নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় জান্নাতি খানম (২৩) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি পরিকল্পিতভাবে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার ওই গৃহবধূর স্বামী সাজ্জাদ মোল্যা (৩২) ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছেন।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সন্ধার দিকে ওই গৃহবধূর শশুর বাড়ি লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের চর-শালনগর গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে লোহাগড়া থানা পুলিশ।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শরিফুল ইসলাম বার্তা বাজারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত জান্নাতি খানম লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের চর-শালগর গ্রামের দাউদ মোল্যার ছেলে সাজ্জাদ মোল্যার স্ত্রী এবং একই ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের মিটুল মোল্যার মেয়ে।
নিহতের স্বজন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় চার মাস আগে চর-শালনগর গ্রামের সাজ্জাদ মোল্যার সাথে রঘুনাথপুর গ্রামের জান্নাতি খানমের বিবাহ হয়। তবে এর আগে সাজ্জাদ এর বিবাহ ছিলো এবং তার প্রথম স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হয় যা গোপন করে সাজ্জাদ ও তার পরিবার। পরে গত বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুর্গাপূজা উপলক্ষে শালনগর ইউনিয়নের শিয়েরবর মধুমতি নদীতে নৌকা বাইচ ও নদী পাড়ে মেলা দেখার উদেশ্যে ওই গৃহবধু শশুর বাড়ি চর-শালনগর থেকে বাবার বাড়ি রঘুনাথপুর আসেন।
এরপর সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুর ১২ টার দিকে সাজ্জাদ মোল্যা ও তার পরিবার নিহত জান্নাতি তার বাবার বাড়ি থেকে অটোভ্যান যোগে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে বেলা দেড়টার দিকে সাজ্জাদ এর ছোট ভাই জান্নাতি ভাই সাব্বিরকে ফোন দিয়ে জানায় যে জান্নাতি স্ট্রোক করেছে আপনারা লোহাগড়া হাসপাতালে আসেন। এরপরে জান্নাতির পিতা লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেসে গিয়ে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে বিকেলের দিকে জামাই সাজ্জাদ মোল্যার বাড়িতে যা, সেখানে গিয়ে একটি ভ্যানের উপর জান্নাতি মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশে খবর দিলে সন্ধার দিকে লোহাগড়া থানা পুলিশের একটি দল মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নিহত জান্নাতির গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
সোমবার রাতে লোহাগড়া থানায় নিহতের পরিবারের লোকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, জান্নাতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সাজ্জাদ ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় তাদের শাস্তির দাবি জানান তারা। এদিকে ঘটনার পর অভিযুক্ত সাজ্জাদ মোল্যা ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে যাওয়ায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শরিফুল ইসলাম বার্তা বাজারকে বলেন, মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল জেলা হাসপাতালে পাঠানোর হচ্ছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ছাড়া নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।