মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন যে গাজা উপত্যকায় আটক বাকি ইসরায়েলি বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি না দিলে এ উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের এবং হামাসের প্রতিরোধকামী সদস্যদের হত্যা করা হবে। মুক্তিপ্রাপ্ত আট বন্দির সঙ্গে হোয়াইট হাউসে দেখা করার পর বুধবার ট্রাম্প একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে এ সতর্কীকরণ বার্তা জারি করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ‘লাস্ট ওয়ার্নিং’ এর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এমন হুমকি গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি থেকে সরে যেতে নেতানিয়াহুকে উৎসাহিত করছে।
হামাস বলেছে, বারবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ ধরনের হুমকি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গাজা যুদ্ধবিরতি থেকে সরে আসতে এবং গাজাবাসীদের ওপর ইসরায়েলি অবরোধ আরও তীব্র করতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে হামাসের মুখপাত্র আবদেল-লতিফ আল-কানৌয়া বলেন, অবশিষ্ট ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো দখলদার ইসরায়েলকে দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতিকে এগিয়ে নেওয়া এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির আইন মেনে চলা।
এর আগে, বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে হামাসকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, এটা আপনাদের জন্য শেষ সতর্কবার্তা! হামাস নেতাদের এখনই গাজা ছেড়ে চলে যেতে হবে। আপনাদের এখনও সুযোগ আছে।
গাজাবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আর গাজার জনগণের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। কিন্তু যদি তোমরা জিম্মিদের আটকে রাখো তাহলে ভালো হবে না। যদি তোমরা সেটা করো, তাহলে তোমরা সব মারা যাবে! বুদ্ধি খাটিয়ে সিদ্ধান্ত নাও।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে অবশিষ্ট জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা অংশ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় গত শনিবার। কিন্তু ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে যেতে অস্বীকার করেছে। সেই সঙ্গে গাজায় ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির বদলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির জন্য প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে। এতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তবে হামাস এ বিষয়ে আলোচনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
হামাস দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে অটল রয়েছে। যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের চুক্তি কার্যকর হলে আটক সব জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে হামাসকে। অন্যদিকে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে।