কারাবন্দি থাকার দীর্ঘ ৯ বছর পর মুক্তি পেয়েছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদ্য সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মো. আসলাম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন।
এর আগে সকাল থেকে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে কারা ফটকে বিএনপির শতশত নেতাকর্মী আসলাম চৌধুরীকে বরণ করে নিতে জড়ো হন। পরে তিনি বেরিয়ে আসলে তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন নেন।
গত সোমবার (১৯ আগস্ট) শুনানি শেষে আসলাম চৌধুরীর জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র পক্ষের দায়েরকৃত আপিল খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
২০১৬ সালের ১৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে আসলাম চৌধুরী ও তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. আসাদুজ্জামান মিয়াকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি-উত্তর)। পরে তাদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরদিন ১৬ মে ৫৪ ধারায় (মোসাদ কানেকশনে সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্রের সন্দেহ) গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের দু’জনকে ১০ দিন করে রিমান্ডে আনার আবেদন জানানো হয়। আদালত সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর একই বছরের ২৬ মে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দায়ের করা হয় রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাটি। দণ্ডবিধির ১২০ (বি), ১২১ (৩) ও ১২৪ (এ) ধারায় ডিবির ইন্সপেক্টর গোলাম রাব্বানী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্রের সন্দেহে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বলা হয়, আসলাম চৌধুরী ওই বছরের ৫ মার্চ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত ভারতে অবস্থানকালে আইনানুগভাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাতের জন্য বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বহির্ভূূত রাষ্ট্র ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যার কিছু ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আসামিরা সরকারকে অবৈধভাবে উৎখাতের জন্য দেশে সন্ত্রাস, নাশকতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করেন, যা দেশের অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।
পরে ওই মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
২০০১ সালে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এলে জিয়া পরিষদের মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতিতে আসেন আসলাম চৌধুরী। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে সীতাকুণ্ড আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল তিনি উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হন। এর আগে, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। পরে তিনি দলটির যুগ্ম-মহাসচিব হন।