জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় দূরদর্শী নীতি-কৌশল প্রণয়নের তাগিদ

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বৈশ্বিক পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দূরদর্শীতার সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তবসম্মত ও কার্যকর জাতীয় নীতি ও কৌশল প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সামরিক ও বেসামরিক বিশ্লেষকগণ।

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ (এএফডি) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ-এর (বিআইআইএসএস) যৌথ আয়োজনে বুধবার ‘আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক দৃশ্যপট : বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রভাব ও পরবর্তী গতিপথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে তারা এ বিষয়গুলো আলোচনা করেন।

রাজধানীর ইস্কাটনে বিআইআইএসএস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে রাজনৈতিক ও সামরিক বিশ্লেষক, দেশ-বিদেশের রাষ্ট্রদূত, সশস্ত্র বাহিনী ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ যোগ দেন।    

নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. সাখাওয়াত হোসেন সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি তার বক্তব্যে অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার ওপর জোর দেন এবং এ বিষয়ে রাজনীতিকদের অন্য দেশ থেকে শেখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কোনো দেশ একা টিকে থাকতে পারে না। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত সম্ভব নয়। বাংলাদেশকে সকল দেশের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ ও পারস্পরিক স্বার্থনির্ভর সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

বিশেষ অতিথি এএফডি’র প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান বিশ্লেষণধর্মী বক্তব্যে জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে স্পষ্টতা, নীতিনির্ধারণে দূরদৃষ্টি এবং প্রতিরক্ষা শিল্প গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। 
তিনি বলেন, বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলসহ বিশ্বে ভূগোলের চেয়ে রাজনীতি অধিক প্রভাবশালী হয়ে উঠছে। ভূরাজনীতিতে জটিল ও বহুমাত্রিক প্রভাব রয়েছে, যেখানে জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক দিকগুলোর বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা দরকার। 

বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির জাতীয় কৌশলগত বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, অস্থিতিশীলতা তৈরি হলে জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়ার ঝুঁকি আছে। দেশের যেটুকু সামর্থ্য আছে তা দিয়েই পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। তবে জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় রেখে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিজেদের মতো করে স্বাধীনভাবে নিতে হবে। 

সেমিনারে আঞ্চলিক সহযোগিতা, কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা, প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি ও অপ্রচলিত নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় সমন্বিত কৌশল গ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বক্তারা বলেন, দক্ষিণ এশিয়া, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পরিবর্তনশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি বাংলাদেশের কৌশলগত অগ্রাধিকার নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ এস এম আলী আশরাফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাব এনাম খান ও বিআইআইএসএস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিসসহ অন্যরা সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।

Share This Article