শ্রম খাতে সংস্কারে একমত রাজনৈতিক দল, বিদেশি বিনিয়োগে গুরুত্বারোপ ড. ইউনূসের

বাংলাদেশ চিত্র ডেস্ক

বাংলাদেশের শ্রম আইন ও শ্রমিক অধিকার নিয়ে দেশে চলমান সংস্কার প্রচেষ্টা এবং এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে জাতিসংঘে এক উচ্চপর্যায়ের নৈশভোজে আলোচনা করেছেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, জাতিসংঘ কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা। এই অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক নেতারা বাংলাদেশের শ্রম সংস্কার ও পোশাকশিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধির ব্যাপারে নিজেদের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের উদ্যোগে আয়োজিত এই নৈশভোজে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশে বৃহৎ পরিসরে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে শ্রম সংস্কারের গুরুত্ব অপরিসীম।’ তিনি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগেই আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশন অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনায় আইএলওর মহাপরিচালকসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিরা অংশ নেন। আলোচনায় তাঁরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশের ভাবমূর্তির ওপর শ্রম সংস্কারের ব্যাপক প্রভাব নিয়ে কথা বলেন।

বাংলাদেশের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারা তাঁদের বক্তব্যে দেশের পোশাকশিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং শ্রম খাতে চলমান সংস্কারের প্রতি সমর্থন জানান।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘পোশাক শিল্পকে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতের যেকোনো সরকারকে এর প্রবৃদ্ধি এবং টেকসইতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’ তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্রম সংস্কার ও আইএলও-এর প্রতিশ্রুত উদ্যোগের প্রশংসা করেন।

জামায়াত ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জামায়াতের বহু নেতাকর্মীর পোশাক শিল্পে সরাসরি অভিজ্ঞতা রয়েছে। যা এই খাতকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে সহায়ক করবে।’ তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কর্মসূচিকে সমর্থন করেন এবং নির্বাচিত হলে তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বর্তমান শ্রম উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এগুলো শুধু অব্যাহত রাখাই নয়, ভবিষ্যৎ প্রশাসনের অধীনে আরও সম্প্রসারিত হওয়া উচিত।’

এনসিপির সিনিয়র নেত্রী ড. তাসনিম জারা রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা স্মরণ করে বলেন, এটি তাঁর রাজনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তিনি উল্লেখ করেন, ‘একজন মেডিকেল ছাত্রী হিসেবে আহতদের সেবা দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাকে অনিরাপদ শ্রম অনুশীলনের মানবিক মূল্য উপলব্ধি করিয়েছিল।’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস অর্থবহ এবং স্থায়ী সংস্কার বাস্তবায়নে সরকারের দৃঢ় সংকল্পের কথা আবারও জোর দিয়ে বলেন।

Share This Article