি এর ডাক নিয়ে পাসপোর্ট অফিসের যে পাসপোর্ট অফিসের ডাকবাহক এর কাছে বুঝিয়ে দিলে সবকিছু সুষ্ঠভাবে হয়ে যায়, যদি কারো পাসপোর্টে বড় ধরনের ভুল থাকে তাহলে কনস্টেবল এলিন এর কাছে আসলে মোটা অংকের টাকা নিয়ে সমাধান হয়ে যায়, প্রতিদিন কার্যক্রম শেষে কেএমপি সদর দপ্তরের পশ্চিম পাশে মসজিদ গলির মধ্যে টাকা লেনদেন ও ভাগাভাগি হয়।
সূত্র জানায়, দুই নম্বর পাসপোর্ট- পাসপোর্ট অফিসে জমা হওয়ার পরে সিরিয়াল নম্বর অনুযায়ী খুলনা সিটিএসবি অফিসে কর্মরত এএসআই হারুন অর রশিদ এর কাছে আসলে হারুন সেগুলি নিজের কাছে রেখে অফিসে বসে তদন্ত করে রিপোর্ট দ্রুত পাসপোর্ট অফিসে জমা দেয়ার ব্যবস্থা করে দেন। কনস্টেবল এলিন মোল্লার বাড়ি বাগেরহাট জেলার সদর থানাধীন রাখালগাছি গ্রামে হওয়ায় প্রতিদিন অফিসিয়াল কার্যক্রম ও পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম শেষ করে বাড়ি চলে যায় (যাহা পুলিশের চাকরির নিয়ম বহির্ভূত) মোবাইল ট্র্যাকিং করলে বিষয়টি খোলসা হবে । কনস্টেবল এলিন মোল্লার রেলওয়ে মার্কেটে একটি কাপড়ের দোকান আছে, দোকানটি তার নিজের হলেও তার ছোট ভাইকে দিয়ে পরিচালনা করান, এছাড়া ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা করার জন্য দুইটি হলুদ রঙের পিকআপ গাড়ি রয়েছে। কনস্টেবল এলিন মোল্লা দীর্ঘদিন যাবৎ কেএমপি-তে কর্মরত রয়েছে। ২০০৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগদান করে। কনস্টেবল এলিন মোল্লা বিভিন্ন অভিযোগে প্রশাসনিক কারণে কেএমপি উত্তর বিভাগে বদলি হলেও কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে দোড়ঝাপ করছে, পুনরায় সিটিএসবিতে বদলির জন্য।
কেএমপি কন্ট্রোল রুমে কর্মরত কং ৫৬০৭ মোঃ আনোয়ার সরদার (বিপি ৮৪০৩০৩৭৭৮৬) এর সহায়তায় দালাল চক্রের মাধ্যমে পাসপোর্ট এর আবেদনের ডেলিভারি স্লিপ সংগ্রহ করে সেই সব পাসপোর্ট গুলো সিটিএসবি-তে কর্মরত এএসআই হারুন অর রশিদ পাসপোর্ট ইন্ডোজ শাখা জমা দিয়ে এএসআই হারুন অর রশিদ কে দিয়ে পছন্দের তদন্তকারী কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করান।
কনস্টেবল ৫২৯৫ এস এম রইছ উদ্দিন, দীর্ঘদিন সিটিএসবিতে কর্মরত থেকে পাসপোর্ট অফিসের ডাকবাহক হাফিজ মাধ্যমে দুই নম্বর পাসপোর্ট এএসআই হারুন অর রশিদ এবং এসআই রুহুল আমিনের মাধ্যমে অথবা সিটিএসবিতে কর্মরত এস এম রইস উদ্দিন এর পছন্দমত অফিসারকে দিয়ে টাকার মাধ্যমে তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিয়ে হাজার হাজার টাকা আয় করে সুন্দরবন কলেজের দক্ষিণ পাশে দিলখোলা রোডে চার তলা বাড়ি করেছেন এবং ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের দক্ষিণ পাশের ২৬ লক্ষ টাকা দিয়ে সোয়া দুই কাঠা জায়গা কিনেছেন, ও গ্রামের বাড়ি ফকিরহাটে প্রায় ৫ বিঘার মত মাছের ঘের ক্রয় করেছেন।