আজ শ্রীশ্রী কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

আজ সোমবার (০৬ অক্টোবর) বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় উদ্‌যাপন করছে শ্রীশ্রী লক্ষ্মীপূজা, যা কোজাগরী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হওয়ার পর প্রথম পূর্ণিমা তিথিতেই এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। হিন্দু ধর্মবিশ্বাসে এই পূর্ণিমা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এদিনেই দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয় ধন-ঐশ্বর্য, সৌভাগ্য ও শান্তির প্রত্যাশায়।

ধর্মীয় শাস্ত্রমতে, দেবী লক্ষ্মী ঐশ্বর্য ও সমৃদ্ধির প্রতীক। তিনি ধনসম্পদ, আলো, জ্ঞান, সৌন্দর্য, সাহস, উর্বরতা ও দানশীলতার দেবী হিসেবেও পূজিতা। হিন্দু পুরাণে লক্ষ্মীকে বিষ্ণুর পত্নী এবং তাঁর শক্তির উৎস হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

পঞ্জিকা অনুযায়ী, আজ (৬ অক্টোবর) সকাল ১১টা ৫৪ মিনিটে পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে, যা চলবে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড পর্যন্ত।

ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে দেবী লক্ষ্মী ভক্তদের গৃহে আগমন করেন তাঁদের ধন-ধান্যে সমৃদ্ধ করতে। প্রাচীনকাল থেকে রাজা-মহারাজা, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ গৃহস্থ- সবাইই ভক্তিভরে এই পূজা পালন করে আসছেন। দেবীর আরাধনা করা হয় সরায়, ঘটে কিংবা মূর্তির মাধ্যমে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পূজা ঘরোয়া পরিবেশে সম্পন্ন হলেও কোথাও কোথাও এটি সর্বজনীনভাবেও হয়।

লক্ষ্মীপূজার দিন অনেক ভক্ত উপবাসব্রত পালন করেন। গৃহে সাজানো হয় নানা পূজার উপকরণে- সিঁদুর, ঘট, ধান, মাটি, আম্রপল্লব, দূর্বা, তুলসীপাতা, ফুল, চন্দন, ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য, আতপ চাল ও জল। ঘরের আঙিনায় চালের গুঁড়োর আলপনায় আঁকা হয় দেবীর পদচিহ্ন, আর মঙ্গলঘট ও ধানের ছড়ায় শোভা পায় গৃহদ্বার।

ঋগ্বেদে ‘শ্রী’ ও ‘ঐশ্বর্য’-এর দেবী হিসেবে লক্ষ্মীর নাম পাওয়া যায়। তৈত্তিরীয় সংহিতায় তাঁকে সূর্যদেব আদিত্যের দুই স্ত্রীর এক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শতপথ ব্রাহ্মণ ও রামায়ণে বলা হয়েছে, সমুদ্র মন্থনের সময় পদ্মহস্তে তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন। পৌরাণিক বর্ণনায় লক্ষ্মী কখনো বিষ্ণুশক্তি, কখনো কমলা, গজলক্ষ্মী বা মহালক্ষ্মী রূপে পরিচিত।

তাঁর রূপের বৈচিত্র্যও অনন্য- কখনো দ্বিভুজা, কখনো চতুভুজা, সর্বত্রই পদ্মে আসীন ও পদ্মহস্তা। প্রভাতের সূর্যের মতো দীপ্তিময় এই দেবী নানা অলংকারে সজ্জিতা, আর তাঁর বাহন পেঁচক (প্যাঁচা), যা জ্ঞানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

Share This Article