
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে জুলাই বিপ্লবী, এনসিপি নেতা ও ফরিদপুর-১ আসনের জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশী হাসিবুর রহমান অপুর বাবার ওপর সন্ত্রাসী হামলা,বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় হাসিবুর রহমান অপুর ছোট চাচা আজিজুর রহমান ঠাকুর বাদি হয়ে বোয়ালমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
বৃস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার চতুল ইউনিয়নের আরাজী বারখাদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার চতুল ইউনিয়নের আরাজী বারখাদিয়া গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান ঠাকুরের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালায় একই গ্রামের মৃত ধলা মিয়া শেখের ছেলে ছিরু শেখ তার ছেলে সজিব শেখ, জুয়েল শেখ, মনির গাজীর ছেলে তানভীর গাজীসহ ১০/১২ জন দুর্বৃত্ত। এসময় হাবিবুর রহমান ঠাকুরকে হত্যার উদ্দেশ্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় তারা। তিনি নিজেকে রক্ষায় দৌঁড় দিলে তার পায়ে ধারালো অস্ত্রে আঘাত লেগে মাটিতে পড়ে গেলে বাঁশ ও লোহার রড দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়। এ সময় হাবিবুর রহমান ঠাকুরের স্ত্রী ফরিদা বেগম স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাকেও লাঞ্ছিত করে তার গলায় থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। একই সময় হাসিবুর রহমান অপুর বসতঘরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় ও মূল্যবান জিনিসপত্রসহ নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার লুট করে তারা। বাদি জানান,নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল ক্ষয়ক্ষতি ও লুট করে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
মামলার বাদি আজিজুর রহমান ঠাকুর জানান, জুলাই আন্দোলন শুরুর সময় থেকেই ফ্যাসিস্টের দোসর আওয়ামী দালালরা অপুকে আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে আমাদের ওপর চাপপ্রয়োগ করে আসছিলো। ৫ আগস্টের পর তারা কিছুটা গা-ঢাকা দিলেও সম্প্রতি অপু সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করার পর আবারো তারা নানা ভাবে আমাদের হয়রানি ও হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এলাকার কিছু সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকদের লেলিয়ে দিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
আহত হাবিবুর রহমান ঠাকুর বলেন, আমি সারাজীবন পুলিশের চাকরি করেছি, কেউ বলতে পারবে না আমি কারো কোনো ক্ষতি করেছি। গ্রামের দশজনের নিকট জানুন, তারাই স্বাক্ষী দেবে। আমার ছেলে জুলাই বিপ্লবের পর থেকেই এরা নানাভাবে আমাদের অত্যাচার করে আসছে। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করায় তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।
ফরিদপুর-১ থেকে এনসিপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হাসিবুর রহমান অপু বলেন, আমার বাবা ২০০৮ সালে জেল পুলিশের চাকুরী থেকে অবসর নেন। তারপর থেকে তিনি বাড়িতেই অবস্থান করছেন। কারো সাথে তার কোনো বিরোধ নেই। অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে তার ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফরিদপুর -১ আসনে নির্বাচনী মাঠে আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার প্রতিপক্ষ পরিকল্পিত ভাবে আমার মনোবল ভেঙে দিতে আমার বাবার ওপর এভাবে নির্মম হামলা চালাতে পারে বলে আমি ধারনা করছি। এতে এনসিপি বা আমাকে দমিয়ে রাখা যাবে না। আমরা জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করে এদেশের মানুষকে সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাদ দিতে কাজ করে যাবো। আমি আমার বাবার ওপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও প্রশাসনের নিকট এ হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছিরু শেখ তার ছেলে সজিব শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন,এ ঘটনায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।