
বরগুনার আমতলী থানায় নৌবাহিনী ও উপজেলা মৎস্য বিভাগের জব্দ করা ১৫০০ কেজি জাটকা ইলিশ মাছ প্রকাশ্যে লুট হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে থানা প্রাঙ্গণে এমন ঘটনা ঘটায় পুরো এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তালতলী, কলাপাড়া ও আমতলীর অসাধু জেলেরা অবাধে জাটকা শিকার করছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে চারটি পরিবহন গাড়ীতে এসব জাটকা ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাচারের সময় নৌবাহিনী ও মৎস্য বিভাগ যৌথ অভিযানে মাছগুলো জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে। পরে সেগুলো ৫০টি এতিমখানায় বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
কিন্তু মাছ বিতরণ চলাকালে বিকেল তিনটার দিকে হঠাৎ দুই শতাধিক মানুষ থানা কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে মাছ লুট করে নিয়ে যায়। প্রকাশ্যে দিবালোকে থানার নিরাপদ এলাকা থেকে এমনভাবে মাছ লুট হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, উপজেলা প্রশাসনের অব্যবস্থাপনা ও গাফিলতির কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। এক প্রত্যক্ষদর্শী গাজী নাসির উদ্দিন বলেন, “পুলিশের সামনে জব্দকৃত মাছ লুট হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনে এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।”
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, “রাজনৈতিক দলের কিছু নেতাকর্মী মাছ লুটে অংশ নিয়েছে, অথচ পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে।”
আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তন্ময় কুমার জানান, “আমি বর্তমানে প্রশিক্ষণে আছি। মাছ বিতরণের সময় শতাধিক অচেনা মানুষ এসে মাছ নিয়ে যায়।”
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, “অর্ধেক মাছ বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে, বাকিটা মানুষ নিয়ে গেছে। আমি ঠেকানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়েছি।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। থানা একটি সুরক্ষিত স্থান, সেখানে লুট হওয়ার কথা নয়। যদি সত্যি ঘটে থাকে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় স্থানীয়রা দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন এবং প্রশাসনের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।