রাজবাড়ী, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া জেলার সীমান্তবর্তী গড়াই নদীর রাজবাড়ী পাংশার মোহন ঘাট এলাকায় কুমিরের দেখা মেলায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।
প্রায় দুই মাস ধরে এই স্থানে কখনো একটি, আবার কখনো একসঙ্গে একাধিক কুমিরের দেখা মিলছে। এ অবস্থায় ভয়ে কেউ নদীতে নামতে সাহস পাচ্ছে না। আগের মতো নদীতে গোসল করা, মাছ ধরা, গরু-মহিষ গোসল না করাতে পেরে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা।
এই অঞ্চলে টিউবওয়েলের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় স্থানীয়রা দৈনন্দিন কাজে নদীর পানি ব্যবহার করেন। কিন্তু কুমিরের দেখা পাওয়ার পর ভয়ে নদীর পানি ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয়রা।
সরজমিনে দেখা যায়, নদীর পাড়ে কুমির দেখতে ভির করছেন স্থানীয় শিশু-কিশোর, যুবকসহ বৃদ্ধরা। এসময় কেউ আবার নদীর কিনারে দাঁড়িয়ে গোসল করছেন।
শিশু মারিয়া বলে, এখানে আমাদের বাড়ি। কুমিরের কারণে নদীতে গোসল ও সাঁতার শিখতে পারছি না। এখন পর্যন্ত আমি পাঁচবার কুমির দেখেছি। ওর গায়ে কাটা কাটা ও মুখ অনেক বড়।
কিশোর তন্ময় বলে, প্রায় এক মাস ধরে আমরা নদীতে কুমির দেখতে পাচ্ছি। ভয়ে এখন আমরা আগের মতো নদীতে নেমে গোসল করতে পারছি না এবং কুমির ধরতে প্রশাসনও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
স্থানীয় সাগর আহম্মেদ বলেন, আমরা যারা নদীর পাশে বসবাস করি, তারা নিয়মিত নদীতে গোসল করি। কিন্তু কুমিরের ভয়ে এখন নদীতে নামতে না পেরে মগ দিয়ে গোসল করছি। তারপরও ভয়ে থাকি।
স্থানীয় মোছলেম মোহাম্মদ আবু দাউদ বলেন, এই মোহনঘাট রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়াসহ কয়েক জেলার বর্ডার এলাকা। এলাকার মানুষ এবং গরু-মহিষ গোসল করানো নানা কাজে আমরা নদীর পানি ব্যবহার করি। হঠাৎ শুনতে পাই এখানে কুমির দেখা যাচ্ছে। পরে একদিন নদীর পাড়ে এসে দেখি দুটা কুমির পানির ওপরে উঠে আছে। আমরা সবাই ভয়ে আছি।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস.এম. আবু দারদা বলেন, আমি নিজে কয়েকবার গিয়ে কুমিরের দেখা পাই নাই। তবে স্থানীয় অনেকের মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও দেখে মনে হয়েছে এটা কুমির। লিখিতভাবে উপজেলা বন কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব খুলনা বা ঢাকা থেকে টিম এনে কুমির ধরার ব্যবস্থা করা।