
জিলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখা গেছে। কোরবানীর বাকি আর ৯ দিন। ঈদুল আজহা সামনে রেখে ফেনীতে কোরবানীর জন্য ৯০ হাজার পশু প্রস্তুত করেছে খামারিরা। জেলার ৫ সহস্রাধিক খামারে এসব পশু পরিচর্যা চলছে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। কোরবানীর ঈদকে ঘিরে খামারিরা এখন স্বপ্ন পূরণের আশায় দিন গুণছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানায়, পবিত্র ঈদুল আযহায় প্রতি বছর গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া দিয়ে ফেনীতে কোরবানী করেন সামর্থবান ইসলাম ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিরা। ফেনীতে এবার কোরবানির পশু সংকটের শঙ্কা নেই। জেলায় ৫ হাজার ২৪৬ জন তালিকাভুক্ত খামারির বাইরেও ব্যক্তিগতভাবে অনেকে এক বা একাধিক পশু লালন-পালন করছেন। জেলাজুড়ে এবার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৮৭ হাজার।
তার মধ্যে বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে লালন-পালন করা হচ্ছে ৯০ হাজারের কিছু বেশি গবাদি পশু। সে হিসেবে স্থানীয় খামারিদের পশুতেই জেলার কোরবানির জন্য চাহিদা মিটবে বলে জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর। পশুর যোগান পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকায় ঈদ বাজার খামারি ও ক্রেতা উভয়ের অনুকূলে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক দেশের বাইরে থেকে অবৈধ উপায়ে গরু আমদানি বন্ধ রাখতে হবে। এ বিষয়ে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। গরু আমদানি বন্ধ করা গেলে খামারিরা লাভবান হবে।
এদিকে জেলার বিভিন্ন খামারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে বিক্রির জন্য কোরবানী পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন খামারিরা। তাদের মতে, কোরবানীর বাজারে খামারে লালিত পশু বিক্রি করতে পারলে ভালো লাভ পাওয়া যাবে। তবে ভারতীয় গরু বাজারে ঢুকলে তাদেরকে লোকসানে পড়তে হবে। আর ক্রেতাদের ভাষ্য, দেশীয় পদ্ধতিতে লালিত পশুর মাংস সুস্বাদু ও নির্ভেজাল থাকে। তাই দাম একটু বেশি হলেও ফেনীর ক্রেতাদের নজর থাকে দেশীয় পদ্ধতিতে লালিত পশুর দিকে।
পাঠান বাড়ি এলাকার হাসিনা এগ্রোর মালিক আরাফাত খান জানান, তার খামারে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু পালন করা হয়ে থাকে। তবে গোখাদ্যের দাম বাড়তি হওয়ায় গরু পালনে ব্যয় বেড়েছে। তবুও এবার ঈদে সবার চাইতে কমদামে গরু বিক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ক্রেতারা ঈদের আগেই খামারে এসে আমাদের গরুর বুকিং দিয়েছেন। ইতোমধ্যে অনেকগুলো পশু বিক্রয়ও হয়েছে।
ফেনী জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো. মোজাম্মেল হক ঢাকা প্রতিদিনকে জানান, গত বছর জেলায় ৮০ হাজারের মত পশু কোরবানীতে জবাই করা হয়েছে। চলতি বছর পশু চাহিদা বাড়তে পারে। খামারগুলোতে প্রায় ৯০ হাজার বিক্রিযোগ্য কোরবানী পশু প্রস্তুত রয়েছে। এ কারণে এবারও স্থানীয় পশু দিয়েই কোরবানীর চাহিদা মিটবে বলে তিনি মনে করেন।