স্টাফ রিপোর্টার।।
খুলনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতায় দখল হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার একর সরকারি খাস সম্পত্তি। নদীর নাব্যতা হ্রাস, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন ভাবে গড়ে ওঠা এসব সম্পত্তি রাতের আঁধারে এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তি দখল করে নির্মাণ করছেন বহুতল ভবন।
এসব বিষয় নিয়ে সচেতনমহল পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের একাধিকবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে আবেদন জানালেও কোন ফল মেলেনি। বরং কিছু কর্মচারী অবৈধ দখলদারের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে তাদেরকে দখল কাজে সহায়তা দিয়ে চলেছেন।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২ সূত্রে জানা গেছে, তাদের হিসাব মতে বিভাগ-২ এর আওতায় ৬ হাজার একর খাস জমি রয়েছে। এসব জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে বসে আছেন প্রভাবশালী দখলদাররা। বিভিন্ন সময়ে তাদেরকে লোক দেখানো নোটিশ করলেও পরে নিরব হয়ে যায়। পক্ষান্তরে তারা দোষারোপ করেন রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের।
খুলনার নিকটতম উপজেলা বটিয়াঘাটায় প্রতিনিয়ত দখলদারদের কবলে পড়ছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শত শত একর জমি। তারা দখল করে গড়ে তুলছেন ঘর-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দোকান ঘর, মিল-কারখানা।
সুরখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আবু বক্কর শেখ বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে একাধিক লিখিত অভিযোগে জানান, ৩০ নম্বর পোল্ডারে ২২০ নং কেসে সুখদাড়া মৌজায় বাজার চৌরাস্তা মোড় সংলগ্ন এলাকায় পান্নি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা। যার খতিয়ান নং-১, দাগ নং ৩০৩ প্রায় ৫০ ফুট প্রস্তের সরকারি খাস সম্পত্তি।
এই সম্পত্তিতে একই এলাকার আশরাফ সরদারের ছেলে আলমগীর সরদার বহুতল বিশিষ্ট পাকা ভবন নির্মাণ কাজ করেই চলেছেন। বিষয়টি নিয়ে পানিউন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করা হলেও তারা কর্ণপাত না করায় অবৈধ স্থাপনা তৈরীর কাজ অব্যাহত রয়েছে। রাস্তার দু’পাশেই চলছে তার দখলের মহোৎসব। একই ভাবে আরও অনেকেই দখল কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গড়ে উঠছে পাকা স্থাপনা।
খুলনা জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দু’টি বিভাগেই সরকারি খাস জায়গা গিলছে ২০৯৬ দখলদার। মোট ৪৫টি মৌজার মধ্যে ডুমুরিয়ার, আড়ংঘাটা শলুয়া, শাহাপুর থুকড়া, মিকশিমিল, বটিয়াঘাটার সুখদাড়া, কিসমত ফুলতলা, গাওঘরা, বিরাট, জালিয়াখালী, সাচিবুনয়া, সাহস, রাজবন্দ, কৃষ্ণনগর, চক আসান খালীসহ বিভিন্ন স্থানের এ সব জমি দখলদাররা নিয়ন্ত্রণ করছেন।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, বটিয়াঘাটায় ৩০ নম্বর পোল্ডারের সুখদাড়া এলাকার বিষয়টি অবগত হওয়ার পর অবৈধ দখলদারদের নোটিশ করা হয়েছে। সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না। দ্রুত উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, তার বিভাগের আওতায় ৬ হাজার একর খাস জমি রয়েছে। জনবল সংকটের কারণে কার্যক্রম পরিচালনায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।