নবম পে-স্কেল দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে সরকারি চাকরিজীবীরা আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পে কমিশনের সুপারিশ চূড়ান্ত করার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। তাদের হুঁশিয়ারি— নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রস্তাব না দিলে ডিসেম্বর থেকে তারা আন্দোলনে নামবেন।
অন্যদিকে নবম পে কমিশনের সদস্যদের মতে, কমিশনের হাতে কাজ শেষ করার আনুষ্ঠানিক সময়সীমা আগামী বছরের চৌদ্দ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তারা জানিয়েছেন, এই সময়ের মধ্যেই সরকারকে পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, পে-স্কেল বাস্তবায়নে আরও কিছু সময় লাগবে। কমিশনের প্রতিবেদন যাচাই ও বিভিন্ন প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরই বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
তার ভাষায়, “কমিশনের রিপোর্ট পর্যালোচনার পর সচিব কমিটি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ একাধিক স্তরে অনুমোদনের প্রক্রিয়া রয়েছে। কাজটি আমাদের মেয়াদের মধ্যেই শেষ করা নাও যেতে পারে, তবে কাঠামোটি আমরা ঠিক করে রেখে যাব।”
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠনগুলোর অভিযোগ, কমিশনের কাজ অপ্রয়োজনে দীর্ঘায়িত হচ্ছে, অথচ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় নতুন বেতন কাঠামো এখন অত্যন্ত জরুরি। তারা দ্রুত কমিশনের কাজ শেষ করে সরকারকে চূড়ান্ত প্রস্তাব জমা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
চাকরিজীবীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নভেম্বরের মধ্যে কমিশনের সুপারিশ না এলে ডিসেম্বর থেকেই তারা মাঠে নামবেন। একই সঙ্গে দাবি আদায়ে চাপ অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বদিউল কবির বলেন, “যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকারই পে কমিশন গঠন করেছে, তাই নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নের দায়িত্বও তাদেরই নিতে হবে। নভেম্বরের মধ্যে সুপারিশ জমা না পড়লে আমরা কমিশনের ওপর চাপ বাড়াব এবং বৃহত্তর কর্মসূচিতে যাব।”
পে কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঠামো পুনর্নির্ধারণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মতামত নেওয়ার পর এখন চূড়ান্ত সংকলনের কাজ চলছে।
কমিশনের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “আমরা চেষ্টা করছি নভেম্বরের মধ্যেই সব প্রস্তুতি শেষ করতে। ডিসেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ইচ্ছে আছে। তবে কমিশনের আনুষ্ঠানিক মেয়াদ চৌদ্দ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।”
উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে নবম পে কমিশন গঠন করে সরকার। অর্থ বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব ড. খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামকে কমিশনের চেয়ারম্যান করা হয়। এক বছরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
চাকরিজীবীরা আশা করছেন, নতুন বেতন কাঠামোয় মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন বৃদ্ধি, গ্রেডসংখ্যা হ্রাস এবং ভাতা সমন্বয়ের বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে।