দুইজনের পরিচয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পরিচয় সূত্রধরে হয় বন্ধুত্ব। পরে বন্ধুত্ব গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। প্রেমিকের বাড়ি বাংলাদেশে। আর প্রেমিকার বাড়ি সুদূর যুক্তরাষ্ট্রে। এক পর্যায়ে তারা একে অপরকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। এ ক্ষেত্রে বাধ সাধে বয়স ও ধর্ম। তবে প্রেম মানে না কোনো বাধা। প্রেমের টানে সুদূর আমেরিকা থেকে ছুটে আসেন প্রেমিকা। গত সোমবার দুপুরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এ প্রেমিক যুগল। ফেনী শহরের বেস্ট ইন রেস্টুরেন্টে ইসলাম ধর্মের রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ে হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া শহরের বাসিন্দা সেন্ডোরা ব্রোক্সের (৫৫) সঙ্গে পরিচয় হয় ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব সফরপুর গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে জামশেদ আলম রাজুর (২৫)। প্রেমের সম্পর্কের পর চলতি বছর দুজনে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। সে মোতাবেক রোববার সকালে রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে নামেন প্রেমিকা সেন্ডোরা ব্রোক্স। সেখানে রাজু তাকে স্বাগত জানান। রাজুর সঙ্গে বিয়ের আগে সেন্ডোরা ব্রোক্স আদালতের মাধ্যমে খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। মুসলিম হওয়ার পর তার বর্তমান নাম রাখা হয়েছে লামিয়া।
এ ব্যাপারে জামশেদ আলম রাজু জানান, ২০১৮ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আমাদে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রোববার সকালে তিনি দেশে আসার পর আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে আমরা বিয়ে করেছি। আমার স্ত্রী আমেরিকার একটি হাসপাতালে চাকরি করেন। তিন সপ্তাহ পর তিনি আবার আমেরিকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন। বর্তমানে আমি এলাকায় ব্যবসায় করছি। আমাদের জন্য সবার দোয়া কামনা করি।
রাজু আরও বলেন, সেন্ডোরা আমাকে ভালোবেসে এখানে এসেছে। সুখে-দুঃখে আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই বলে অঙ্গীকার করেছি। সে আমার জন্য নিজ ধর্ম ত্যাগ করেছে।
মনের মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়ে খুশি সেন্ডোরাও (লামিয়া)। তিনি বলেন, আমি ভালো আছি। আমার অনেক ভালো লাগছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, রাজু ও সেন্ডোরা আদালতে হাজির হয়ে হলফনামা দিলে ফেনীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অপরাজিতা দাশ তা মঞ্জুর করেন।
আমিরাবাদ ইউনিয়নের সদস্য গোলাম মাওলা বলেন, আমেরিকান এক নারীর সঙ্গে উভয় পরিবারের সম্মতিতে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বিয়ে হয়েছে বলে শুনেছি। এর আগে কখনো আমাদের এলাকায় কেউ বিদেশী বউ নিয়ে আসেনি। বিয়ের পর তারা ফেনী শহরেই থাকছে। তাদের জন্য শুভ কামনা রইলো।
এদিকে বিদেশী বউকে এক নজর দেখতে রাজুর বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয়রা। এমন বিয়ে দেখে এলাকাবাসী ও রাজুর স্বজনরা খুশি।