ময়মনসিংহের নান্দাইলে চুরির অভিযোগের দায় মাথায় নিয়ে আত্মহত্যা করতে যাওয়া এক প্রতিবন্ধী যুবকের প্রাণে বাঁচিয়েছেন ময়মনসিংহের নান্দাইল মডেল থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। প্রতিবন্ধী ওই যুবকের নাম কাউসার মিয়া। তিনি নান্দাইল উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের বনাঢী গাংগাইল পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এদিকে প্রতিবন্ধী ওই যুবকের প্রাণ বাঁচানোয় এলাকাজুড়ে প্রশংসায় ভাসছেন ওসি মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। তবে বিষয়টিকে ‘নিয়মিত কর্তব্য’ বলেই অভিহিত করেছেন নান্দাইল মডেল থানার এই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
গত রোববার রাত ১০টার দিকে নান্দাইল উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের বনাঢী গ্রামের গাংগাইল পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।জানা গেছে, গাংগাইল পাড়া এলাকার রমজান আলীর বসতঘরের বারান্দার দরজা ও গ্রীল কেটে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রতিবন্ধী কাউসার মিয়াকে উদ্ধার করে। এসময় ওই প্রতিবন্ধীর হাত থেকে রক্তাক্ত চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। পরে নান্দাইল উপজেলা সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা প্রদান শেষে তাকে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেন নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ।
এলাকাবাসী বলছে, কাউসার একজন বাকপ্রতিবন্ধী যুবক। বনাঢী গ্রামের গাংগাইল পাড়া এলাকার মো. রমজান আলীর দ্বিতীয় পুত্র। গত বৃহস্পতিবার সে স্থানীয় শাহী মসজিদের দানের ২ বস্তা চাউল চুরি করে তা হালিম নামের এক ব্যাক্তির দোকানে বিক্রি করে দেয়। পরে এলাকাবাসী জানতে পেরে তা কাউসারের পরিবারকে জানায়। একপর্যায়ে রোববার রাতে তার পিতা-মাতা কাউসারকে ওই চাউল বিক্রির টাকা ফিরিয়ে দিতে চাপ প্রদান করলে এতে সে ক্ষিপ্ত হয় এবং দৌড়ে গিয়ে তার ঘরে প্রবেশ করে চাকু দিয়ে নিজের পায়ের রগ কাটতে এলোপাতাড়ি কোপ দিতে থাকে।
এরপর প্রতিবন্ধী যুবকের বাবা রমজান আলী কোন উপায় না পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দিলে নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুল মজিদ নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় থানা পুলিশ দরজা ও গ্রীল কেটে বাক প্রতীবন্ধীকে হাতে চাকু সহ রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
কাউসারের পিতা রমজান আলী ও চাচা খসরু মিয়া জানান, ওই প্রতীবন্ধী মূলত জুয়া খেলার টাকা জোগাড় করতে মসজিদের চাউল চুরি করে বিক্রি করে দেয়। পরে তার নিকট টাকা চাইলে সে আত্মহননের চেষ্টা করে। এ বিষয়ে নান্দাইলের ওসি সহ পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছন কাউসারের পরিবার।
এবিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুল মজিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে ওই প্রতিবন্ধীকে আত্মহনন থেকে উদ্ধার করি এবং নান্দাইল হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে পরিবারের হাতে হস্তান্তর করি। আমাদের সহায়তায় অল্পের জন্য প্রতিবন্ধী কাউসার প্রাণে বেঁচে যায়। এগুলো আমাদের নিয়মিত কর্তব্য। তারপরও মানুষ যদি আমাদের প্রশংসা করে, সেটি আমাদের জন্য ভালোলাগার বিষয়।