গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, গণভোট ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াতের মতভেদ নিয়ে সংঘাতের শঙ্কা নেই। ফেব্রুয়ারিতে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একই দিনে হবে। যারা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলে, তাদের বলবো জাতীয় নির্বাচনে ৭০ শতাংশ ভোট পড়লেই তা অংশগ্রহণমূলক হবে। দলগুলোর প্রতি আহ্বান আগামীতে কোনও মনোনয়ন ও পদ বাণিজ্য করবেন না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কার ও গণতন্ত্রায়ন জরুরি। মেধাবীদের সমন্বয়ে একটি কার্যকর সংসদ হওয়া উচিত।
আজ শনিবার এফডিসিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে করণীয় নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
সুব্রত চৌধুরী বলেন, জুলাই যোদ্ধারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করা তাদের দ্বিচারিতা। এনসিপির উচিত দর কষাকষি না করে জুলাই সনদে সই করা। অন্তর্বর্তী সরকার কিছু তরুণকে নানান সুযোগ-সুবিধা দিয়ে বিপথগামী করেছে। ডিসি ও ইউএনও অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তারা খবরদারি করছে। সরকারের ভিতরে সরকার তৈরি হয়েছে। যার ফলে সংস্কার ও আইনের শাসন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার অব্যাহতভাবে চলবে। সে জুলাই অভ্যুত্থানকে সহিংস আন্দোলন বলে যে সাক্ষাতকার দিয়েছে তা হাস্যকর ও ছেলেমানুষি। সে যে গণহত্যা করে পালিয়েছে, ভারতকে বলব তাকে আশ্রয় দিয়ে এসব উসকানিমূলক কথা বলার সুযোগ দিবেন না, তাকে থামান। আমাদের সাথে বৈরি সম্পর্ক সৃষ্টি করবেন না।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে, পঙ্গু হয়ে, অন্ধ হয়ে ফ্যাসিবাদকে উৎখাত করেছে। জুলাই শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে বর্তমান বাংলাদেশ। যে ঐক্যের মধ্য দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে, এখন জুলাই সনদ বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে সেই ঐক্যে ফাটল দেখা যাচ্ছে। জুলাই সনদ জাতির এক ঐতিহাসিক দলিল ও একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। এই সনদ বাস্তবায়নের ওপর আগামীর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
জুলাইয়ের চেতনাকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাইয়ের চেতনা ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র ব্যর্থ হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হবে। এই ব্যর্থতার দায়ভার বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ কেউই এড়াতে পারবে না। জুলাই সনদের মাধ্যমে দেশের মানুষ চেয়েছিল ঐক্যের বাংলাদেশ। কিন্তু জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র মতপার্থক্যের কারণে তৈরি হচ্ছে অনৈক্যের বাংলাদেশ। এজন্য যদি ফ্যাসিবাদী অপশক্তি আবার ফিরে আসে তাহলে কোনও দলই তাদের প্রতিশোধের আগুন থেকে রেহাই পাবে না। তাই এই মুহূর্তে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য অপরিহার্য।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনি কাঠামো অপেক্ষা রাজনৈতিক সদিচ্ছা বেশি জরুরি শীর্ষক ছায়া সংসদে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজকে পরাজিত করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সিনিয়ার সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক আসিফ সুমিত ও সাংবাদিক লামিয়া তিথি। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।