
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় উত্তরা ও টঙ্গীর আকাশ ভারী হয়ে উঠেছে কান্নায়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় পড়ে এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে। দগ্ধ ও আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন অনেকে। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে স্বজনদের আহাজারি, আর বার্ন ইনস্টিটিউটের চারপাশজুড়ে ভিড় আর শোক।
ঠিক এর আগেও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুনের ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন অনেক মানুষ, আহত হয়েছিলেন কয়েক শতাধিক। দুটি ঘটনাই পুরো জাতিকে গভীর শোকের সাগরে ভাসিয়েছে।
এমন হৃদয়বিদারক মৃত্যু কারও জন্যই সহজে মেনে নেওয়ার নয়। তবে ইসলামে এমন মৃত্যুর একটি বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। রাসুলুল্লাহ ﷺ এসব ধরণের দুর্ঘটনায় নিহতদের ‘শহীদ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
হজরত জাবের বিন আতিক (রা.) আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর পথে জিহাদে নিহত হওয়া ছাড়া আরও সাত ব্যক্তি শহীদের মর্যাদা লাভ করে। তারা হলো,
১. প্লেগ রোগে আক্রান্ত হয়ে যে মারা যায়
২. পানিতে ডুবে যে মারা যায়
৩. প্লুরিসি রোগে আক্রান্ত হয়ে যে মারা যায়
৪. পেটের রোগে যে মারা যায়
৫. আগুনে পুড়ে যে মারা যায়
৬. কোনো কিছু চাপা পড়ে যে মারা যায়
৭. যে নারী সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায়। (সুনানে আবু দাউদ: ৩১১৩)
আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, শহীদ হল পাঁচ ব্যক্তি; প্লেগরোগে মৃত, পেটের রোগে মৃত, পানিতে ডুবে মৃত, দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত এবং আল্লাহর পথে লড়াই করে নিহত ব্যক্তি। (সহিহ মুসলিম: ৫০৪৯)
এই হাদিসের প্রেক্ষিতে বোঝা যায়, শুধুমাত্র যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, বরং যেসব মানুষ অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় বা শারীরিক যন্ত্রণায় মৃত্যুবরণ করেন, তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ মর্যাদা—শহীদের মর্যাদা।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে যেসব মুসলমান ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন, আমরা আশাবাদী—আল্লাহ তাদের শহীদ হিসেবে কবুল করবেন। তাদের পরিবার-পরিজনের জন্য এটি হতে পারে ধৈর্যের সহায়ক ও অন্তরের সান্ত্বনা।
আল্লাহ তাআলা বিমান দুর্ঘটনা ও আগুনে নিহত সকল মুসলিম ভাই-বোনকে শহীদের মর্যাদা দান করুন। আহতদের দ্রুত আরোগ্য দান করুন। তাদের পরিবার-পরিজনকে ধৈর্য ধারণের তাওফিক দিন এবং উত্তম প্রতিদান দিন। আমিন।