
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাকে (আইওএম) ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় আইওএম।
কোরিয়ার এই উদার অনুদান ৪ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান করবে, যারা সংকটের ৮ বছর ধরে অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পে বসবাস করছে।
এই তহবিল আইওএমকে সাতটি ক্যাম্পজুড়ে জীবনরক্ষাকারী পানি, স্যানিটেশন এবং হাইজিন (ওয়াশ) পরিষেবা সরবরাহ করতে সক্ষম করবে এবং ১৭টি ক্যাম্পে ৪১ হাজার ৫০০ শরণার্থী পরিবারকে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) নিয়মিত বিতরণের মাধ্যমে শরণার্থীদের জন্য পরিষ্কার রান্নার জ্বালানির টেকসই সরবরাহ নিশ্চিত করবে।
আইওএম-কে কোরিয়ার সহায়তা ক্যাম্পগুলোতে পানি এবং স্যানিটেশন সুবিধার নির্ভরযোগ্যতা এবং সুরক্ষা উন্নত করবে, স্বাস্থ্যবিধি প্রচার বাড়িয়ে তুলবে এবং নারী, মেয়ে, বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ দুর্বল গোষ্ঠীগুলো নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ওয়াশ পরিষেবাগুলোতে অ্যাক্সেস নিশ্চিত করবে।
প্রকল্পটি রোহিঙ্গা পরিবারের রান্নার জ্বালানির চাহিদাও পূরণ করবে। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য এলপিজি বিতরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা পরিষ্কার রান্নার জ্বালানি সরবরাহ করে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টিতে অবদান রাখে, বন উজাড় হ্রাস, স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস এবং কাঠ সংগ্রহের সময় লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারী ও মেয়েসহ ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীগুলোর জন্য সুরক্ষা জোরদার করে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বলেন, ‘এ বছরও কোরিয়া বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। আমাদের সহায়তা ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল এবং চালের অতিরিক্ত বড় চালানসহ ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা এবং তাদের চাহিদা মোকাবিলায় কোরিয়ার অবিচল উৎসর্গকে প্রতিফলিত করে।’
এ ছাড়া কোরিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক অংশীদার ও স্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য টেকসই সমাধানের প্রচার করছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয়দাতা জনগোষ্ঠীর প্রতি কোরিয়ার অব্যাহত সংহতির প্রশংসা করে আইওএম বাংলাদেশের চিফ অব মিশন ল্যান্স বোনিউ বলেন, ‘এই অবদান তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা, মর্যাদা ও স্থিতিস্থাপকতাকে সরাসরি সমর্থন করে।’
তিনি বলেন, ‘কোরিয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় দীর্ঘদিনের অংশীদার, সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবায় সহায়তা করছে। কক্সবাজারে মানবিক কল্যাণ ও স্থিতিশীলতা প্রচারে এর অব্যাহত সম্পৃক্ততার প্রতিফলন এই সর্বশেষ প্রতিশ্রুতি।’