এবার লন্ডনে পাকিস্তান হাই কমিশনে ভারতের সন্ত্রাসবাদীদের হামলা

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা যখন চরমে, তখন এর রেশ ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাজ্যেও। সম্প্রতি লন্ডনে অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশনে হামলার ঘটনা এই উত্তেজনাকে আরও ঘনীভূত করেছে।

লন্ডনের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশনে হামলা চালিয়ে এবার ভারতের বিজেপি আরএসএস এর সন্ত্রাসী তৎপরতার আন্তর্জাতিক রূপ সামনে এসেছে।

ঘটনার দিন হাইকমিশনের জানালার কাচ ভেঙে ফেলা হয় এবং সাদা দেয়াল ও নামফলকে গেরুয়া রঙ ছিটানো হয়। এই হামলার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে—ভারতীয় উগ্রপন্থীরা কেবল উপমহাদেশ নয়, প্রবাসেও ঘৃণা ও সহিংসতা ছড়িয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

হামলার ঠিক আগের দিন শত শত ভারতীয় বিক্ষোভকারী পাকিস্তান হাইকমিশনের সামনে জমায়েত হয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। সেই সময় দুজন বিক্ষোভকারীকে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি সংগঠিত সন্ত্রাসী পরিকল্পনার অংশ, যার উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানের সার্বভৌম মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা।

আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন

লন্ডনের এই হামলা আন্তর্জাতিক কনভেনশন, বিশেষ করে ১৯৬১ সালের ‘Vienna Convention on Diplomatic Relations’ এর সরাসরি লঙ্ঘন।
হোস্ট দেশ যুক্তরাজ্যের দায়িত্ব ছিল পাকিস্তান হাইকমিশনের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
কনভেনশনের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দূতাবাসের সম্মান রক্ষা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের শিথিল নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভারতীয় সন্ত্রাসীদের এমন হামলার সুযোগ করে দিয়েছে।

পাকিস্তানের কড়া প্রতিক্রিয়া

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “বিশ্বের কোনো সভ্য সমাজে এমন বর্বরতার স্থান নেই।”
তিনি অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান এবং তদন্ত প্রক্রিয়ায় পাকিস্তানের সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রস্তাব দেন।

পাশাপাশি পাকিস্তানের সিনেট সর্বসম্মতভাবে পহেলগাঁও হামলার ঘটনায় ভারতের দোষারোপের প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং ভারতীয় প্রচারণাকে ‘ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঝড়

বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের উগ্রপন্থী নীতির ফলে শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, ইউরোপের শান্তি ও নিরাপত্তাও এখন হুমকির মুখে।
বিশ্ব সম্প্রদায়কে এখনই ভারতীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে, এমন হামলা আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

Share This Article