পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে ভ্যাটিকানে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তবে, শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা—কে হবে নতুন পোপ? পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি হাজার বছরের পুরনো। যদিও এই প্রথাগুলো ঐতিহ্যে ভরপুর, তবুও আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এক পোপের মৃত্যু ও অপর পোপের নির্বাচনের মধ্যবর্তী সময়কে ‘প্যাপাল ইন্টেরেগনাম’ বলা হয়। পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এই সময়কালের সূচনা হয়েছে। এখন কার্ডিনালদেরকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে: কখন পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে এবং কখন কনক্লেভ (পোপ নির্বাচনের গোপন বৈঠক) শুরু করা যাবে।
পৃথিবীজুড়ে রোমান ক্যাথলিকদের চার্চগুলো পরিচালনার ক্ষেত্রে কার্ডিনালরা পোপকে সহায়তা করেন। পোপের পরেই কার্ডিনালদের ধর্মীয় মর্যাদা। যেহেতু পোপ আর নেই, তাই কার্ডিনালরা বৈঠকের মাধ্যমে পরবর্তী পোপ নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবেন।
পোপের মৃত্যুর পর নয় দিনব্যাপী শোক পালন (নোভেন্ডিয়ালেস) শুরু হয়েছে। প্রথা অনুযায়ী, পোপকে মৃত্যুর চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ দিনের মধ্যে সমাধিস্থ করতে হবে। এছাড়া সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় পোপের দেহ জনসাধারণের দেখার জন্য প্রদর্শন করা হবে এবং প্রতিদিন স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। ২০০৫ সালে শেষবারের মতো যখন পোপ জন পল দ্বিতীয়ের মৃত্যু হয়েছিল, তখন লাখো শোকার্থী ভক্ত লাইন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন জন পলকে শেষবারের মতো দেখার জন্য।
মূলত, ৮০ বছরের কম বয়সী সব কার্ডিনাল ভ্যাটিকানে একত্রিত হয়ে পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি নির্বাচন করবেন। সাধারণত পূর্ববর্তী পোপের মৃত্যুর দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে নতুন পোপ নির্বাচিত হন। তবে কার্ডিনালরা যদি কোনও প্রার্থী নিয়ে একমত হতে ব্যর্থ হন, তাহলে এই সময়সীমা কিছুটা বাড়তেও পারে।
যদিও এই প্রক্রিয়ার মূল কাঠামো শতাব্দী প্রাচীন, তবু সাম্প্রতিক সময়ে কিছু আপডেট করা হয়েছে। যেমন:
১. কনক্লেভের স্থানটি এখন আধুনিক প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সজ্জিত
২. যোগাযোগের ক্ষেত্রে কঠোর গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়
৩. নতুন পোপ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা করা হয়েছে
পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি নির্বাচন ক্যাথলিক চার্চের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হবে, কেননা তিনি চার্চে যে সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছিলেন, সেগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা নতুন পোপের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে। বিশ্বের এক বিলিয়ন ক্যাথলিক খ্রিস্টান এখন উত্তেজনার সাথে অপেক্ষা করছেন কে হবেন পরবর্তী পোপ।