ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ও একমাত্র নারী ভিপি মাহফুজা খানম মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মাহফুজা খানম আজ মঙ্গলবার মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
মঙ্গলবার সকালে অসুস্থবোধ করায় তাকে পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি ঢাকার ইন্দিরা রোডে স্বামী সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদের সঙ্গে থাকতেন।
মাহফুজা খানমের ছোট ছেলে মাহবুব শফিক গণমাধ্যমকে বলেন, তার মা বেলা ১১টার দিকে শরীরচর্চার জন্য বের হয়েছিলেন। পথে অসুস্থ বোধ করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসরক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মাহফুজা-শফিক দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে ও মেয়ে পেশায় চিকিৎসক। ছোট ছেলে মাহবুব শফিক একজন আইনজীবী।
মাহফুজা খানম ১৯৬৬-৬৭ ডাকসু নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়নের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি ভিপি হয়েছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৬৬ সালে স্নাতক ও পরের বছর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ১৯৬৮ সালে লন্ডনের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি পেলেও রাজনৈতিক কারণে তখন তাকে পাসপোর্ট দেয়নি পাকিস্তান সরকার।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার বাদ আসর ইন্দিরা রোডের বাসায় বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মাহফুজা খানমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আগামীকাল বুধবার তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা জানানো যাবে।
এরপর শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দুপুর ১২টায় নেওয়া হবে ডাকসু ভবনে। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা হবে। জানাজা শেষে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
মাহফুজা বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিতে সাধারণ সম্পাদক এবং জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন খেলাঘর আসরের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেছেন। শিক্ষায় বিশেষ অবদান রাখায় ২০২১ সালে একুশে পদক পান অধ্যাপক মাহফুজা। তার মৃত্যুতে শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
উদীচীর শোকবার্তার তথ্য অনুযায়ী, মাহফুজা খানম ১৯৪৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সালে ছিলেন বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক।