চার ইউনিয়নে ১৩২১ ভোটে এগিয়ে থেকেও রাজাপালংবাসীর কাছে হেরে গেলেন মনসুর! 

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

গত ২৯ মে উখিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার মধ্যে দিয়ে শান্তি পূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচন জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী উপজেলা চেয়ারম্যান, সাংবাদিক রাশেল চৌধুরী ভাইস চেয়ারম্যান ও শাহিন আক্তার  মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ও উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুর চৌধুরী। বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর আলম চৌধুরী নির্বাচনের একদিন আগে কালো টাকার ছড়াছড়ি ও অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তুলে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান।

উখিয়ায় প্রথমবারের মতো ইভিএম এর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এই ভোটে ফিঙ্গার দিয়েছে একজন ভোট দিয়েছেন অন্যজন। ভোটাররা নিজ ভোট কেন্দ্র উপস্থিত হয়ে ফিঙ্গার দেওয়ার পর, জোর করে তার ভোট দিয়েছে প্রভাবশালী প্রার্থীর কর্মী বা সমর্থকরা। বেশীর ভাগ কেন্দ্রে ছিলো এই চিত্র। এতে নিরহ বা সাধারণ ভোটাররা ছিলেন এক প্রকার অসহায়। যার ফলে সচেতন ভোটারদের মাঝে ইভিএম পদ্ধতি  আস্থা অর্জন করতে পারেনি।

৫ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উখিয়া উপজেলা। জালিয়া পালং, রত্না পালং, হলদিয়া পালং রাজাপালং ও পালংখালী ইউনিয়নের মধ্যে ২ টি ইউনিয়নে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন নব নির্বাচিত উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। ৩ টি ইউনিয়নে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন পরাজিত প্রার্থী আবুল মনসুর চৌধুরী। ৫ ইউনিয়নের মধ্যে ৪ ইউনিয়নে ১৩২১ ভোটে এগিয়ে থাকার পরও রাজাপালং ইউনিয়নের ভোটারদের ঐক্যের কাছে হেরে গেছেন মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আবুল মনসুর চৌধুরী।

পক্ষান্তরে আনারস প্রতীকের প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ৫ ইউনিয়নের মধ্যে ৪ ইউনিয়নে ১৩২১ ভোট পিছিয়ে থাকার পরও নিজ ইউনিয়ন রাজাপালং-এ ঐক্য ও একতার এবং আঞ্চলিকতার ইস্যু তুলে কাস্টিং ভোটের প্রায় ৭৯% ভোট নিজের পক্ষে রেখে দিয়ে জয়লাভ করতে সক্ষম হন।

যার ফলে চার ইউনিয়নে ১৩২১ ভোটে পিছিয়ে থেকেও এক ইউনিয়নের ভোটের ১১০০৭ ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে জয়ের মুকুট নিজের দখলে রেখে দিতে সক্ষম হয়েছেন জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। এই নিয়ে তিনি টানা ৪ বার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন। তৎ মধ্যে টানা ৩ বার ইউপি চেয়ারম্যান ও ১ বার উপজেলা চেয়ারম্যান।

মোটরসাইকেল প্রতীকের আবুল মনসুর চৌধুরী রত্নাপালং ইউনিয়নে -৪৯৪৬, জালিয়াপালং ইউনিয়নে -৬৪৬৬, হলদিয়াপালং ইউনিয়নে- ৮৮১২ ও পালংখালী ইউনিয়নে -৩৫৫০ ভোট পান। এই ৪ ইউনিয়নে আবুল মনসুর চৌধুরী প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ২৩৭৭৪ ভোট। পক্ষান্তরে এই ৪ ইউনিয়নে আনসার প্রতীকের জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ২২৪৫৩ ভোট। তৎ মধ্যে রত্নাপালং ইউনিয়নে আনারস ৪২০৮ ভোট, জালিয়াপালং ইউনিয়নে ৬৩৫১ ভোট, হলদিয়াপালং ইউনিয়নে ৬৭৭৫ ভোট ও পালংখালী ইউনিয়নে ৫১২১ভোট পেয়েছেন। এই ৪ ইউনিয়ন ২ প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান ছিলো ১৩২১ ভোট।

রাজাপালং ইউনিয়নে আবুল মনসুর চৌধুরী (মোটরসাইকেল) ৩৭৪৭ ভোট, জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী (আনারস) ১৬০৭৩ ভোট পান। ফলে ৪ ইউনিয়নে ১৩২১ ভোটে আবুল মনসুর চৌধুরী  এগিয়ে থাকার পরও ১১০০৭ ভোটের ব্যবধানে হেরে যেতে বাধ্য হন জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী নিকট।

উল্লেখ্য,জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী  আনারস প্রতীক নিয়ে সর্বমোট ৩৮৫২৮ ভোট  পেয়েছেন, আবুল মনসুর চৌধুরী মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ২৭৫২১ ভোট পেয়েছেন। উখিয়া উপজেলা মোট ৪৪.৭৩% ভোট কাস্টিং হয়েছে।

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় মোট  ১লাখ ৫১ হাজার ৫৬৪ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৮ হাজার ৫৫০জন।

 

Share This Article