আগামী ১৭ অক্টোবর সব রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে এক অতি জরুরি বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এই আশা প্রকাশ করেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনারা যেভাবে সবাই মিলে জাতীয় সনদ তৈরি করেছেন। সরকারের দায়িত্ব হলো উৎসবমুখর নির্বাচনটা করে দেওয়া। তাহলে আমাদের কাজ একটা পরিণতিতে এলো। আর তা না হলে আপনারা সুন্দর একটা সনদ করলেন, আর আমরা একটা ভণ্ডুল মার্কা নির্বাচন করলাম, এই নির্বাচনের তো কোনো দরকার নেই। কাজেই জুলাই সনদের ভিত্তিতেই যেন নির্বাচনটা হয়।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, যে অসম্ভবকে আপনারা সম্ভব করেছেন সেটা শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে না পৃথিবীর রাজনৈতিক ব্যবস্থার ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য হয়ে থাকবে। আপনারা কঠিন কঠিন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং সমাধানে এসেছেন। নিজেরা সবাই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছেন, একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পেরেছেন। এজন্য আজকে জুলাই সনদ রচিত হয়েছে। সেজন্য আমি একা নই, জাতির সবাই অভিভূত হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে যেই পয়েন্টে এসেছি, সেটা একটা অবিশ্বাস্য কাণ্ড। মানুষ চিরদিন স্মরণ করবে, বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে গর্ববোধ করছে। আমি একজন ব্যক্তি হিসেবে গর্ববোধ করছি, যে এই কাজের সঙ্গে আমি শরিক ছিলাম, অংশীদার ছিলাম। যেই অসম্ভব কাজ আপনারা করলেন এটা যুগ যুগ ধরে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ইতিহাসের স্বর্ণ অক্ষরে লিখে রাখার মতো একটা দিন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যে কলম দিয়ে স্বাক্ষর করা হবে সেগুলো জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে। মানুষ তাদের ভুলতে পারবে না। এটা এমন একটা ঘটনা যে ঘটনার ভেতরে থেকে এর বিশালত্ব বোঝা যাচ্ছে না। মাসের পর মাস বৈঠক করে হতাশা এসেছে, মনে হয়েছে এটা হয়তো অসমাপ্ত থেকে যাবে। তবে এটা অসমাপ্ত থেকে যায়নি। জুলাই সনদ জাতির জন্য একটা মস্ত বড় সম্পদ হয়ে রইল।
এ সময় সনদ ও নির্বাচন বিচ্ছিন্ন কোনো জিনিস নয় বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, উত্তরণটা কীভাবে হবে এটা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। সেটার উত্তরও জুলাই সনদে দেওয়া আছে। এই উত্তর নিয়ে যেন সন্তোষভাবে উত্তরণটা করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো যেভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেভাবে রূপান্তরটি হবে।