
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়নের আসাদপুর গ্রামে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে চারটি মাজারে হামলা চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা দিয়ে এ হামলা চালানো হয়। এ সময় একটি মাজার সংলগ্ন তিনটি ঘরেও আগুন দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা।
পুলিশ ও সেনাবাহিনী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় মো. মহসীন (৩৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি উপজেলার ফকিরবাড়ির আলেক শাহর ছেলে।
জানা গেছে, বুধবার বেলা ১১টার দিকে ‘বেমজা মহসিন’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তি করে পোস্ট দেওয়া হয়। এতে স্থানীয়দের ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ওইদিনই মহসীনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে বাংলাদেশ ইসলামী যুব সেনা হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
পরেরদিন সকালে উত্তেজিত জনতা জড়ো হয়ে মাজার ও বাড়িতে হামলার ঘোষণা দেয়। প্রথমে মহসীনের বসতবাড়িতে হামলা চালানো হয়। এরপর সেখানে থাকা কফিল উদ্দিন শাহর মাজারে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে মাজার চত্বরে থাকা তিনটি ঘরে আগুন দেওয়া হয়, যেখানে একটি মোটরসাইকেলসহ আসবাবপত্র পুড়ে যায়।
এছাড়া হামলাকারীরা মিছিল নিয়ে আবদু শাহর মাজার, কালাই (কানু) শাহর মাজার এবং হাওয়ালি শাহর মাজারেও ভাঙচুর চালায়। হাওয়ালি শাহর মাজার চত্বরে অগ্নিসংযোগ করা হলে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান ও ইউএনও ক্ষেমালিকা চাকমা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মহসীনের বিরুদ্ধে আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। এ ঘটনার পেছনে কারো ইন্ধন রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।