

হবিগঞ্জের সফল ড্রাগন চাষি। প্রতিদিন লোকজন আসছেন তার সফলতার গল্প শোনতে। শখের বশে ড্রাগন চাষ করেন। এখন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক ভাবে ড্রাগন রুপ্তানির স্বপ্ন দেখছেন। ড্রাগন চাষি সোদি প্রবাসি জহুর হোসেন হবিগঞ্জ জেলার পরিচিত নাম। প্রথমে তিনি ৬,৪০০টি গাছ লাগান । ঐবছরে ৪০লক্ষাধিক টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেন তিনি। ড্রাগন চাষি জহুর হোসেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন এর মানিকভান্ডার গ্রামের আবুল হোসেন এর ছেলে।
নিজের সৌদি আরব ব্যবসার পাশাপাশি ইউটিউবে ড্রাগন চাষ পদ্ধতি দেখে উদ্যোগ নেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর চেষ্টায় আজ ড্রাগন ফল চাষ করে লাভবান হওয়ার সফল তিনি। প্রবাসি জহুর হোসেন এর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইউটিউবে ড্রাগন ফলের বাগান দেখেন। পরে নাটোর থেকে ৬,৪০০টি ড্রাগনের চারা এনে নিজের জমিতে রোপণ করেন। এখন তার ২৫২ শতক জমিতে ৬৪০০ বেশি ড্রাগন ফলের গাছ আছে।
এ পর্যন্ত ড্রাগন চাষে তাঁর মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৫২ লাখ টাকা। এরই মধ্যে ফল বিক্রি করে আয় করেছেন এর তিনগুণ অর্থ। বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে গাছে গাছে ড্রাগন ফল শোভা পাচ্ছে। সাধারণত মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গাছে ফল আসে। বছরে ছয় থেকে সাতবার পাকা ড্রাগন ফল সংগ্রহ করা যায়। পরিপক্ক ও রোগমুক্ত গাছের শাখা কেটে তৈরি করা হয় নতুন চারা। ড্রাগন চাষের পাশাপাশি বাগানে মালটা, কমলা, লেবুসহ মৌসুমি নানা ফল ও সবজির চাষ হচ্ছে। আব্দুল আহাদের তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন জুবায়ের, সাজল ও আতর আলীসহ অন্যান্য শ্রমিক বাগানের পরিচর্যা করেন।
জহুর হোসেন বলেন, ‘ড্রাগন ফল দীর্ঘমেয়াদী আবাদ। এটি লাভজনক চাষাবাদ। প্রথমে একটু খরচ হলেও পরে খরচ তেমন নেই। অন্য আবাদে যেমন সব সময় গাছের যত্ন, সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়; সেদিক থেকে ড্রাগন চাষাবাদ খুবই ভালো। সামান্য পরিচর্যা করতে পারলে ড্রাগন ফল চাষ করা সম্ভব।’
বাগানের পরিচর্যায় নিয়োজিত ম্যানেজার আব্দুল আহাদ বলেন, ‘ড্রাগন চাষে তেমন কোনো পরিচর্যার দরকার হয় না। ফুল আসার এক মাসের মধ্যে ফল ধরে। এখানে ২ জাতের ড্রাগন ফলের গাছ আছে।
বাগান দেখতে আসা দুবাই প্রবাসী ব্যবসায়ী জুয়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা বাজার থেকে ড্রাগন ফল ক্রয় করি। এই প্রথম বাগান দেখতে এসে আহাদ ভাইয়ের কাছ থেকে ড্রাগন ফল ক্রয় করলাম। এটি খুবই ভালো উদ্যোগ।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, জহর হোসেন এর মত প্রবাসীরা কৃষি কাজে এগিয়ে আসলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। দেশের কৃষি বিভাগ যদি পূর্ণ সহযোগিতা করে, তাহলে আমাদের মতো বেকার যুবকরা ড্রাগন ফল চাষ করে কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবেন।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহিদুল ইসলাম জানান, জহুর হোসেনের মতো অনেকেই এখন ড্রাগন ফলসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফল ও সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। ফার্মের পরিচালক আব্দুল আহাদ জানান, জহুর যে উদ্যোগ নিয়েছেন দেশে থেকে, সেটা সফল করতে কাজ করে যাচ্ছেন তিনিসহ অন্যরা। স্থানীয়রা বলছেন, জহুর হোসেন ড্রাগন চাষ করে বাড়তি উপার্জনের পথ সৃষ্টির পাশাপাশি কয়েকজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করেছেন।
সম্পাদনা
ইউআরএল কপি করা হয়েছে