মিশরে সমুদ্রগর্ভে চাপা প্রাচীন শহরের সন্ধান

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

মিশরে সমুদ্রগর্ভে চাপা প্রাচীন শহরের সন্ধান।আফছারুল হোসাইন, কায়রো থেকেমিশরের বন্দর নগরী আলেক্সান্ডারীয়ায় ভূমধ্যসাগরে এক প্রাচীন শহরের সন্ধান মিলেছে। আবু-কির উপসাগরের উপকূলে সমুদ্রের গভীরে ডুবে থাকা এই শহরটি প্রাচীন কানোপাস নগরীর অংশ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের দাবি, শহরটি প্রায় দুই হাজার বছরেরও বেশি পুরোনো এবং এটি একসময় বাণিজ্য ও ধর্মীয় সংস্কৃতির কর্মকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। আবিষ্কৃত শহরের ধ্বংসাবশেষে প্রাচীন মন্দির, নোঙর কেন্দ্র ও অসংখ্য নিদর্শন পাওয়া গেছে।

দেশটির প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পানির নিচ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজ পরিবারের ভাস্কর্য চুনাপাথরের তৈরি ভবনের ধ্বংসাবশেষ এবং পুরোনো ডকইয়ার্ডের অংশ বিশেষ। যা, গ্রিক ও মিশরীয় সভ্যতার মিশ্রণকে স্পষ্ট করে।  প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, টলেমাইক রাজাদের শাসনামলে এই শহরটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। পরবর্তীতে রোমান সাম্রাজ্যের সময়ে এর আরও সমৃদ্ধি ঘটে। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন ভূমিকম্প এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ধীরে ধীরে এই শহরটি তলিয়ে যায়। একইভাবে পাশে থাকা বিখ্যাত বন্দরনগরী হেরাক্লিয়নও হাড়িয়ে যায়।

গবেষকরা বলছেন, এ ধরনের আবিষ্কার শুধু ইতিহাস প্রেমীদের নয়, বরং পর্যটন শিল্পের জন্যও এক নতুন আকর্ষণ হয়ে উঠবে। আগামী দিন গুলোতে শহরটির আরও নিদর্শন উদ্ধার করে প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

মিশরের পর্যটন ও পুরাকীর্তি বিষয়ক মন্ত্রী শেরিফ ফাতহি বলেন, সমুদ্রের তলদেশে আরও অনেক স্থাপনা রয়েছে, যা এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তিনি সেগুলোকে মিশরের ডুবে যাওয়া ঐতিহ্যের অমূল্য সম্পদ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। মানব সভ্যতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র আলেক্সান্ডারিয়া ও বর্তমানে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জাতিসংঘের এক গবেষণা অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তনের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে শহরটির এক-তৃতীয়াংশ হয় ডুবে যাবে, নয়তো বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।



Share This Article