বুয়েট এমএসসি পরীক্ষায় চাটখিলের আয়মনের সাফল্য

রহিমা আক্তার মৌ

রহিমা আক্তার মৌ কন্যা দিবসের আবেগ চলমান থাকতে থাকতেই নিজের এলাকার কন্যার সাফল্যের খবরে নিজের টাইমলাইনে লিখলাম “কন্যারা হাসলেই হাসে বিশ্ব, কন্যার সাফল্য মানেই বিশ্বের সাফল্য” এই বছর বাংলাদেশ প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর এমএসসি (গনিত) ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন নোয়াখালী জেলার সুযোগ্য কন্যা সালেহা বেগম আয়মন। আয়মন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর ফলিত গণিত বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

২০০০ সালের ৭ মার্চ নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার সাধুর খিল গ্রামের রাজার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সালেহা বেগম আয়মন। বাবার নাম সোলায়মান ভুলু, মা হোসনেয়ারা। বাবা মায়ের দুই সন্তানের মাঝে আয়মন ছোট। আয়মন এর বড় ভাইয়ের নাম মাহবুবর রহমান নাবিল। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শনিবার, বাংলাদেশ প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর এমএসসি ভর্তি পরীক্ষা (গনিত) অনুষ্ঠিত হয়। আয়মন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন। বিএসসিতে তার ফলাফল ছিল ৩.৯৩। তার এই সাফল্যের আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে পরিবার ও এলাকায়।

সালেহা বেগম আয়মন এর শিক্ষা জীবন শুরু চাটখিল উপজেলার কড়িহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে। ২০১৬ সালে কড়িহাটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে ভর্তি হন চাটখিল মহিলা ডিগ্রি কলেজে। ২০১৮ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল করেন উক্ত কলেজ থেকে। এরপর আয়মন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগে ১৪তম ব্যাচে ভর্তি হন। নোবিপ্রবির ফলিত গণিত বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে প্রথম স্থান অর্জন করেন। আয়মন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় স্নাতক গণিত অলিম্পিয়াড-২০২৩ সেরা ১০ এর একজন ছিলেন। গনিত নিয়েই তার আগামীর স্বপ্ন। আয়মন ভবিষ্যতে গণিত বিষয়ে গবেষণা করতে চান।

গত ৭ অক্টোবর ২০২৪ রোজ সোমবার সালেহা বেগম আয়মন এর বিয়ে হয় ঢাকার উত্তরা নিবাসী ফয়সাল এম রহমান এর সাথে। ফয়সাল একজন সফটওয়্যার ডিজাইনার, তার পৈত্রিক বাড়ি শরিয়তপুর। আয়মনের বাবা বলেন, “সন্তানের এমন সাফল্যে আমরা খুবই আনন্দিত। আয়মন ও তার জীবনসঙ্গীর জন্য সবাই দোয়া করবেন। মেয়ে যেনো তার ভবিষ্যৎ স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে যেতে পারে। ছোট থেকেই আয়মন ভালো ফলাফল করে আসছে। তৃতীয় শ্রেণী থেকে প্রায় সব পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। অনেক অনেক পুরস্কার, সম্মাননা আর সার্টিফিকেট এর অধিকারী আমাদের আয়মন। সময় পেলেই আমরা সন্তানের সাফল্যের স্মৃতি দেখি।”

৮ অক্টোবর কথা হয় আয়মনের সাথে। নিজের লেখাপড়া সম্পর্কে আয়মন বলে, “আমি সব সময় একটা রুটিন মতো লেখাপড়া করতাম। পরীক্ষার আগে বেশি পড়বো বলে পড়া জমিয়ে না রেখে চেষ্টা করতাম আগে আগে সিলেবাস শেষ করতে। যার ফলে পরীক্ষার সময় একটু রিলাক্স থাকতাম, পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা মাথায় আসতো না। পিএসসি ও এইচএসসি তে বোর্ড বৃত্তি পেয়েছি।”

লেখক: সাহিত্যিক প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক।

Share This Article