কক্সবাজারের টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) তার প্রতিষ্ঠার ৭৭তম বছরে সীমান্ত সুরক্ষা, মাদকবিরোধী যুদ্ধ এবং মানবপাচার রোধে নজির স্থাপন করেছে। ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ব্যাটালিয়নটি ২১৭ কোটি ২৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা মূল্যের মাদক, অস্ত্র ও চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে।
এই সময়ে ১৭৯ জন আসামি গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধারকৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে ৫৭ লাখের বেশি ইয়াবা ট্যাবলেট, ৪.২০৬ কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস, ২.০৮৮০৩ কেজি স্বর্ণ।
অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দের মধ্যে রয়েছে—
এ-৩ রাইফেল ৩টি, এলজি ৪টি, বিদেশি পিস্তল ৪টি, ওয়ান শুটার গান ৫টি, এক নলা বন্দুক ২টি, রামদা ৮টি, দেশীয় কিরিচ ৮টি, চাকু ৪টি, চাইনিজ কুড়াল ১টি, চাপাতি ১টি।
এছাড়া গ্রেনেড ৪টি, রকেট বোমা ১টি, হাতবোমা ৬৯টি, রকেট লাঞ্চারের গোলা ১টি, তাজা গুলি ৬৬৭ রাউন্ড, ম্যাগাজিন ৪টি, খালি ম্যাগাজিন ৪টি, প্লাস্টিক ম্যাগাজিন ১টি, এবং বোমা তৈরির সরঞ্জাম ২.৯ কেজি উদ্ধার করা হয়।
মানবিক ও নিরাপত্তা অভিযানে ব্যাটালিয়নটি অপহৃত ৩৮৭ জনকে উদ্ধার এবং ৮৭ মানবপাচারকারীকে আটক করেছে। মিয়ানমারের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে ৩৪ জন নিরাপত্তা সদস্যকে নিরাপদ প্রত্যাবাসন, আরাকান আর্মির হাতে আটক ১২৪ জন বাংলাদেশি জেলে এবং ১৮টি নৌকা ও জাল ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ৪৪০ জনকে শীতবস্ত্র বিতরণ, ৮টি মেডিকেল ক্যাম্পে ১,০৯৭ জনকে চিকিৎসা সেবা, এবং প্রায় ১,০০০ অসহায় মানুষকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে ২ বিজিবি।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান, পিএসসি বলেন—“যতদিন লাল-সবুজ পতাকা উড়বে, ততদিন দেশের দক্ষিণ সীমান্তে আমরা দুর্ভেদ্য প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো। সীমান্তের সুরক্ষা, সার্বভৌমত্ব ও জাতির স্বার্থে প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গ করতেও প্রস্তুত আমরা।”