বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা, ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা আবুল কালাম জহিরকে (৫০) কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ‘সন্ত্রাসী’ ছোট কাউছার ওরফে পিচ্চি কাউছারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে পরিবার।

এদিকে শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামে হত্যার ঘটনা ঘটলেও রোববার (১৬ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। ময়নাতদন্ত শেষে মামলা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অভিযুক্ত কাউছারের পুরো নাম কাউছার মানিক বাদল। তিনি চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য। তিনি একটি হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ও আরেকটি হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বলে জানা গেছে। কাউছারকে গেল বছর ৭ আগস্ট ছাত্রদল থেকে বহিষ্কার করা হয়, পরে ৪ নভেম্বর তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

অন্যদিকে খবর পেয়ে রাতে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, কোনো হত্যাকাণ্ডই সমাধান না। এই চন্দ্রগঞ্জে প্রচুর রক্ত রাস্তাঘাটে বিভিন্ন জায়গায় পড়ে আছে। এমন কোন ওয়ার্ড নেই যেখানে গত ১৭ বছর গুম খুন না হয়েছে, হত্যাকাণ্ড না হয়েছে। আওয়ামী লীগ নাই, আওয়ামী লীগ পালিয়েছে। তাদের ষড়যন্ত্র আছে। মাদকসহ যারা বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। কে বা কারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে প্রকৃত জিনিস এই মুহূর্তে বলা মুশকিল। যেই হোক রাজনীতি করুক বা না করুক। এদের কোন পরিচয় নেই, এদের পরিচয় এরা সন্ত্রাসী। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই, সঠিক বিচার দাবি করি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের মোস্তফার দোকান এলাকায় সড়কের ওপর জহিরকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। এক সময় জহির মাদক কারবারি ও মাটি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সেখান থেকে তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে তার প্রতিপক্ষ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। মরদেহের পাশে গুলির খোসাও দেখা গেছে। নিহত জহিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদকের ৭টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত জহিরের স্ত্রী ফেরদৌসী আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, সন্ত্রাসী পিচ্চি কাউছারের সঙ্গে জহিরের দ্বন্দ্ব ছিল। কিছুদিন আগেও বাগবিতণ্ডা হয়েছে তাদের। কাউছার সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কাউছারই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

এ বিষয়ে চেষ্টা করেও ছোট কাউছারের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজীম বলেন, হত্যার ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের পরিবার মামলা করবেন। জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। মাদক ব্যবসা ও অন্তঃকোন্দলের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় সন্ত্রাসী পিচ্চি কাউসার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। কাউছারের বিরুদ্ধেও হত্যা ও অস্ত্র আইনে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

Share This Article