জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৪ হাজার ২৪৬ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১০টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ৬৩২ কোটি এক লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ২০৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৪০৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেকের চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বুধবার (৮ জানুয়ারি) পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এসব তথ্য জানান।
একনেক সভায় অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ হলো—
অর্থ মন্ত্রণালয়ের “চট্টগ্রাম কর ভবন নির্মাণ” প্রকল্প; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ৩টি “মোংলা বন্দরে পশুর চ্যানেলে সংরক্ষণ ড্রেজিং” প্রকল্প, “মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ (১ম সংশোধিত)” প্রকল্প এবং “এস্টাবলিশমেন্ট অব গ্লোবাল মেরিটাইম ডিস্ট্রেস অ্যান্ড সেফটি সিস্টেম এবং ইন্টিগ্রেটেড মেরিটাইম নেভিগেশন সিস্টেম ( ইজিএইএমএনএস)” প্রকল্প।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প “ডাল ও তৈলবীজ উৎপাদনের মাধ্যমে টেকসই পুষ্টি নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্প (২য় পর্যায়)” প্রকল্প ও “সিলেট বিভাগে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি” প্রকল্প।
এছাড়া, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের “দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আয়রন ব্রিজ পুনর্নির্মাণ/পুনর্বাসন (২য় সংশোধিত)” প্রকল্প; বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের “ডুপিটিলা-১ ও কৈলাশটিলা-৯নং কূপ (অনুসন্ধান কূপ) খনন” প্রকল্প, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের “নেপালের লুম্বিনি সংরক্ষিত অঞ্চলে বাংলাদেশ বৌদ্ধ মন্দির নির্মাণ” প্রকল্প এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের “আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ (৪র্থ সংশোধিত” প্রকল্প।
সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ইতিমধ্যে অনুমোদিত ৯টি প্রকল্প সম্পর্কে একনেক সদস্যদের অবহিত করেন। সেগুলো হলো—
১. রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তর কমপ্লেক্স, বিভাগীয় কমিশনার ও ডিআইজি’র বাংলো নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প।
২. সরকারি কর্মচারী হাসপাতালকে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীতকরণ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।
৩. উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী সুবিধাবঞ্চিত ৮৬টি এলাকা ও নদী বিধৌত চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।
৪. সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।
৫. মুজিবনগর সেচ উন্নয়ন প্রকল্প (২য় সংশোধিত)।
৬. আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন (১ম সংশোধন) প্রকল্প।
৭. পদ্মা বহুমুখী সেতুর ভাটিতে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং ও টংগিবাড়ী উপজেলাধীন বিভিন্ন স্থানে পদ্মা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।
৮. বাংলাদেশের সোনালি ঐতিহ্য মসলিনের সুতা তৈরির প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধার (২য় পর্যায়)।
৯. আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রজেক্ট— ২য় পর্যায় (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।
সভায় উপস্থিত ছিলেন— অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ; আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল; পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন; স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.); শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া এবং এলজিআরডি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া; নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এবং ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ.ফ.ম খালিদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এছাড়াও সাংবাদিকদের ব্রিফকালে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও কমিশনের সচিব ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।