
নাটোরের লালপুরে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এক বাবা ও মেয়ে। একই সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন পিতা আব্দুল হান্নান ও তার মেয়ে হালিমা খাতুন। এ ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং প্রশংসায় ভাসছেন তারা দুজনই।
‘শিক্ষার কোনো বয়স নেই’ এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌরসভার নারায়ণপুর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছোট ছেলে আব্দুল হান্নান ও তার মেয়ে হালিমা খাতুন। তারা পৃথক দুটি কলেজ থেকে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
আব্দুল হান্নান জানান, ১৯৯৮ সালে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর সংসার জীবনে নেমে পড়েন তিনি। দীর্ঘ ২৫ বছর পর, ২০২৩ সালে রুইগাড়ি হাই স্কুল থেকে পুনরায় এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেন। তখন তিনি কাউকে না জানিয়ে স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন এবং নিজের মেয়ের সঙ্গে একসঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে সফল হন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান এই শিক্ষানুরাগী পিতা।
এ বছর তিনি বাঘা কাকড়ামারি কলেজ থেকে এবং তার মেয়ে গোপালপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন ও একসঙ্গে পাস করেন।
মেয়ে হালিমা খাতুন বলেন,’পরিবারে দারিদ্রতা থাকলেও বাবার পড়াশোনার প্রতি প্রবল ইচ্ছা শক্তি আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা চাই, একসঙ্গে মাস্টার্স পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করতে।‘
আব্দুল হান্নান বর্তমানে স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার পরিচালনা করছেন। তার এই অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও শিক্ষার প্রতি ভালোবাসা স্থানীয় সমাজে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে।