গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় নিভৃতচারী লেখক, গীতিকার ও অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সামাদ মিঞার ‘বলাকার পাখা দিয়ে’ আধুনিক বাংলা গানের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার সম্মেলন কক্ষে ‘বলাকার পাখা দিয়ে’ গানের বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। সুপ্রকাশ সাহিত্য সংসদ এ মোড়ক উন্মোচনের আয়োজন করেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় সরকারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বইটির লেখক মো. আব্দুস সামাদ মিঞা, লেখক ও গবেষক ড. মো. শফিউল ইসলাম ভূঁইয়া, উপাধ্যক্ষ নাসরীন সুলতানা রেখা, সুসাস সম্পাদক ও লেখক কঙ্কন সরকার, সাংবাদিক আব্দুল মান্নান আকন্দ, ছড়াকার কুশল রায়, গল্পকার হাসান রোকন, উত্তরণ পাঠাগার সংগঠক মো. আরিফুর রহমান আরিফ, সাহিত্যপ্রেমী এরশাদুল আলম, জামান রাজিব, পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা সুকুমার রায়, কবি হোসেন ফারুক। ছড়া পাঠ করেন অরবিন্দ মোদক, কণা।
এসময় গান পরিবেশন করেন শিল্পী বিশ্বানাথ দাস, পূর্ণিমা দাস, পারমিতা রায় ছোঁয়া।
সাহিত্যের পাশাপাশি গানেরও সমঝদার নিভৃতচারী লেখক মো. আব্দুস সামাদ মিঞা। গান শোনা-গান চর্চা থেকে গান লেখাও শুরু। বিশেষ করে আধুনিক ও ধ্রুপদী সংগীত তাঁর প্রিয়। একসময় বেশ কিছু গান লিখে রাখেন গানের খাতায়। গানগুলিতে প্রেম, ভালবাসা, বিরহ যেন কথা কয়। অপূর্ব শব্দ আর ছন্দের সম্মিলন সে গানে। নানান ব্যস্ততায় কিছু গান লেখার পর বন্ধ থেকে যায় গানের খাতা; কিন্তু মন পড়ে থাকে গানে। তাইতো সময়ের ডাকে সে মন উড়ে এসে, আবারও সেই খাতায় লিপিবদ্ধ হয় সুর ও সংগীতে। একের পর এক তৈরি হতে থাকে রোমান্টিক, বিরহী গানেরা। এর মধ্য থেকে কয়েকটি গান সুর হয়ে বেরোয় শিল্পীর কণ্ঠে। ভালবাসা পায় সংগীত মুগ্ধ মানুষের। ‘বলাকার পাখা দিয়ে’ গানটি সংগীতপ্রেমিদের অন্তরে গেঁথে গেছে। রেডিওতেও তাঁর গান প্রচার হয়েছে বহুবার; কিন্তু তিনি যে নিভৃতচারী ও প্রচারবিমুখ! তাইতো খাতাবন্দি হয়ে থাকে মুক্তদানাগুলো। এ মুক্তদানাগুলো দেখলেই বোঝা যায় তিনি সংগীতকে ভালবাসেন পুরোপুরি মন থেকে। সবার বিশ্বাস এই আধুনিক গানগুলি শিল্পীর কণ্ঠ থেকে বের হলে চিরকালীন বাংলা গানের তালিকায় এই গানগুলিও পিছিয়ে থাকবে না।
মো. আব্দুস সামাদ মিঞা ১৯৪৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সুন্দরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা প্রয়াত আব্দুল মজিদ মিঞা। মাতা মোছা, জুলেখা বেগম। ছাত্র জীবনেই তিনি লেখালেখির সাথে সম্পৃক্ত হন। তিনি জীবনের শেষপ্রান্তে এসেও ছড়া, কবিতা, রম্যকথিকা ও ছোটগল্প লিখে যাচ্ছেন। সর্বোপরি তিনি একজন গীতিকার। ২০০৭ সালে সুন্দরগঞ্জ আব্দুল মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে সম্মানের সাথে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। এলাকায় নিভৃতচারী ব্যক্তি হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। মো. পারভেজ হাসান মেনন তাঁর একমাত্র সন্তান।