ব্যবসায়ী, আমলা ও রাজনীতিবিদদের সমন্বয়ে অতীতে দেশে একটি গোষ্ঠী তন্ত্র-অলিগার্ক-তৈরি হয়েছিল, যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ‘চোরতন্ত্র’। এই চোরতন্ত্র ভাঙতে সার্বিক সংস্কারের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বরিশালের একটি হোটেলে আয়োজিত নাগরিক সংলাপে এ সব কথা বলেন তিনি। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ও তা পূরণের পদ্ধতি নির্ধারণে এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এমন ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে কেউ পেছনে না পড়ে থাকে। কারণ কাউকে পেছনে ফেলে রাখলে সে-ও সমাজকে পেছনে টেনে ধরবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে কোনও অনিশ্চয়তা দেখছি না। নির্বাচন ধীরে ধীরে অনিবার্য ঘটনায় পরিণত হচ্ছে। আমরা নির্বাচনকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখতে চাই। এর লক্ষ্যে সংস্কারের ধারা অব্যাহত থাকুক।
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি প্রতিশ্রুতি রক্ষা ও জনগণের কথা শোনার ওপর জোর দেন। আঞ্চলিক সমস্যাগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে স্থান পাওয়ার লক্ষ্যে এ সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
‘আগামী নির্বাচনে কি প্রত্যাশায় ভোট দেবেন’ এবং ‘নব নির্বাচিত সরকারের কাছে কি প্রত্যাশা’ এই দুই শিরোনামে অনুষ্ঠিত মুক্ত আলোচনায় রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, শিক্ষক, উন্নয়নকর্মী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক জ্যোতির্ময় বিশ্বাস বলেন, এ অঞ্চলে কর্মসংস্থান বাড়াতে গ্যাস সরবরাহ জরুরি। ভোলার সঙ্গে পাইপলাইন স্থাপন করা গেলে এখানকার অর্থনীতি গতিশীল হবে।
বাসদ নেত্রী মনীষা চক্রবর্তী বলেন, কৃষিভিত্তিক শিল্প ও পর্যটনকে কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব।
সভায় বক্তারা জনসংখ্যার বদলে দারিদ্র্য ও অনগ্রসরতার ভিত্তিতে বাজেট বরাদ্দের দাবি জানান। পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা, কৃষি ও শিল্পের জন্য বিশেষ বরাদ্দ, নির্বাচনের জামানত কমানো, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও অনগ্রসর ‘মান্তা’ সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণের দাবি তোলা হয়।
মতবিনিময় সভায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বাসদ, এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
