
রংপুরের কোতোয়ালি অঞ্চলের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (এসি) মো. আরিফুজ্জামান এবং সেখানকার তাজহাট থানার তৎকালীন ওসি মো. রবিউল ইসলামের নির্দেশে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করা হয়েছিল বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন দুজন সাক্ষী।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গতকাল বুধবার দুজন সাক্ষী জবানবন্দি দেন। তাঁরা হলেন এসআই (উপপরিদর্শক) মো. আশরাফুল ইসলাম ও এএসআই (সহকারী উপপরিদর্শক) মো. আবদুল্লাহ আল নাছির। তাঁরা দুজনই ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনসে কর্মরত ছিলেন।
জবানবন্দিতে এসআই আশরাফুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ১৬ জুলাই তৎকালীন এসি আরিফুজ্জামান ও তৎকালীন তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলামের নির্দেশে আমির হোসেন (সাবেক এএসআই) ও সুজন চন্দ্র রায় (সাবেক কনস্টেবল) শটগান ফায়ার করলে রাস্তায় দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা একজন ছাত্রের গায়ে গুলি লাগে। পরে বিকেল চারটার দিকে আরিফুজ্জামানের কাছে তাঁরা জানতে পারেন, গুলিবিদ্ধ ছাত্র আবু সাঈদ মারা গেছেন।
অপর দিকে জবানবন্দিতে এএসআই আবদুল্লাহ আল নাছির বলেন, গত বছরের ১৬ জুলাই তিনি দেখতে পান, তৎকালীন এসি আরিফুজ্জামান ও তৎকালীন ওসি রবিউল ইসলামের তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশে আমির হোসেন ও সুজন চন্দ্র রায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর ফটকের সামনে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা এক ছাত্রের দিকে শটগানের গুলি ছোড়েন। সেই ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তার ওপর পড়ে যান।
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয় আসামি কারাগারে আছেন। তাঁরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান, সাবেক কর্মচারী আনোয়ার পারভেজ, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ। গতকাল তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই মামলার বিচার চলছে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
শাপলা চত্বরের মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ল
২০১৩ সালের মে মাসে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের হত্যা-নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১২ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেন। শেখ হাসিনাসহ এ মামলায় আসামি ২১ জন।
চট্টগ্রামের মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ল
গণ-অভ্যুত্থানের সময় চট্টগ্রামে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়িয়ে আগামী ১২ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল এই আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এ মামলার আসামি।