
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি রাশেদা কে চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। তাদের বড় চ্যালেঞ্জটাই হবে এই প্রত্যাশা ম্যানেজমেন্ট—এক্সপেক্টেশনটা ম্যানেজ করা। সেটা ধরুন তরুণ প্রজন্ম যেমন ছিল, আমরাও যারা প্রবীণ আছি সবাই এক বাক্যে বলেছি, এটা একটি বড় চ্যালেঞ্জের জায়গা। কিন্তু শুধু সদিচ্ছা থাকলেই হবে না, সাহসও লাগবে। একটি সুন্দর, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার সাহস থাকতে হবে। যাতে শ্রমজীবী মানুষও নিশ্চিন্তে ভোট দিতে পারে, উদ্যোক্তারাও যেন ভোট দিতে পারে।
আজ রবিবার ইসির সঙ্গে বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধির সঙ্গে নির্বাচনী সংলাপে শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, মব ভায়োলেন্স নিয়ে আমরা আমাদের আশঙ্কা প্রকাশ করেছি। এ ছাড়া নারী ভোটারদের নিরাপত্তা নিয়েও একটি বড় প্রশ্ন এসেছে। দ্বিতীয় যে বিষয়টি আসছে তা হলো নারী প্রার্থীদের ব্যাপারে। নারী প্রার্থীদের বিষয়টি নিয়ে আমরা নারী আন্দোলনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছি, ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি যে এত বছর পরেও আমাদের মাত্র ৫ থেকে ৭ শতাংশ দেওয়া হবে—এটা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকেও জানিয়েছি।
তিনি বলেন, আরপিওর ব্যাপারে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে এখানে ৩০ শতাংশের ব্যাপারে তারা অবস্থান নিয়েছেন ও নেবেন। আমরা এ জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি।
এ সময় অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে গিয়ে যদি সরকার কোনো বাধা সৃষ্টি করে, তবে সেটি প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে তুলে ধরা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বলেছি, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা কিছুটা সঙ্কুচিত অবস্থায় আছেন। তারা যেন ঠিকমতো ভোট দিতে পারেন। ভোট দেওয়ার পরে নারী ও জাতিগত ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন।
সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেন, এতদিন আমরা দেখে এসেছি যে সরকার নির্বাচন কমিশনের উপর খবরদারি করেছে। আমরা বলেছি, নির্বাচন কমিশনকে এই শক্তি অর্জন করতে হবে, এই সাহস অর্জন করতে হবে—যাতে তারা সরকারকে খবরদারি করতে পারে। কারণ, শুধু নির্বাচন কমিশনের পক্ষেই সুষ্ঠু, অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন করা সম্ভব নয়, যদি না সরকার, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীরা সহযোগিতা করে।
এর আগে রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে সকাল ১১টার আগে এ সংলাপ শুরু হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন ইসির অধীনে অংশীজনের সঙ্গে এটা প্রথম মতবিনিময়।
সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির সিনিয়র সচিবসহ সংস্থাটির অন্য কর্মকর্তারা অংশ নেন। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবী প্রতিনিধির মধ্যে ১৩ জন ছিলেন। তারা হলেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাহমুদ হাসানউজ্জামান, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মো. মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক আব্দুল ওয়াজেদ, বিজিএমইএ পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসাইনি, কবি মোহন রায়হান, পুলিশ রিফর্ম কমিশনের মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জারিফ রহমান, টিআইবি পরিচালক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান।