
নোয়াখালীর হাতিয়ায় কৃষকদল নেতা আনোয়ার হোসেন এক বিধবা নারীর ঘরে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ার অভিযোগে পদ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। তবে অভিযুক্ত নেতা ওই নারীকে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার (১২ অক্টোবর) গভীর রাতে হাতিয়া উপজেলার হরণী ইউনিয়নে। আনোয়ার হোসেন ওই ইউনিয়নের কৃষকদলের সভাপতি। এ ঘটনায় তীব্র সমালোচনার পর বুধবার (১৫ অক্টোবর) তাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক ভি.পি মোহাম্মদ ফজলে এলাহী পলাশ ও সদস্য সচিব জিএস আব্দুজ্জাহের হারুন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়। চিঠিতে বলা হয়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে আনোয়ার হোসেনকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো এবং একই সঙ্গে হরণী ইউনিয়ন শাখা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।
চিঠিতে আরও উল্লেখ রয়েছে, বহিষ্কৃত ব্যক্তির কোনো কর্মকাণ্ডের দায়ভার দল নেবে না এবং কৃষক দলের নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আনোয়ার রাতে গোপনে ওই বিধবা নারীর ঘরে প্রবেশ করলে এলাকাবাসী ঘর ঘিরে ফেলে আনোয়ারকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে তাকে বেঁধে রাখা হয় এবং ঘটনাটি মোবাইলে ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
বিধবা নারীর দেবর মো. আলাউদ্দিন রুবেল বলেন, আমার ভাই প্রায় এক বছর আগে মারা গেছেন। ভাইয়ের মৃত্যুর পর থেকে ভাবির আচরণ সন্দেহজনক ছিল। এখন তার ঘরে ওই কৃষকদল নেতা ধরা পড়েছে। তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আনোয়ার কোনো বিয়ের কাগজ দেখাতে পারেনি। পরে নোটারি করা কাগজ দেখিয়ে বিয়ে করেছে দাবি করে। এরপর আনোয়ারের পরিবারের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আনোয়ারের স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। তার একাধিক পরকীয়া সম্পর্ক আছে। ওই বিধবা নারীর সঙ্গেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্ক বজায় রাখছিলেন। ঘটনাটি এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
অভিযোগের বিষয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি আদালতের মাধ্যমে ওই নারীকে বিয়ে করেছি। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি সাজানো হয়েছে। পুলিশ আমার বিয়ের কাগজ দেখে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। চেয়ারম্যান ঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল বাতেন বলেন, স্থানীয়রা বিধবা নারীর ঘরে অন্তরঙ্গ অবস্থায় একজন পুরুষকে ধরে রেখেছে শুনে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিল। আনোয়ার হোসেন নোটারি করা বিয়ের কাগজ দেখালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।