ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া শহিদুল আলম আটক

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

গাজা অভিমুখে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও মানবাধিকার কর্মী শহিদুল আলমকে আটক করা হয়েছে। বুধবার তাকে আটক করা হয়। টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, ওই নৌবহরের জাহাজ এবং যাত্রীদের আটক করে ইসরায়েলি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 

গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলের এই অপকর্মে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তিগুলো সরাসরি সহায়তা দিচ্ছে বলে আটকের পর ২৫ সেকেন্ডের এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন শহিদুল আলম।

ওই ভিডিও বার্তায় শহিদুল আলম বলেন, ‘আমি শহিদুল আলম, বাংলাদেশের একজন আলোকচিত্রী ও লেখক। আপনারা এই ভিডিও দেখছেন মানে, আমরা সমুদ্রে আটক হয়েছি এবং ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী আমাকে অপহরণ করেছে। গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা শক্তি সক্রিয়ভাবে সহায়তা দিচ্ছে। আমি আমার সব সহযোদ্ধা ও বন্ধুদের প্রতি ফিলিস্তিনের মুক্তির সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাই।’

এর আগে মঙ্গলবার তিনি ফেসবুকে লিখেছিলেন, বুধবার ভোরে ‘রেড জোন’ বা বিপজ্জনক অঞ্চলে পৌঁছানোর পরিকল্পনা রয়েছে। রেড জোন বলতে তিনি বোঝান সেই এলাকায়, যেখানে সম্প্রতি ইসরায়েলি বাহিনী সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহর আটক করেছিল।

শহিদুল আলম লেখেন, ধীরগতির নৌযানগুলো যেন পেছনে না পড়ে তার জন্য নৌবহরের কিছু নৌযান সাময়িকভাবে ধীরগতিতে চলেছে। এরপর থাউজেন্ড ম্যাডলিনস নৌযানগুলোও তাদের সমকক্ষে এসেছে। বর্তমানে তাদের অবস্থান রেড জোন থেকে প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে।

এদিকে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে লিখেছে, গাজার বৈধ সামুদ্রিক অবরোধ ভাঙার আরেকটি চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। জাহাজ ও যাত্রীদের নিরাপদে বন্দরে আনা হয়েছে এবং তাদের দ্রুত নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।



এর এক সপ্তাহ আগে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে যাওয়া ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামের ৪০টিরও বেশি জাহাজ আটক করেছিল। এটি ছিল গাজা অবরোধ ভাঙার সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক উদ্যোগ। সেই অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন ৪৭৯ জন মানবাধিকারকর্মী, যাদের কয়েকদিন আটক রাখার পর বেশিরভাগকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

আটক অবস্থায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের হাতে নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণের শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ওই ফ্লোটিলার বেশ কয়েকজন অংশগ্রহণকারী। তাদের দাবি, আটকাবস্থায় মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, প্রায় ১৮ বছর ধরে গাজার উপকূলে ইসরায়েলের কঠোর সামুদ্রিক অবরোধ চলছে। আন্তর্জাতিক ত্রাণবাহী জাহাজগুলো সেখানে পৌঁছাতে পারে না। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন নিয়মিত এই অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করলেও, প্রায় প্রতিটি প্রচেষ্টাই ইসরায়েলি প্রতিরোধের মুখে ব্যর্থ হয়েছে।

শহিদুল আলমের অংশগ্রহণে এই সাম্প্রতিক ফ্লোটিলা আটক হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশের মানবাধিকার ও সাংবাদিক সমাজ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং শহিদুল আলমের দ্রুত মুক্তি দাবি করছে।

Share This Article