ফেনীর দাগনভূঞায় বালুভর্তি ট্রাক দিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর গণসংযোগে বাধা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। এসময় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর ওপর হামলা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে দাগনভূঞা উপজেলা শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি সেনাসদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সিলোনীয়া বাজারে পথসভা শেষে তুলাতুলি এলাকায় যাওয়ার পথে প্রতিরোধের মুখে পড়ে মিন্টুর গাড়িবহর। ফেনী-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থিতা ঘোষণার পর প্রথমবারের মতো নিজ নির্বাচনি এলাকা সফরে যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। আনুষ্ঠানিক প্রচারণাকে কেন্দ্র করে ফেনী-নোয়াখালী সড়কের দাগনভূঞা জিরো পয়েন্ট এলাকায় যানজট তৈরি হয়। সড়কে বালুভর্তি ট্রাক রেখে মিন্টুর গাড়িবহরে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহবুবুল হক রিপন, সাইফুর রহমান রতন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আবুল হাসেম বাহাদুর ও জেলা ছাত্রদলের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি জামসেদুর রহমান ফটিক সমর্থকরা। এতে সড়কে দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
বাধার মুখে পড়ে মিন্টুকে প্রায় আধাঘণ্টার মতো উপজেলা গেটে গাড়িবহর নিয়ে সড়কে অপেক্ষায় থাকতে হয়। পরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মিন্টুর গাড়িবহর তুলাতুলি বাজারে পৌঁছায়। এসময় তার বহরে থাকা সোনাগাজী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক খুরশিদ আলমসহ বেশ কয়েকজনের ওপর হামলা করেন অবরোধকারীরা। একপর্যায়ে খুরশিদকে অপহরণের চেষ্টা করেন মাথায় হেলমেট পরা অবরোধের সমর্থনে সড়কে থাকা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা। এসময় বেশ কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও মিন্টুর ছবি সম্মলিত ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন বিরোধীরা।
পরে মিন্টু তুলাতুলি বাজারে পথসভা শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, তিনি বিএনপি ও ধানের শীষের প্রার্থী। তফসিল ঘোষণা ও প্রার্থী চূড়ান্ত করা হলে সব বিরোধ মিটে যাবে।
প্রতিবদ্ধকতার বিষয়ে মিন্টুর ছোট ভাই ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকবর হোসেন বলেন, ‘বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজের স্থান নেই। এটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ঘোষণা।’
দাগনভূঞা পৌরসভা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুর রহমান স্বপন বলেন, দলের প্রার্থী আবদুল আউয়াল মিন্টুর পক্ষে কাজ করতে তাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে মিন্টুর ছোট ভাই আকবর হোসেনের বৃত্ত থেকে বের হতে হবে। ত্যাগীদের বাদ দিয়ে উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি নিয়েই মূল বিরোধ।
স্বপনের দাবি, মিন্টুর শোডাউনে অবরোধ নয়, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাইফুর রহমান রতন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আবুল হাসেম বাহাদুর ও জেলা ছাত্রদলের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি জামসেদুর রহমান ফটিকের কারামুক্তি উপলক্ষে জনতার সংবর্ধনা সভা হয়েছে। মানুষের ভিড়ে গাড়িযট লেগেছে।
গত বছরের ২২ ডিসেম্বর ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলালের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলা এবং পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকেই এ কমিটি বাতিলের দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বিজ্ঞাপন
সবশেষ ১৮ জানুয়ারি ফেনী প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন এ দুই উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। ৫ আগস্ট দাগনভূঞায় বিএনপির বিজয় মিছিলে হামলা করেন আকবর বিরোধীরা। এ ঘটনায় আহত ইঞ্জিনিয়ার এনায়েত উল্লাহ সোহেল বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলা জামিন নিতে গেলে আদালত তাদের কারাগারের পাঠানোর নির্দেশ দেন। আজ তাদের কারামুক্তি উপলক্ষে সংবর্ধনার আয়োজন করেন আকবর বিরোধীরা।