
ভোলায় বিএনপি ও বিজেপি (বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি) নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের কয়েক ঘণ্টা পরই স্থগিত করা হয়েছে ভোলা সদর উপজেলা বিএনপির কমিটির কার্যক্রম। শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভোলা সদর উপজেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হলো।”
এর আগে সকাল ১১টায় নতুন বাজার বিজেপি কার্যালয় থেকে মিছিল বের করেন দলটির নেতাকর্মীরা। মিছিলটি সদর রোড ও চকবাজার ঘুরে দলীয় কার্যালয়ে এসে সমাবেশ করে। এদিকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিএনপি দুপুর সাড়ে ১২টায় মহাজনপট্টি দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করে। মিছিলটি সদর রোড, বাংলাস্কুল মোড় ঘুরে নতুন বাজার প্রবেশ করলে দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষপের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ, সংবাদকর্মীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। ভাঙচুর করা হয় বিজেপি অফিসের বেশ কিছু আসবাবপত্র। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাস্তার পাশে রাখা ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
সংঘর্ষের পর ভোলা জেলা বিএনপি তাদের কার্যালয়ে বেলা ২টায় সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রাইসুল আলম বলেন, তাঁদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে পেছন দিক থেকে বিজেপির কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালান। তিনি বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমাদের ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম।’
সম্প্রতি ভোলার বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির বিরুদ্ধে ঝাড়ুমিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। এর প্রতিবাদে আজ প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করে বিজেপি। দলের ভোলা জেলার সাধারণ সম্পাদক মোতাসিম বিল্লাহ বলেন, বিজেপির নেতা–কর্মীরা প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে দলীয় কার্যালয়ে সভা করছিলেন। এ সময় বিএনপির নেতা–কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালিয়েছেন। এতে তাঁদের ২৪ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, বিএনপির মিছিলক ডিসি অফিসের সামনে দিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা থাকলেও সেখান দিয়ে না গিয়ে জোর করে নতুন বাজারে দিকে রওয়ানা করে। প্রেস ক্লাবের সামনে এলে বিজেপির পার্টি অফিস থেকে লোকজন পৌরসভার দিকে আগায়। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়। তখন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে শনিবার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ এই ঘটনার জন্য বিএনপির একটি পক্ষকে দায়ী করেন। তিনি লিখেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে জাতীয়তাবাদী শক্তির সম্মান দেশব্যাপী সাংঘাতিকভাবে ক্ষুন্ন হবে এবং সমগ্র দেশব্যাপী ভোটে এর প্রভাব পড়বে। অনেক দুঃখজনক ব্যাপারটা।’ শেষে আন্দালিভ রহমান পার্থ লিখেন, ‘ঐক্যের কোন বিকল্প নাই
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষ ও অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ। সেই প্রেক্ষিতেই তাৎক্ষণিকভাবে সদর উপজেলা কমিটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি।