খোলা জায়গা ও বাতাসের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লেগেছে: ফায়ার ডিজি

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো ভিলেজে লাগা ভয়াবহ আগুন প্রায় ৭ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। খোলা জায়গা ও বাতাসের প্রবল গতির কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দীর্ঘ সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে বিমানবন্দরের আমদানি কার্গোর ৮ নম্বর গেটের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

ফায়ার ডিজি বলেন, ‘জায়গাটি পুরোপুরি খোলা ছিল এবং ভেতরে খোপ খোপ করে ভাগ করা। বেশিরভাগ পণ্যই দাহ্য পদার্থ ছিল। বাতাসের অক্সিজেনের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আমরা একদিকে আগুন নেভালেও অন্যদিকে বাতাসের কারণে আবার জ্বলে উঠছিল।’

তিনি জানান, বেলা সোয়া ২টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। বাহিনীর ৩৭টি ইউনিট সেখানে কাজ করে। এর আগেই সিভিল এভিয়েশন ফায়ার ইউনিট কাজ শুরু করে দেয়।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহেদ কামাল বলেন, ‘আগুন পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন নির্বাপণের কাজ চলছে। আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সব ফ্লাইট চালু আছে। আগুন নেভানোর সময় আমাদের দুইজন ফায়ার ফাইটার আহত হয়েছেন, এছাড়া আনসারের কয়েকজন সদস্যও প্রাথমিকভাবে আহত হয়েছেন বলে খবর পেয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগুন লাগার স্থানটি—আমদানি কার্গো সংরক্ষণের জায়গা—পর্যবেক্ষণ করেছি। আনুমানিক ৪০০ গজ বাই ৪০০ গজের খোলা ও বদ্ধ উভয় এলাকা জুড়ে পণ্য ছিল। প্রতিটি খোপ বা কম্পার্টমেন্ট পরিষ্কার করে করে আমাদের আগুন নেভাতে হয়েছে, যা সময়সাপেক্ষ ছিল।’

বাতাসই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ

ফায়ার ডিজি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বাতাস। খোলা জায়গায় প্রচুর বাতাস থাকায় আগুনে অক্সিজেন সরবরাহ বেড়ে যায়, ফলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।’ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও আনসারের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করেছেন বলেও জানান তিনি।

অনুমতি ও নিরাপত্তা ইস্যু

সম্প্রতি ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফায়ার ডিজি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইন্সপেকশন করে সতর্ক করি, লাইসেন্স না থাকলে তা বাতিলের সুপারিশ দিই। কিন্তু আইন প্রয়োগের দায়িত্ব অন্যান্য কর্তৃপক্ষের। আমরা মানুষকে সচেতন করার কাজ করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সমন্বিত উদ্যোগ না হলে এমন দুর্ঘটনা রোধ কঠিন। ফায়ার সার্ভিস একা পারে না—সব সংস্থার যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন।’

আগুনের উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে ফায়ার ডিজি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা কিছু নীল রঙের ফ্রেম দেখেছি, তবে এটা কেমিক্যাল ছিল কি-না, এখনই বলা সম্ভব নয়। নির্বাপণ শেষে আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারবো। আমাদের এখন অগ্রাধিকার আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলা। পরে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে।’

Share This Article