জয়পুরহাটের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে বিএনপি থেকে জামায়াতে ইসলামীতে অর্ধশতাধিক কর্মী ও সমর্থকের যোগদান। শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে কালাই উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের বাসুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ যোগদান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে নবাগতদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন জয়পুরহাট-২ (কালাই-ক্ষেতলাল-আক্কেলপুর) আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী রাশেদুল আলম সবুজ। স্থানীয় পর্যায়ে এ আয়োজনকে কেন্দ্র করে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। এলাকাবাসী ছাড়াও দুই দলের নেতা-কর্মীদের ভিড় ছিল অনুষ্ঠানস্থলে।
বিএনপি থেকে জামায়াতে যোগ দেয়া এক কর্মী জানান, আমরা অনেক বছর ধরে বিএনপির রাজনীতি করেছি। আগে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতীকে ভোট দিয়েছি। কিন্তু এবার জয়পুরহাট-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফাকে মনোনয়ন না দেয়ায় আমরা হতাশ হয়েছি। তাই জামায়াতের নীতি ও প্রার্থীর প্রতি আস্থা রেখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যারা জামায়াতে যোগ দিয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সক্রিয় বিএনপি কর্মী ছিলেন।
জয়পুরহাট-২ আসনে (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) জামায়াত ইসলামি মনোনীত প্রার্থী রাশেদুল আলম সবুজ সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা জামায়াত ইসলামিকে ভালোবেসে আমাদের দলে যোগ দিচ্ছেন, এতে আমি সত্যিই আবেগাপ্লুত। তাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা জয়পুরহাট-২ আসনসহ সারাদেশে কুরআনের আদর্শে বাংলাদেশ গড়তে চাই।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক আদর্শে ভিন্নতা থাকলেও সবার লক্ষ্য একটি-দেশ ও জনগণের কল্যাণ।
স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে এই দলবদল জয়পুরহাট-২ আসনে রাজনৈতিক ভারসাম্যে নতুন মাত্রা আনতে পারে। বিএনপি প্রার্থী মনোনয়ন না পাওয়ায় কর্মীদের হতাশা জামায়াতের পক্ষে কাজ করছে বলেও অনেকে মনে করছেন।
স্থানীয় এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, জয়পুরহাট-২ আসনে জামায়াতে ইসলামির সাংগঠনিক উপস্থিতি আগেও ছিল। এখন বিএনপির কর্মীদের যোগদানে তাদের মাঠপর্যায়ে অবস্থান আরও শক্তিশালী হতে পারে।
কালাইয়ের এই দলবদল জয়পুরহাটের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। একদিকে হতাশ কর্মীদের নতুন আশ্রয়, অন্যদিকে জামায়াতের সংগঠন পুনরুজ্জীবনের ইঙ্গিত-সব মিলিয়ে নির্বাচনের আগে এ ঘটনাকে গুরুত্বসহকারে দেখছে রাজনৈতিক মহল।