জাফিরুল ইসলাম ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ::
ফাগুনের মিষ্টিমাখা রোদে স্কুল ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের প্রাণের উচ্ছাস। প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষকদের মিলন মেলায় সেই উচ্ছাসকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রাক্তন শিক্ষকরা একে একে তাদের স্মৃতি রোমন্থন করছেন। অনেকের চোখের কোনায় অশ্রæবিন্দু। এভাবেই কেটে গেল একটি দিন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকরা একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। সব শ্রেনীর মানুষের বসবাসে গ্রামটি সার্বজনীন হয়ে ওঠে। এই গ্রামেই জন্মেছিলেন চল্লিশ দশকে অনারি ম্যাজিষ্ট্রেট বাবু নিখিলেশ্বর চন্দ্র বসু। ক্ষনজন্মা পুরুষ মরহুম অধ্যক্ষ আফসার উদ্দীন আহম্মেদ, আব্দুল কুদ্দুস ও আমজাদ হোসেনের মতো দক্ষ শিক্ষক। নিখিলেশ্বর চন্দ্র বসু ছিলেন তৎকালীন প্রাদেশিক মন্ত্রী বশির মাজমাদেরর বন্ধু। তার জমির উপর পরিত্যক্ত বাড়িতে এক ঝাক বিদ্যানুরাগী যুবকদের প্রচেষ্টায় ১৯৭৫ সালে গড়ে ওঠে বংকিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সোমবার সেই স্কুল মাঠে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শিক্ষকদের সংম্বর্ধনার আয়োজন করা হয়।
গোটা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আলমগীর হোসেন বিশ্বাস। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথ দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা গোলাম সারোয়ার নন্টু, সাবেক প্রধান শিক্ষক ব্যাংকার আবু তালেব, সাবেক প্রধান শিক্ষক বিরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, আনোয়ার হোসেন, সাবেক শিক্ষক শাহাবুদ্দীন, বজলুর রহমান, বিশিষ্ট ক্রিড়ানুরাগী হায়দার আলী জোয়ারদার, রায়হান উদ্দীন, বাজারগোাপালপুর হাইস্কুলের সাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান, সাবেক ধর্মীয় শিক্ষক ইসরাইল খান, আলিয়াপুর আজিজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দীন, বংকিরা পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা আজিম উদ্দীন, স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপিত রফিকুল ইসলাম দলু, স্কুলের জমিদাতা পরিবারের সদস্য সাবেক শিক্ষক উত্তম কুমার রায়, বংকিরা স্কুলের প্রধান শিক্ষক খসরুল আলম, সহকারী প্রধান শিক্ষক আসাদুল কবীর, রুপসা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান লুলু, সাবেক ইউপি সদস্য এনামুল হক ডালু, ঝিনাইদহের সিনিয়র সাংবাদিক আসিফ কাজল, সাবেক শিক্ষার্থী ও বঞ্চিতজন সংগঠনের চেয়ারম্যান আনোয়ার পাশা বিদ্যুৎ, আহসান হাবিব, সিদ্দিকুর রহমান বাবলু, মোস্তাফিজুর রহমান পিরু, আজিজুর রহমান আজু, শহিদুল ইসলাম নস্কার, গোলাম রহমান চেনা ও অনুষ্ঠানের আয়োজক নাজমুল আলম। বক্তরা শুরুতেই প্রায়াত প্রতিষ্ঠাকালীন সহকারী শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক, আমজাদ হোসেন, আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুল্লাহ ও আবু হুরাইরাসহ স্কুল প্রতিষ্ঠাতাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়। বক্তরা স্কুলের নবাগত শিক্ষার্থীদের চাকরীজীবী না হয়ে প্রকৃত মানুষ হওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, আগামী দিনে তোমরাই সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। তোমাদের যোগ্য হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। প্রাক্তন শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই বক্তৃতা দিতে গিয়ে আবেগ্প্লুত হয়ে পড়েন। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তাদের কন্ঠ বাষ্পরুদ্ধ হয়ে পড়ে।