সৌদি আরবের রাজধানীতে অবস্থিত কিং আব্দুল আজিজ লাইব্রেরিতে বিভিন্ন ইসলামী যুগের পবিত্র কোরআনের ৪০০টি দুর্লভ কপি সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব কপি হিজরী দশম থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দীর পাণ্ডুলিপি।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সৌদি গেজেটের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সংগ্রহটি আরব ও ইসলামী শিল্পের ক্যালিগ্রাফি, খোদাই, নকশা, আলোকসজ্জা এবং সৃজনশীলতার উজ্জ্বলতাকে স্মরণ করিয়ে দিবে।
কোরআনের এই বিরল কপিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আয়াতুল কুরসি এবং এর দৈর্ঘ্য বরাবর অন্যান্য অলঙ্করণ খোদাই করা একটি রোল। এটি শুরু এবং শেষে উদ্ভিদের অলঙ্করণ দিয়ে রং এবং সোনালী রং ব্যবহার করা হয়েছিল। লেখাটি দুটি সোনালী ফ্রেমের মধ্যে লেখা হয়েছিল। এটি ফখর আল-দিন আল-সোহরাওয়ার্দী ১২৮৪ হিজরিতে অনুলিপি করেছিলেন।
বিরল কোরআনের আরেকটি কপিতে ৩০টি পাতা রয়েছে, যার দুটি পৃষ্ঠা যেন পবিত্র গ্রন্থের সম্পূর্ণ অংশ। প্রথম পৃষ্ঠাটি চমৎকার উদ্ভিদ নকশা দিয়ে সজ্জিত ছিল, যেখানে উজ্জ্বল রঙ এবং সোনালী জল ব্যবহার করা হয়েছিল। বাকি পৃষ্ঠাগুলোও কিভিন্ন কালারে সাজানো ছিল এবং সম্পূর্ণটি সোনালী রংয়ে মোড়ানো ছিল। পাশের ফ্রেমগুলোতে রঙিন এবং সোনালী রঙের উদ্ভিদ নকশা রয়েছে। এটি ১২৪০ হিজরি/ ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে নাসখ লিপিতে অনুলিপি করা হয়েছিল।
লাল এবং নীল টেবিলের ভিতরে কালো কালিতে লেখা সূরা আল-ফাতিহা থেকে সূরা আন-নাস পর্যন্ত পুরো কোরআনের একটি কপিও রয়েছে এসব সংরক্ষণের মধ্যে। এটি মক্কায় ১০২৫ হিজরি (১৬১৬ খ্রিস্টাব্দ) রমজান মাসে পণ্ডিত মোল্লা আলী আল-কারী দ্বারা সম্পূর্ণ করা হয়েছিল।
আরেকটি কপি রয়েছে যেখানে সম্পূর্ণ কুরআন রয়েছে, যা কালো কালিতে লেখা হয়েছে, সোনালী প্যানেলের মধ্যে সুনির্দিষ্ট চিহ্নসহ। কিছু সূরার শুরুতে, সোনার পাতা এবং বিভিন্ন রঙের সংমিশ্রণ দিয়ে সজ্জিত ফুল এবং জ্যামিতিক নকশা রয়েছে। এটি ৯২০ হিজরি (১৫১৪ খ্রিস্টাব্দ) সালে লেখা হয়েছিল এবং চামড়া দিয়ে আবদ্ধ ছিল।
উল্লেখযোগ্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে কোরআনের একটি সম্পূর্ণ কপি, যা কালো কালিতে লেখা এবং সোনালী, সবুজ, লাল এবং নীল রঙে রঙ করা টেবিলের ভেতরে সুনির্দিষ্ট ডায়াক্রিটিক সহ। এটি সোনালী জলে রঞ্জিত উদ্ভিদের নকশা দিয়ে সজ্জিত ছিল। এটি রাজকীয় পাণ্ডুলিপিগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচিত হয়, যা দীর্ঘ সময় ধরে অত্যন্ত যত্ন সহকারে লেখা হয়েছে। এটি সোনালী রঙের নকশা এবং ইসলামী শিল্পের সৌন্দর্যের সাথে ফুল দিয়ে সজ্জিত মোমের চামড়া দিয়েও আবদ্ধ।
গ্রন্থাগারটিতে ত্রয়োদশ হিজরিতে লেখা একটি স্বতন্ত্র পবিত্র কোরআনও রয়েছে। এটিতে আলংকারিক রংগুলো যেমন- নীল, লাল, সাদা এবং সোনালী রং দিয়ে- গোলাপ, ছোট বৃত্ত এবং ফুলের আকৃতি দেওয়া হয়েছে। কুরআনটি নাসখ লিপিতে লেখা হয়েছিল, যা তার প্রসারিত এবং স্পষ্ট অক্ষরের জন্য পরিচিত। এটি কালো রঙে লেখা হয়েছিল, বিরাম চিহ্নও কালো রঙে ছিল।