রাজধানীর মিরপুর শিয়ালবাড়ির কেমিক্যাল গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ১২ দিন পর আরও এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কেমিক্যাল গোডাউনের সামনের একটি পোশাক কারখানার ভেতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, নিহত নারীর নাম মার্জিয়া সুলতানা (১৪)। তিনি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার গোল্লা রাজাপুর গ্রামের মো. সুলতান মিয়ার মেয়ে। পরিবারের সঙ্গে শিয়ালবাড়ির ১২ নম্বর রোডের মজিবুরের বস্তিতে থাকতেন।
মার্জিয়ার বাবা সুলতান মিয়া জানান, তার মেয়ে স্বামী জয় মিয়ার সঙ্গে একই পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। আগুন লাগার ঘটনায় জয়ের মরদেহ উদ্ধার হলেও নিখোঁজ ছিলেন মার্জিয়া।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস ছিল মার্জিয়ার লাশ ওই ভবনেই আছে। বারবার খোঁজার চেষ্টা করেও পারিনি। পরে রবিবার বিকালে পুলিশ নিয়ে ভবনে খুঁজতে যাই। এক পর্যায়ে তৃতীয় তলায় মেশিনের নিচে চাপা পড়া অবস্থায় মরদেহটি পাই। পরনের বোরখা দেখে বুঝতে পারি—এটা আমার মেয়ের লাশ।’
উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর রাতে রূপনগর থানাধীন বিইউবিটি ক্যাম্পাসের পাশে শিয়ালবাড়ি শিল্প এলাকায় সরকার কেমিক্যাল গোডাউন ও আলম কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। যা ছড়িয়ে পরে ওই ভবনের সামনে থাকা চারতলা একটি পোশাক কারখানায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ওই ভবনের ভেতর থেকে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের পর তা স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই মার্জিয়া নিখোঁজ ছিলেন।
রবিবার সন্ধ্যায় গার্মেন্টস ভবনের তৃতীয় তলায় মেশিনের নিচে পচনধরা অবস্থায় মরদেহটি পাওয়া যায়। প্রচণ্ড দুর্গন্ধের কারণে লাশটি উদ্ধার করতে সময় লাগে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রূপনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোরশেদ আলম বলেন, ‘রবিবার সন্ধ্যার দিকে পোশাক কারখানার ভেতর থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে। লাশটি ছেলের না মেয়ের, তা প্রথমে বোঝা যায়নি। ঘটনার পর থেকে একটি পরিবার তাদের মেয়ের নিখোঁজ থাকার বিষয়টি জানিয়েছিল। পরে তারা এসে লাশ শনাক্ত করে।’
মার্জিয়ার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।