সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লিয়াজোঁ অফিসার পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ অর্জনকারী এক ব্যক্তির ৫ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে সিআইডি।
সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত এই বাজেয়াপ্তের আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত আসামির বিদেশ গমনেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ অর্জন করা ব্যক্তির নাম মোতাল্লেছ হোসেন। এ প্রেক্ষিতে সিআইডি পল্লবী থানায় প্রতারক মোতাল্লেছ হোসেনের নামে দায়ের করা মানিলন্ডারিং মামলার অগ্রগতি হিসেবে সিআইডির প্রচেষ্টায় এই অর্থ বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হয়।
মামলাটি তদন্তকালে এ ঘটনায় আসামির বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের স্থিতি প্রায় ৫ কোটি টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ দিয়েছেন, যা আগে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের আবেদনের প্রেক্ষিতে ফ্রিজ করা ছিল। আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক পিএলসিতে ১টি, সিটি ব্যাংক পিএলসিতে ২টি, প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসিতে ২টি, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসিতে ২টি ও সোনালী ব্যাংক পিএলসিতে ১টি মিলে মোট ৮টি অ্যাকাউন্টে এই অর্থ সংরক্ষিত ছিল।
সিআইডির তদন্তে উঠে আসে, মোতাল্লেছ হোসেন নিজেকে খালেদা জিয়ার লিয়াজোঁ অফিসার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। তদন্তকালে আরও প্রকাশ পায়, মোতাল্লেছ হোসেনের নামে থাকা এম এল ট্রেডিং নামক প্রতিষ্ঠানটি বাস্তবে অস্তিত্বহীন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও, বাস্তবে প্রতিষ্ঠানটির কোনো কার্যক্রম বা ঠিকাদারি ও আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পাওয়া যায়নি।
মোতাল্লেছ হোসেন নিজেকে কখনও গার্মেন্টস মালিক, কখনও চা-বাগানের উদ্যোক্তা বা ঠিকাদারি ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। তার নামে খোলা ব্যাংক হিসাবে প্রায় ২০ কোটি টাকার লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে তিনি বিএনপির দলীয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা বলে তার নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে প্রায় ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেন এবং তা আত্মসাৎ করেন।