লিচু চাষে সফল হচ্ছেন নাজিরপুরের কৃষক

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় লিচু চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গত দুই দশকে বসতবাড়ি থেকে ক্ষেতের জমি-বেশিরভাগ কৃষক নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন লিচুর ওপর। এদিকে মাটি উর্বর হওয়ায় ফলনও খুব ভালো। বিশেষ করে উপজেলার তারাবুনিয়া ও গিলাতলা গ্রামের লিচুর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশ জুড়ে। ফসলি জমিতে ধানের পরিবর্তে লিচু আবাদ করছেন কৃষকেরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানির লক্ষ্যে আবাদ করা এসব লিচুর গুণগত মানও অনেক ভালো।

নাজিরপুর উপজেলার তারাবুনিয়া গ্রামের দুই সহোদর হংসপতি মিস্ত্রি ও হিমাংশু মিস্ত্রি ২০০৭ সালে তাদের পাঁচ একর জমিতে চায়না থ্রি ও মোজাফফরপুরী জাতের লিচু বাগান করেন। প্রথম বছরই সাফল্য পান তারা । তাদের দেখে এলাকার অনেক কৃষক ধানের আবাদ বাদ দিয়ে লিচু বাগান করেছেন।

সম্প্রতি দেখা গেছে, এখন শুধু তারাবুনিয়া নয়, উপজেলার অনেক গ্রাম এখন পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে লিচুর ওপর। লিচু চাষে অবশিষ্ট থাকছেনা এক খন্ড জমিও। নাজিরপুরে প্রায় অর্ধশত কৃষক আবাদ করেছেন চায়না থ্রি ও মোজাফফর পুরী জাতের লিচু।

লিচু চাষে সফল হংসপতি মিস্ত্রি বলেন, বছর বছর লিচু ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবার বছর লিচুর ফলন খুবই ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকলে না থাকায় লিচু অনেকটা ঝরে পড়েছে। তা ছাড়া অনা বৃষ্টির কারনে আকারে অনেকটা ছোট হয়েছে।

স্থানীয় লিচু চাষীরা জানান, রাসয়নিক মুক্ত এবং জৈব পদ্ধতিতে লিচু চাষ করায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ও জেলার ব্যবসায়ীরা আসেন লিচু কিনতে। তবে তীব্র তাপপ্রবাহের কারনে লিচু তেমন বড় হয়নি। বৃষ্ঠি না থাকার কারণে ফল ঝড়ে যাচ্ছে এবং ফুল কম ফুটছে। ফলের আকার ছোট হয়েছে।

এখান থেকে কিনে ভালো দামে বিভিন্ন এলাকায় লিচু বিক্রি করছেন পাইকাররা। নাজিরপুরের মাটি ও আবহাওয়া লিচু চাষের উপোযোগী হওয়ায় আগামীতে এ অঞ্চলে লিচু বাগান আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

বুধবার (১৫ মে) লিচু বাগানে গিয়ে দেখা যায়, লিচু আহরণ, বাছাই এবং প্যাকেট করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় লিচু ব্যবসায়ী দুলাল হাওলাদার বলেন, এ বছর লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। এখান থেকে লিচু কিনে বেশি লাভ পাওয়া যায়। কারন যাতায়েত খরচ কম লাগে।

পিরোজপুর জেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি সময়ে চাষিদের মাঝে লিচু চাষের প্রবনতা দেখা গেছে। এই মাঠিতে লিচু সম্প্রসারন করা যায় সেই বিষয়ে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি । চিন্তা ভাবনা রয়েছে এটির বৃদ্ধি করার। জেলার তিন উপজেলায় ৫৫ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ করা হয়েছে । আমাদের পক্ষ থেকে সর্বদা লিচু চাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, টানা তাপপ্রবাহে বেশ কিছু সংখ্যক লিচুর গুটি ঝরে পড়েছে, বড় অবস্থায়ও লিচু ঝরে পড়েছে। অনা বৃষ্টির কারণে লিচু আকারও ছোট।

Share This Article