‘ডেলিভারি রোবট আসছেই’ — ‘স্টারশিপ’ বদলে দিচ্ছে বিশ্ব ডেলিভারি ব্যবস্থা

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

‘ডেলিভারি রোবট আসছেই ‘ডেলিভারি রোবট আসছেই বিশ্বের বড় শহরগুলোতে দ্রুত খাবার বা গ্রোসারী পণ্যের হোম ডেলিভারি এখন আর নতুন কিছু নয়। কিন্তু দরজায় দরজায় ঘুরে বেড়ানো স্বয়ংক্রিয় রোবটের দৃশ্য এখনও বেশ অপরিচিত। স্কাইপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা আহতি হেইনলা মনে করেন, তার নতুন উদ্যোগ  স্টারশিপ টেকনোলজির  মাধ্যমে এটি  শিগগিরই খুবই সাধারণ দৃশ্যে পরিণত হবে।

আহতি হেইনলা বর্তমানে স্টারশিপ টেকনোলজিসের প্রধান নির্বাহী। তিনি দাবি করেছেন, তার কোম্পানির স্বয়ংক্রিয় রোবটগুলো এখন ছোট শহর ও গ্রামাঞ্চলেও স্বল্প খরচে পণ্য পৌঁছে দিতে সক্ষম — এমনকি মানব ডেলিভারি কর্মীর চেয়েও সাশ্রয়ী উপায়ে।

তিনি লন্ডনের এক হোটেলে মধ্যাহ্নভোজের সময় বলেন, “আমরা প্রায় সব সমস্যার সমাধান করে ফেলেছি। এটি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র — এটা হবেই। খুব স্পষ্ট যে এটা আসবেই।”

বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার, লিডস, কেমব্রিজ ও মিল্টন কেইন্স, ফিনল্যান্ড এবং হেইনলার নিজ দেশ এস্তোনিয়ায় এই রোবটগুলো খাবার ও মুদি সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে গ্রাহকের দোরগোড়ায়। প্রযুক্তিটি ধীরে ধীরে মূলধারায় প্রবেশ করছে— রোবটগুলো দেখা গেছে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাগান পার্টিতেও, আবার জনপ্রিয় মার্কিন ড্রামা দ্য বিয়ার–এর এক পর্বেও। এখন পর্যন্ত স্টারশিপ প্রায় ৮০ লক্ষ ডেলিভারি সম্পন্ন করেছে মাত্র ২০০ জন কর্মচারীর মাধ্যমে, আর কোম্পানি এই সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

আহতি হেইনলা প্রযুক্তি জগতে নতুন নন। তিনি স্কাইপ সফটওয়্যারের সহ-নির্মাতা, যা একসময় যোগাযোগের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ২০০০ সালের দিকে হেইনলা একজন ভিডিও গেম ডেভেলপার ছিলেন। তখন স্কাইপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিকলাস জেনস্ট্রম ও ইয়ান ট্যালিন তাকে দ্রুত নতুন কোড লেখার দায়িত্ব দেন। সেই কোড থেকেই জন্ম নেয় ফাইল-শেয়ারিং সফটওয়্যার কাজা (Kazaa), পরে তারই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি হয় স্কাইপ।

মাত্র ছয় সদস্যের সেই দল ২০০৫ সালে অনলাইন নিলাম সাইট ইবে(Ebay)–এর কাছে স্কাইপ বিক্রি করে দেয় ৩.১ বিলিয়ন ডলারে (প্রায় ২.৩ বিলিয়ন পাউন্ড)। আজকের দিনে সেটা যেন অন্য এক যুগের গল্প— স্কাইপ সম্প্রতি বন্ধ হয়েছে। সে সময়ের কথা বলতে গিয়ে হেইনলা বলেন, “ওটা যেন আমার অন্য এক সংস্করণ ছিল।” তিনি তার আয় সম্পর্কে কিছু জানাননি, তবে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, চাইলে তিনি ব্যক্তিগত জেটে চড়ে জীবন উপভোগ করতে পারেন— “যেভাবে অনেক সাবেক টেক উদ্যোক্তা করেন।”

যাই হোক, আহতি হেইনলারের স্টারশিপ টেকনোলজিস  কেবল প্রযুক্তি উদ্ভাবনের আরেকটি অধ্যায় নয়, বরং এটি কর্মসংস্থান, খরচ এবং শহর-গ্রামের সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ডেলিভারি রোবট হয়তো আগামী দশকে হবে আমাদের প্রতিদিনের জীবনের অংশ।



ভালো সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ ফিডটি অনুসরণ করুন


Google News

Share This Article