বাগেরহাট প্রতিনিধি।।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মঠবাড়ী গ্রামের বড় খালের সংযোগের ওপারের কাঠের সাঁকোটি এক বছর আগে ভেঙে গেলেও এখনো সংস্কার হয়নি।
১০ গ্রামের মানুষের পারাপারে দুর্ভোগ এখন চরমে। স্কুল শিক্ষার্থীসহ ৭ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা এ ভাঙা সাঁকো। স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, জনগুরুত্বপূর্ণ এ সংযোগ খালের ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার জিউধরা ইউপির মঠবাড়ী গ্রামের বড় খালের ওপরে সংযোগ সাঁকোটি নদীর খরস্রোতে এক বছর আগে ভেঙে পড়ায় পরবর্তীতে নতুন করে নির্মাণ করা হয়নি ঐ সাঁকোটি। যে কারণে প্রতিনিয়ত মঠবাড়ি, চন্দনতলা, একরামখালী, ঠাকুরনতলা, কালিবাড়ী, জিউধরা, লক্ষীখালী, বটতলা, বরইতলাসহ ১০ গ্রামের ৬-৭ হাজার মানুষের চলাচলে পারাপারে অভাবনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
খালের দুই প্রান্তে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি আলিম মাদরাসার শিশু শিক্ষার্থীসহ শত শত শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে এ সেতু পারাপার হতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন প্রতিদিন।
ঝড় বৃষ্টিতে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে পড়েছে অনেক ছাত্র ছাত্রীদের। অভিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছে।
এ সাঁকো পার হয়ে প্রতিদিন ২-৩ হাজার মানুষ যাচ্ছেন একরামখালী বাজার, মঠবাড়ী সুশীলসমাজ বাজার, ইউনিয়ন পরিষদ, সাইক্লোন শেল্টার, দুটি মসজিদ মোরেলগঞ্জ উপজেলা শহরসহ ও পার্শ্ববর্তী মোংলা উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে।
ভাঙা সাঁকোটি পার হওয়া শিশু শিক্ষার্থী জান্নাতি, আবু জাহের, আব্দুল্লাহ,তামান্নাসহ অনেকেই জানায়, আমাদের স্কুলে যেতে এ ভাঙা সেতু পার হতে হয়। অনেক সময় অভিভাবকরা সঙ্গে আসেন না। বৃষ্টিরদিনে সাঁকো থেকে পড়ে যাওয়ার ভয়ে স্কুলে আসি না। কবে হবে আমার এখানে একটি ব্রিজ।
প্রতিদিন সাঁকোটি পার হওয়া ভুক্তভোগী বৃদ্ধ সুলতান আহমেদ, লাল মিয়া হাওলাদার, সাধনা রানী মন্ডল, ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন হাওলাদার, মারুফ হাওলাদার, আল মামুন হাওলাদার বলেন, সাঁকোটি ভেঙে পড়ার ১ বছরের বেশি সময় পার হলেও মেম্বার, চেয়ারম্যানসহ কারোরই কোনো মাথা ব্যথা নেই। দিনের পর দিন আমরাইতো দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। এ ভাঙা সাঁকোটি পার হতে গিয়ে পড়ে গিয়ে অনেকেই দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছেন। এ জনগুরুত্বপূর্ণ সাঁকোটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারসহ একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান তারা।
ইউপি সদস্য মো. হারুন-অর রশিদ বলেন, ৫ বছর আগে এ সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দে সংস্কার করা হয়েছিলো। গত বছর পুনরায় ভেঙে পড়ায় নতুন করে মেরামত করা হয়নি। এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদে আবেদনও করা রয়েছে। পরবর্তীতে আর কোনো ব্যবস্থা হয়নি।
সাঁকোটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা হলে স্কুল শিক্ষার্থীসহ জন চলাচলের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, মঠবাড়ি গ্রামের সংযোগ খালের গুরুত্বপূর্ণ সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে অবগত আছি। স্থানীয়দের আবেদনের প্রেক্ষিতে এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ হলে কাজটি শুরু হবে।