প্রমোদতরী হিসেবে দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথে চালু হয়েছে শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার ‘পিএস মাহসুদ’। আজ শনিবার নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্যাডেল স্টিমার যাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুতফে সিদ্দিকীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পিএস মাহসুদ বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও নৌ-পর্যটনের মধ্যে এক অনন্য সেতুবন্ধন তৈরি করবে। আগামী ২১ নভেম্বর থেকে ঢাকা-বরিশাল রুটে নিয়মিত পর্যটন সেবা শুরু করবে জাহাজটি।
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিআইডব্লিউটিসি’র শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার ‘পিএস মাহসুদ’কে সংস্কার ও পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। পিএস মাহসুদ শুধু একটি জাহাজ নয়, এটি বাংলাদেশের নদীমাতৃক সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক। আমরা চাই নতুন প্রজন্ম দেখুক, একসময় নদীই ছিল যোগাযোগ ও সংস্কৃতির প্রাণ।
তিনি জানান, নদী ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং নৌ-পর্যটনের সম্ভাবনা বাড়াতে পিএস অস্ট্রিচ, পিএস লেপচা ও পিএস টার্নসহ আরও কয়েকটি পুরনো স্টিমার মেরামতের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
নৌ পরিবহন সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী বলেন, এই প্যাডেল স্টিমারটি পুনরায় চালু হওয়ায় দেশি-বিদেশি বহু পর্যটককে আকৃষ্ট করবে। এই বিলাসবহুল জাহাজটিতে বিদেশি পর্যটকদের জন্য ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার, বাংলা সংগীতের লাইভ পরিবেশনাসহ নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) কর্মকর্তারা জানান, স্টিমারটির সংস্কার ও আধুনিকীকরণে মূল কাঠামো ও ঐতিহাসিক নকশা অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে। তবে ইঞ্জিন, নিরাপত্তা ও অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ আধুনিক করা হয়েছে।
স্টিমারটি প্রতি শুক্রবার ঢাকা থেকে বরিশাল এবং প্রতি শনিবার বরিশাল থেকে ঢাকা আসবে। সকাল ৮টায় রাজধানীর সদরঘাট থেকে ছেড়ে রাতে বরিশালে পৌঁছাবে। যাত্রাপথে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ ও অনন্য অভিজ্ঞতা লাভ করবেন যাত্রীরা।
নিরাপত্তার জন্য আন্তর্জাতিক মানের লাইফবোট, অগ্নি-নিরাপত্তা সরঞ্জাম ও জিপিএস ব্যবস্থা সংযোজন করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিবেশবান্ধব কম কার্বন-নিঃসরণ প্রযুক্তির ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে, যা নদী দূষণ কমাতে সহায়তা করবে।