কালিগঞ্জে জামায়াতের মাসিক রোকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত
স্টাফ রিপোর্টার
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত বিজয় টেকসই ও অর্থবহ করতে ১৬ বছর পর প্রকাশ্যে নিজ কার্যালয়ে রুকন সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা শাখা। শনিবার (১২ অক্টোবর) সকাল থেকে জামায়াতে ইসলামীর কালিগঞ্জ উপজেলা কার্যলয়ে এই রোকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামী কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার আমির মাওলানা আব্দুল ওয়াহাব ছিদ্দিকির সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুর রউফের সঞ্চালনায় রোকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন খুলনা মহানগর জামায়াতের শুরা সদস্য জনাব জাহিদুর রহমান নাঈম।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালিগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির জি এম আবদুল গফফার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতের উপজেলা নায়েবে আমির মাওলানা লিয়াকাত আলী, সহকারী সেক্রেটারি মাওঃ আনোয়ারুল ইসলাম, আবু ইসলাম ও অধ্যাপক মোশাররফ হোসাইন, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য , মাওলানা আব্দুল মোমেন, মাষ্টার ইউসুফ আলী, হোসাইন, আফতাব উদ্দিন, মাওলানা আব্দুল হামিদ ডঃ মিজানুর রহমান প্রমুখ। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন -আওয়ামী- বাকশালীরা মানুষের মর্যাদা দেয়নি, বরং আমাদের ক্ষেত্রে সব সময় শূন্য সহনশীলতা দেখানো হয়েছে। আমাদের ওপর অঘোষিতভাবে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ আগে থেকেই ছিল। এমন কোনো জুলুম-নির্যাতন নেই, যা আমাদের ওপর চালানো হয়নি। প্রথমসারির সব নেতাকে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম-খুন করা হয়েছে; কিন্তু তারা জামায়াতের অগ্রযাত্রা কোনোভাবেই রোধ করতে পারেনি। তিনি বলেন, শত শাহাদাত ও জুলুম- নির্যাতনের পথ ধরেই জামায়াত কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে সফলভাবেই অগ্রসর হচ্ছে। আগামী দিনে মানবতার মুক্তির জন্য বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত ইনশাআল্লাহ।
পূজায় নারকেল-গুড়ের বিক্রি তুঙ্গে
স্টাফ রিপোর্টারঃ
পূজার আবহ যখন সবখানেই ছড়িয়ে পড়ছে, তখনই নারকেল ও গুড়ের চাহিদাও আকাশ ছুঁয়েছে। মিষ্টির ঘ্রাণে ভরা পূজার প্রসাদ ও উপাচার তৈরিতে এই দুটি উপকরণ যেন হয়ে উঠেছে অপরিহার্য। বাজারের প্রতিটি কোণে নারকেল আর গুড়ের বিক্রি বাড়ছে, আর এ নিয়ে খুশির হাসি ব্যবসায়ীদের মুখে।
নারকেল নাড়ু আর গুড়ের পিঠা ছাড়া পূজার রসনা তৃপ্তি অসম্পূর্ণ। এসব মিষ্টি তৈরিতে নারকেল ও গুড়ের ভূমিকা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, ব্যবসায়ীরা এসময় দ্বিগুণ লাভে পণ্য বিক্রি করেন। তাদের মতে, পূজার দিনগুলো যেন সারা বছরের অপেক্ষার প্রাপ্তি।
নারকেল ও গুড়ের দোকানে পূজার শুরু থেকেই ক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পূজার সময়ে নারকেল ও গুড়ের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে তাদের বিক্রিও ভালো হচ্ছে। ফলে পণ্যের দামও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশ চড়া।
প্রতি বছর পূজার সময় প্রায় ২ থেকে ৪ লাখ টাকার নারকেল বিক্রি হয়, তবে এ বছর দাম আরও বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এবারে প্রতিটি নারকেল ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি। পূজার জন্য নারকেলের চাহিদা বেশি হওয়ায় দাম কিছুটা বাড়তি।
পূজার সময় নারকেলের পাশাপাশি গুড়ের চাহিদাও বেড়ে যায়। বাজারের দোকানগুলোতে কুষ্টিয়া, পাবনা এবং নাটোরসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গুড় আসে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, এবারে গুড়ের দামও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। যেখানে গত বছর প্রতি কেজি গুড় ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেখানে এবারে তা ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় পৌঁছেছে। পূজার জন্য গুড় একটি অপরিহার্য উপকরণ হওয়ায় এই সময়ে এর দাম বৃদ্ধি অপ্রত্যাশিত নয়।
নারিকেল ও গুড় একসাথেই বিক্রি করছেন ব্যবসায়ী আবুল কালাম। তিনি বলেন, পূজার সময়ে নারকেল ও গুড়ের বাজারে যে চাহিদা থাকে, তা বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় বহুগুণ বেশি। পূজার পর চাহিদা কিছুটা কমলেও, এই সময়ে হওয়া বাণিজ্যই তাদের সারা বছরের আয়ের একটি বড় অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
নারকেল ব্যবসায়ী মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, পূজার সময় আমাদের ব্যবসা বেশ জমজমাট থাকে। ক্রেতারা এই সময়ে নারকেল কিনে নিয়ে যান, যার ফলে বিক্রিও বাড়ে। তবে এ বছর নারকেলের দাম কিছুটা বেশি। চাহিদা বেশি থাকায় দামও বাড়ছে, কিন্তু আমাদের পণ্য বিক্রি কমেনি। বরং প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ পিস নারকেল বিক্রি করছি। পূজার সময়টা আমাদের জন্য সেরা সময়গুলোর একটি, কারণ সারা বছরের আয়ের একটি বড় অংশ আমরা এই সময়েই করতে পারি।
গুড় ব্যবসায়ী মোঃ হাসান আলী বলেন, পূজার সময় গুড়ের চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে যায়। প্রতিবারই এই সময়ে গুড়ের বাজার বেশ ভালো থাকে, তবে এবারের মতো দাম এত বাড়তে আগে দেখিনি। গত বছর যেখানে প্রতি কেজি গুড় ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করেছি, সেখানে এ বছর তা ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও দাম বেশি, ক্রেতাদের সংখ্যা তবু কমছে না। পূজার প্রসাদ তৈরিতে গুড়ের ব্যবহার বাধ্যতামূলক, তাই সবাই আগেভাগেই গুড় কিনে রাখেন।
ক্রেতারা বলছেন, পূজার সময় নারকেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের জন্য কিছুটা কষ্টকর হলেও, পূজার জন্য নারকেল এবং গুড় কেনা বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়ায়। অনেকে আবার এই মূল্যবৃদ্ধির সাথে মানিয়ে নিয়েছেন। তারা বলেন, পূজার সময় এসব জিনিসের চাহিদা বাড়ে, তাই দামও স্বাভাবিক ভাবেই বাড়বে।
ক্রেতা অমিত বসাক জানান, প্রতি বছরই পূজার আগে নারকেলের দাম বাড়ে, তবে এবারের দামটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। তবুও পূজার প্রসাদ তৈরির জন্য এই উপকরণগুলো কেনা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরেক ক্রেতা মধুমিতা দেবী বলেন, দাম বেশি হলেও পূজার আনন্দের জন্য নারকেল-গুড় কিনতেই হয়। পূজায় নারকেল না থাকলে যেন পূজার আনন্দটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
চালনায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
খবর বিজ্ঞপ্তি
১২ সেপ্টেম্বর ২৪ইং (শনিবার) বিকাল ৩ টায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ চালনা পৌরসভা শাখার নিয়মিত মাসিক সভা চালনা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। পৌর সভাপতি মুহাম্মাদ ইব্রাহিম খলিলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুরসালিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চালনা পৌরসভা সভাপতি আলহাজ্ব আবু দাউদ,বিশেষ অতিথি ছিলেন দাকোপ উপজেলা ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর সভাপতি মুহাম্মাদ তরিকুল ইসলাম।সভায় সাংগঠনিক কার্যক্রম বেগবান ও পৌরসভার সকল ওয়ার্ড কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধান্ত গহীত হয়। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পৌর মুখপাত্র ও সহ সভাপতি মুহাম্মাদ লোকমান ফকির, সাংগঠনিক সম্পাদক আসিফ আদনান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক আহসান হাবিব, দাওয়াহ সম্পাদক আবির কাজী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সিয়াম আহমাদ, অর্থ ও কল্যান সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত, মাদ্রাসা সম্পাদক আব্দুর রহমান, স্কুল ও কলেজ সম্পাদক মাহমুদুল্লাহ, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক হিজবুল্লাহসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই: অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান
খবর বিজ্ঞপ্তি
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন বলেন স্বাধীনতার পর থেকে যারা এদেশে ক্ষমতায় এসেছে তারাই মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পরিপুর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। মানুষ ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আজ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন এই দেশে যারা অতীতে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছিল তাদেরকে মানুষ বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। দেশের জনগণ এখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় নুতন মুখ চায়। জনগণের এই প্রত্যাশা পূরণে ইসলামী আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। তিনি সমাবেশে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে পাড়ায় মহল্লায় ইসলামী আন্দোলনের দুর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি গতকাল ১২অক্টোবর বিকাল তিন ঘটিকায় পাইকগাছা পৌরসভা চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পাইকগাছা উপজেলা শাখার উদ্যোগে শাখার মুফতি আহমদ আলীর সভাপতিত্বে এবং মাওলানা হুমায়ুন কবিরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন গণহত্যায় জড়িতদের সুষ্ঠু বিচারের দাবী এবং হতাহত পরিবার কে ক্ষতিপূরণ ব্যবস্হা করা সহ সকল দূর্নীতিবাজ ও অর্থ পাচারকারীদের বিচার ও পাচারকৃত অর্থ ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা এবং নির্বাচন কমিশনের পূর্ণগঠন করাসহ পীর সাহেব চরমোনাই ঘোষিত ৭ দফা প্রস্তাবনা দাবিতে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এর পাইকগাছা উপজেলা শাখা আয়োজিত বিশাল গণসমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তৃতা করেন জেলা শাখা সেক্রেটারি হাফেজ মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ গালিব, সমাবেশে আরো বক্তব্য ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক এম এহাসিব গোলদার, গদাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গাজী জুনায়েদুর রহমান,জেলা জয়েন্ট সেক্রেটারী মোহাঃ রেজাউল করিম,ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সুরা সদস্য মুঃ আবু রায়হান, মাওলানা মুহাঃ মাহদী হাসান ইসলামী আন্দোলন খুলনা জেলা দফতর সম্পাক শেখ মোঃ নাজমুল হুদা, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের শুরা সদস্য মোঃ রেস্তাদুল ইসলাম পাইকগাছা পৌরসভা শাখা সভাপতি মাওলানা আসাদুল্লাহ তুহিন প্রমুখ।
কেশবপুরে পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব নাসিমুল গনি
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপুর আমন্ত্রনে কেশবপুরের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে আসেন রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। শুক্রবার বিকেলে কেশবপুর সদর ইউনিয়নের মাগুরাডাঙ্গা ত্রিপল্লী সার্বজনীন মন্দির কমিটির উদ্যোগে সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আব্দুল মজিদ, সিনিয়র সাংবাদিক হারুন জামিল, কেশবপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আলা প্রমুখ। এর পূর্বে প্রধান অতিথি ভেরচি নিমতলা মহাশশ্মান মন্ডপ ও চুকনগর বাজারের সর্ব মঙ্গলা মাতৃ মন্দির তীর্থ কমপ্লেক্স পরিদর্শ করেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর কবির মিন্টু, সেচ্ছাসবকদল নেতা আলমগীর হোসেন ,উপজেলা ছাত্রদল নেতা মাসুম বিল্লাল প্রমুখ ।
আশাশুনির পল্লী থেকে মধ্য বয়সী গৃহবধুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার
জ্বলেমিন হোসেন,আশাশুনি
আশাশুনির পল্লী থেকে মধ্য বয়সী এক গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। হত্যার শিকার গৃহবধু কমলা খাতুন (৫৫) উপজেলা দক্ষিণ দুরগাহপুর গ্রামের মোবারক আলী গাজীর দ্বিতীয় স্ত্রী। পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে এবং মৃত্যুর রহস্য উৎঘাটনে নিহতের স্বামী সহ পরিবারের ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
পুলিশ, পারিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, বৃহস্পতিবার রাতে মোবারক গাজী ও পরিবারের লোকজন খাওয়া দাওয়া শেষে স্ব স্ব ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোর রাতে ফজরের আজান শেষে মোবারক গাজী অন্য ঘরে ঘুমান তার স্ত্রীকে নামাজ আদায় করতে ডেকে দিয়ে পাশের মৎস্য ঘেরে চলে যান। পরিবারের অন্যরা তখনো ঘুমিয়ে ছিল। তিনি মৎস্য ঘের থেকে ৬.৫০ মি. দিকে বাড়িতে ফিরে স্ত্রীকে ঘরে না পেয়ে খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে বসত বাড়ির নিকটে বিচালী গাদার পাশে স্ত্রীর গলাকাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করলে হত্যাকান্ডের ঘটনা জানাজানি হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন। পারিবারিক কলহের কারণে তাকে জবাই করে হত্যা করা হতে পারে বলে এলাকায় আলোচনা হতে শোনা গেছে।
গ্রাম পুলিশ রবিউল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে থানা পুলিশে মুঠোফোনে খবর দিলে ওসি নজরুল ইসলাম সহ পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌছে বেলা ১১টার দিকে নিহত কমলা খাতুনের লাশ উদ্ধার করেন। নিহতের স্বামী মোবারক গাজী জানান, প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিনি কমলা বেগমকে বিয়ে করেন। প্রথম পক্ষের পুত্র খানজাহান আলী জীবিকার তাড়নায় বাইরে কাজ করতে গেছে এবং দ্বিতীয় পক্ষে অলিউর ও ফয়জুল নামে দুই ছেলে আছে। ৩ ছেলেকেই বিয়ে দেয়া হয়েছে। পারিবারিক কলহের কারনে কমলার সঙ্গে তিনি এক ঘরে ঘুমান না। শুক্রবার ফজরের আজান শেষে তিনি কমলাকে ডেকে দিয়ে মাছের ঘেরে চলে যান। সকাল ৬.৫০ টার দিকে তিনি বাড়ি ফিরে কমলাকে বাড়িতে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুজির একপর্যায়ে পাশের বিচালী গাদার কাছে কমলার গলাকাটা লাশ দেখতে পান।
আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জ মু. নজরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থান পরিদর্শন, সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ছোট ছুরি ও জুতা উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থান থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন আছে। নিহতের কারন উৎঘাটনে স্বামী, ২ পুত্র ও ৩ পুত্রবধূদের জিজ্ঞাসাবাদে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
খুলনায় সীরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল
নবী (সা.) এর দয়া, ক্ষমা, ও সহিষ্ণুতা
আমাদের জীবনে অনুসরণ করতে হবে
খবর বিজ্ঞপ্তি
বাংলাদেশ ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, নবী (সা.) এর জীবনের প্রতিটি ঘটনা আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। তাঁর দয়া, ক্ষমা, ও সহিষ্ণুতা আমাদের জীবনে অনুসরণ করতে হবে। এসব ভালো গুণাবলী আমাদের মধ্যে থাকা উচিত।” তিন বলেন, “নবী করীম (সা.) ছিলেন আল্লাহর প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও অবিচল আস্থার অধিকারী। তাঁর জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালন করেছেন এবং সকল কাজে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করেছেন।” তিনি বলেন, বলেন, আজকের যুগে, আমরা যদি নবী (সা.) এর আদর্শ মেনে চলি, তাহলে আমরা সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করতে পারব ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ও আইবিডব্লিউএফ খুলনা মহানগরী ও বড় বাজার অঞ্চলের উদ্যোগে নগরীর কদম তলা মোড়স্থ ফারাজী ইনস্টিটিউটে সিরাতুন্নবী (সা.) মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
ব্যবসায়ীক নেতা মো. সালাউদ্দীন খান এর সভাপতিত্বে ও শ্রমিক নেতা মাওলানা মেহেদী হাসান কাওছারীর পরিচালনায় মাহফিলে প্রধান আলোচক ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য ও ওলামা বিভাগীয় সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা আবু বক্কর সিদ্দিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন খুলনা মহানগরী সভপতি মু. আজিজুল ইসলাম ফারাজী। বক্তব্য দেন খুলনা মহানগরী সভাপতি খান মো. মোশারফ হোসেন, সহ- সভাপতি হুমায়ুন কবির, খুলনা সদর থানা আমীর মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খুলনা মহানগরী সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহফুজুর রহমান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা আল হাফিজ সোহাগ, আসিফ ইকবাল মাসুম, মুরাদ সোহাগ, শহিদুল ইসলাম, আলী হায়দার, শাহজাহান, মাসুম, কাউসার, মিজানুর রহমান, বুলবুল, শামীম, ইয়াসিন, মুজাহিদুল ইসলাম বিপ্লব, কামরুল ইসলাম, পরিবহন নেতা আব্দুল বারেক, আসলাম শিকদার, কামরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী নেতা মইনুল ইসলাম, মাসুদ রানা, সাদ্দাম হোসেন, মো. আব্দুল হক, একলাসুর রহমান, মোল্লা আবুল কালাম, আনোয়ার হোসেন, বেলায়েত হোসেন, সমীর, আশিকুজ্জামান টিপু, রবিউল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা ইসমাইল প্রমুখ।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, নবীজি (সা.) সকল মানুষের সাথে সদাচরণ করতেন। তিনি ছিলেন দয়ালু, ক্ষমাশীল এবং সহানুভূতিশীল। তিনি সকলের সাথে ন্যায়বিচার করতেন এবং কারো প্রতি অবিচার করতেন না।
তিনি বলেন, নবী করীম (সা.) সর্বদা জ্ঞান অর্জনের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেছেন, “জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর ফরজ।” তিনি আরও বলেন, নবী করীম (সা.) এর জীবন আমাদের জন্য আদর্শ। আমরা যদি তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করি এবং তাঁর আদর্শ অনুসরণ করি, তাহলে আমরা এই পৃথিবীতে একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবো এবং পরকালে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।
খুলনায় জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয় উদ্বোধন
খবর বিজ্ঞপ্তি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও খুলনা মহানগরী সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার জাতির কল্যাণে যত ভালো কাজের উদ্যোগ নেবে সে সব কাজের সাথে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে দূর্নীতি ঢুকে গেছে। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ পুনরায় গত ৫ আগস্ট স্বাধীন হয়েছে। তাই দেশের মানুষের অধিকার পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এ সময় তিনি বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশংসা করেন এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যারা শাহাদাৎ বরণ করেন তাঁদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। আর যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁদের সুস্থতা কামনা এবং তাঁদের পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের বিভিন্ন নির্যাতন, দমন নিপীড়নের কারণে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে জামায়াতে ইসলামীর প্রকাশ্যে রাজনীতি এক প্রকার বন্ধই ছিল। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামায়াতে ইসলামী রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যমে দেশ সেবার লক্ষ্য নিয়ে সারাদেশে জামায়াতে ইসলামী কাজ করে যাচ্ছে। সেই উদ্দেশ্যকে গতিশীল করতে খুলনা মহানগরীর খালিশপুর থানাধীন ৯ নং ওয়ার্ডের শেখপাড়াস্থ কাউন্সিলরের কার্যালয়ের সামনে ৯ নং ওয়ার্ড জামায়াতের ইসলামীর অফিস উদ্বোধনকালে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন।
৯ নং ওয়ার্ড আমীর কাজী বায়জিদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খালিশপুর থানা আমীর মো. ইকবাল হোসেন, জামায়াত নেতা মুহাম্মদ আব্দুল আলীম ও থানা সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল মামুন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুর রহিম, কাজী জিয়াউল ইসলাম, কাজী অহিদুল ইসলাম, বাদশা মোল্লা, কাজী নুরুল আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শাহাদাৎবরণকারীদের মাগফিরাত এবং দেশের সার্বিক মঙ্গল কামনা করে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।
দিঘলিয়ায় ইউনিয়ন পর্যায়ে পূজা মন্ডপ পরিদর্শন ও আর্থিক সহযোগিতায় স্ব স্ব ইউনিয়ন বিএনপি
দিঘলিয়া প্রতিনিধি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কমিটি তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদ আজিজুল বারী হেলাল খুলনা-৪ আসনের প্রার্থীর নির্দেশনায় দিঘলিয়া উপজেলায় বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন ও আর্থিক সহযোগিতা করেন। ইউনিয়ন বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন। এ সময় মন্দির কর্তৃপক্ষের সাথে নেতৃবৃন্দ তাদের নিরাপত্তা ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করেন। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব সেনহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রকিব মল্লিক, অধ্যাপক মনিরুল হক বাবুল, যুগ্ন আহবায়ক আবেদ মোল্লা, মোল্লা নাজমুল হক, মোল্লা মনিরুজ্জামান, ফারুক হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, এবিএম ওহিদুজ্জামান রানা, পারভেজ সাজ্জাদ বাবলা, ডাক্তার হাফিজুর রহমান, শেখ মোসলেম উদ্দিন, সাজ্জাদ মোল্লা, খান মোহাম্মদ, জাসেদ কবির জুয়েল, আব্দুল্লাহ আল মামুন নিপু, শেখ আসাদুজ্জামান আসাদ, মোল্লা নাজমুল হক, মোল্লা মনিরুজ্জামান, সোহেল পারভেজ কাকন, আরিফুল ইসলাম হাসান, আব্দুল কাদের জনি, মোহাম্মদ আলী টুটুল, ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী মিন্টু, কামরুজ্জামান মিঠু, সাংবাদিক এস এম মেহেদী হাসান, শেখ সাজ্জাদ হোসেন, রাজন, আমির হোসেন, মোল্লা ইমন হোসেন, বারাকপুর ইউনিয়নের শেখ গোলাম, কবির হোসেন, সাবেক ইউপি সদস্য মিন্টু ফকির, বর্তমান ইউপি সদস্য মোহাম্মদ করিম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কুদরতি ইলাহী স্পিকার, জিনিয়াস, পলাশ, আলাউদ্দিন গাজী, ফারুক, আবুল শেখ, মুকুল মল্লিক, ইজাই শেখ, নাজিম শেখ, আব্দুস সালাম, আবু হানিফ জাসু, সেলিম ওমরা খান, মনোয়ার হোসেন ফোন্টু, শেখ লিটন প্রমূখ।
যৌথ বাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্র, মাদক, চোরাই মোবাইল, নগদ অর্থসহ ৪ মাদক কারবারি আটক
পিরোজপুর প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ও পুলিশের যৌথ অভিযানে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় দেশীয় অস্ত্র, মাদক, চোরাই মোবাইল ফোন ও নগদ অর্থসহ ৪ মাদক কারবারিকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার ভোর রাতে উপজেলার ধানীসাফা ইউনিয়নের বাদুরগাছা গ্রাম থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
এ সময় আটককৃতদের কাছ থেকে ৪ টি রামদা, ১টি চাপাতি, ১টি চাইনিজ কুড়াল, ১৩৫ পিচ ইয়াবা বড়ি, ২০ গ্রাম গাঁজা, নগদ ১৫ হাজার ৯০০ টাকা, ৮ টি চোরাই মোবাইল ফোন এবং ১টি ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়।
আটকৃতরা হল- ওই এলাকার মোঃ হেলাল উদ্দিন এর ছেলে হাফিজুর রহমান ওরফে হাসিব (১৯), নাসির শিকদার এর ছেলে নাজমুল শিকদার ওরফে কালিয়া (২৭), কুদ্দুস মুন্সির ছেলে মোঃ ফাহাদ (১৯) এবং রিপন হাওলাদার এর ছেলে তৌহিদুল ইসলাম (১৯)। এদের মধ্যে হাসিবের বিরুদ্ধে তিনটি এবং কালিয়ার বিরুদ্ধে হত্যা সহ ৭ টি মামলার হয়েছে। আটকৃতরা সবাই ওই এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঠবাড়িয়া সেনা ক্যাম্প কমান্ডার এর নেতৃত্বে বাদুরগাছা গ্রামে অভিযান চালিয়ে মাদক, ধারালো অস্ত্র, নগদ অর্থ, চোরাই মোবাইল ফোন ও ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় মঠবাড়িয়া থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
খুলনায় সাড়ে ৬ বর্গকিমির জলাধার-গাছপালা কমেছে
স্টাফ রিপোর্টার
‘এক সময় নগরীর অধিকাংশ বাড়ির আঙিনায় আম, কাঁঠাল, নারকেলসহ বিভিন্ন ধরনের গাছপালা ছিল। অনেক বাড়িতে পুকুর এবং রাস্তার পাশে জলাশয় ছিল। কিন্তু নগরীতে লোকসংখ্যা বাড়ায় পুকুর ভরাট করে ও গাছপালা কেটে ঘরবাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। নতুন সড়ক তৈরি ও প্রশস্ত করার কারণেও গাছপালা কাটা এবং জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। এখন আর নগরীতে আগের মতো গাছপালা ও পুকুর নেই। ১০ তলা কোনো ভবনের ছাদে দাঁড়ালে আগের মতো সবুজ দেখা যায় না– শুধু ভবন আর ভবন।’
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান গতকাল শুক্রবার এভাবেই আক্ষেপ করেন। তিনি ৫৩ বছর ধরে নগরীতে বসবাস করে আসছেন। এখন খুলনা নগরীর আয়তন ৪৫ বর্গকিলোমিটার এবং লোকসংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। তাঁর এই আক্ষেপের প্রমাণ মেলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবান অ্যান্ড রুরাল প্ল্যানিং বিভাগের সাম্প্রতিক গবেষণায়। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, অপরিকল্পিত নগরায়ণের প্রভাবে খুলনা নগরীতে উদ্বেগজনকভাবে কমেছে জলাধার ও গাছপালা। খুলনা নগরীতে ৩০ বছরের ব্যবধানে জলাধার ও গাছপালা কমেছে সাড়ে ৬ বর্গকিলোমিটার এলাকার, যার ব্যাপক প্রভাব পড়ছে নগরীতে।
আরবান অ্যান্ড রুরাল প্ল্যানিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শিল্পী রায় ও সহযোগী অধ্যাপক তানজিল সওগাত নগরায়ণ নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি জানান, তাদের গবেষণায় দেখা যায়, গত ৩০ বছরে নগরীতে জলাধার কমেছে ৪ দশমিক ৬৬ বর্গকিলোমিটার এলাকার। এ ছাড়া গাছপালা কমে গেছে ১ দশমিক ৮৪ বর্গকিলোমিটার এলাকার। নগরীর অধিকাংশ সড়কের পাশে এখন আর আগের মতো গাছপালা নেই।
খুলনা সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালে নগরীতে হোল্ডিং/বাসা ছিল ৩৯ হাজার ৪৩৬টি। ২৪ বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজার ৮১তে। খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবির উল জব্বার বলেন, ভরাট করা হচ্ছে জলাধার, কাটা হচ্ছে গাছ। উদ্বেগজনকভাবে চলছে এই প্রবণতা। এ ব্যাপারে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, খুলনায় অনেক জলাধার ভরাট করে ফেলা হয়েছে। এসব জলাশয় তাপ শোষণ করে নিত। আগে অনেক গাছাপালা ছিল, যেগুলো অক্সিজেন সরবরাহ এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করত। এখন গাছপালা কমে যাওয়ায় বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়েছে। জলাধার ও গাছপালা কমে যাওয়ায় ক্রমাগত বাড়ছে তাপমাত্রা এবং তীব্র গরমের স্থায়িত্ব। নগরীতে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এর ফলে গ্রীষ্মকালে বেশির ভাগ নলকূপে পানি ওঠে না।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আমিরুল আজাদ জানান, চলতি বছরের ২ মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিদায়ী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নদীর তীর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সড়কের দুই পাশ ও বিভাজকে নতুন করে গাছ লাগাতে হবে।
বাগেরহাটে ইলিশ কিনতে ক্রেতাদের ভিড়, চড়া দাম
বাগেরহাট প্রতিনিধি
মা ইলিশ সংরক্ষণে নদী ও সমুদ্রে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে শনিবার (১২ অক্টোবর) দিবাগত রাত থেকে। একই সঙ্গে নিষিদ্ধ থাকবে মাছ পরিবহন, বিপণন ও সংরক্ষণ। এ কারণে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বাগেরহাট শহরের কেবি বাজারে আজ ইলিশ কিনতে ভিড় করেছিলেন ক্রেতারা।
শনিবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপচে পড়া ভিড় ছিল এই আড়তে। চড়া দামে মাছটি বিক্রি হওয়ায় অনেক ক্রেতা খালি হাতে আড়ত থেকে ফিরে গেছেন। দাম বেশি থাকায় ক্ষুব্ধ ছিলেন ভোক্তারা।
সরেজমিনে আজ বিকেলে কেবি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আড়তে এক কেজি ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ ২২০০ থেকে ২৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৪-১৫০০ টাকা উন্মুক্ত নিলাম পদ্ধতিতে বিক্রি হচ্ছিল। কয়েক দিন আগেও, বাগেরহাটের বিভিন্ন বাজারে ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০ থেকে ১ হাজার এবং ৫-৭টায় এক কেজি ওজন হওয়া ইলিশ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া, বাজারের পাশে শহর রক্ষা বাঁধ সড়কের ওপরও মাছ বিক্রি করতে দেখা যায় অনেককে।
এদিকে, শুধু ইলিশই নয় অন্যান্য মাছের দামও ছিল সাধারণ ক্রেতাদের বাজেটের থেকে বেশি। ঢেলা চেলা, চাপিলা, তুলার ডাটি, রুপচাঁদা, কঙ্কন, মেদ, মোচন গাগড়া, সাগরের বাইলা, লইট্টাসহ সব ধরণের মাছ বিক্রি হয়েছে বেশি দামে। সাগরে কাঙ্খিত মাছ না পাওয়া, ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় পরিমাণ কম হওয়ায় বেশি দামে মাছ বিক্রি করতে হয়েছে বলে দাবি ট্রলার মালিকদের।
ট্রলার মালিক কচুয়ার বগা এলাকার রুহুল আমিন বলেন, ‘সাগরে অবরোধ (মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা) শুরু হচ্ছে। এবার ইলিশের মৌসুমে তেমন মাছও পাইনি। যা পাইছি, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বেশি দামে বিক্রির পরেও ঠিকঠাক খরচ উঠবে কিনা বলা যাচ্ছে না।’
জাহিদুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘মাইকিংয়ের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, কাল থেকে ইলিশ বিক্রি বন্ধ। তাই মাছ কিনতে এসেছি। ভেবেছিলাম দাম কম হবে। খুচরা বাজারের থেকে দাম অনেক বেশি।’
হাফিজুর রহমান নামে মাছ ব্যবসায়ী বলেন, ‘সপ্তাহে দুই-তিন দিন এখান থেকে মাছ কিনে কচুয়া, বাধাল, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন স্থানে খুচরা বিক্রি করি। আজকে যে দামে মাছ কিনলাম তাতে খুচরা খরিদদারদের কাছে বেচতে খুব কষ্ট হবে।’
কেবি বাজার মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি শেখ আবেদ আলী বলেন, ‘এবার জেলেরা সাগরে তেমন মাছ পায়নি। অনেক জেলেরই খরচ উঠবে না। গত বছরগুলোতে শেষ দিনে যে পরিমাণ মাছ থাকে, তার তুলনায় ১০ শতাংশ মাছও নেই। শেষ সময়ে সবাই মাছ কিনতে চাচ্ছেন, তাই দাম বেশি। রাত ১২টা পর্যন্ত মাছ ক্রয়-বিক্রি চলবে’
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম রাসেল বলেন, ‘মা ইলিশ রক্ষায় (১২ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টা থেকে আগামী ২ নভেম্বর দিবাগত রাত পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরসহ পশুর ও বলেশ্বর নদীতে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। সেই সঙ্গে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে যে নদী-খাল রয়েছে সেখানেও বড় নৌকা বা ইঞ্জিন চালিত নৌকায় মাছ আহরণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মৎস্য সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ ও নৌবাহিনী কাজ করবে। মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে দিন-রাত সব সময় আমাদের টহল জোরদার থাকবে। জেলেদেরকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।’
গ্রাম থেকে আসা মেয়েদের দিয়ে দেহব্যবসা, পেছনে ছাত্রলীগ নেতা?
স্টাফ রিপোর্টার
প্রবাসী ও ধনী ছেলেদের টার্গেট করে খুলনায় ভয়ংকর প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জাল বিছিয়েছে একটি চক্র। চক্রটি গ্রাম থেকে শহরে আসা মেয়েদের টার্গেট করে প্রথমে অল্প ভাড়ায় ফ্ল্যাটে আশ্রয় দেয়। তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করে সবার মাঝে পরিচিত করে। সর্বশেষ কৌশলে বাধ্য করে দেহ ব্যবসায়। একই সঙ্গে ওই মেয়েদের দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করেও চলে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎ। এসব ছাড়াও চক্রটির বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন, মাদক ব্যবসা, এমনকি নারী পাচারের ভয়ংকর অপরাধেরও অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভোগী এক প্রবাসীর করা অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে নামে । অনুসন্ধানেই বের হয়ে আসে খুলনার বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের টার্গেট করে দেহ ব্যবসা এবং মাদকের ভয়ংকর সিন্ডিকেটের তথ্য।
কাতার প্রবাসী বিলাল (২৬)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্পর্ক হয় খুলনার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দেওয়া নুসরাত জাহান অর্নার সঙ্গে। নুসরাত ও তার মায়ের সঙ্গে নিয়মিত কথা হতো বিলালের। বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ২১ লাখ টাকা নিয়েছে মা ও মেয়ে। প্রেমের ২ বছরের মাথায় ক্যানসার আক্রান্ত বাবার চিকিৎসা করাতে দেশে ফেরেন বিলাল। কিন্তু ফেরার মাত্র একদিন পরই আসল চেহারা দেখায় নুসরাত। তার সিন্ডিকেট দিয়ে নির্মম নির্যাতন চালায় বিলালের ওপর। দেওয়া হয় মামলা।
বিলাল বুঝতে পারেন প্রেমের নামে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ২৬ দিন পর কারামুক্ত হন তিনি। এরপর ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পাল্টা মামলা করেছেন বিলাল। মামলায় এসআই সুকান্ত, নুসরাত জাহান অর্নাসহ চক্রের ৫ সদস্যকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই কর্মকর্তা ইকবাল।
বিলাল অভিযোগ করে বলেন, সাড়ে পাঁচ বছরের প্রবাস জীবন শেষে দেশে এসে ক্যানসারে আক্রান্ত পিতার চিকিৎসা করাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নুসরাত আর তার সিন্ডিকেট যে কত ভয়ংকর হতে পারে তা আমার ধারণার বাইরে ছিল। এসআই সুকান্ত নামে এক পুলিশের মাধ্যমে আমাকে ‘ক্যাসল সালামে’ ডেকে নেওয়া হয়। তারপর আমার মোবাইল কেড়ে নিয়ে আমাকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে যায়। ওসির রুমে অন্তত ৭/৮ জন আমাকে নির্মম নির্যাতন করে। ইলেকট্রিক শক দেয়। আমাকে মারধরের ভিডিও আমার পরিবারের কাছে পাঠিয়ে ৩০ লাখ টাকা দাবি করে। কিন্তু বড় ভাই মাত্র দেড় লাখ টাকা দিতে পারেন। তবে টাকা কম দেওয়ায় আমাকে না ছেড়ে উল্টো আমার মোবাইলে কিছু অশ্লীল ভিডিও পাঠিয়ে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দেয়। রিমান্ডে নিয়ে আবারও নির্যাতন করে। রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর ২৬ দিনের মাথায় আমি জামিনে মুক্তি পাই।
শুধু বিলাল না, হাতে আসে এই চক্রটির হাতে প্রতারিত ও নির্যাতনের শিকার এমন আরও অন্তত ৬ ভুক্তভোগীর তথ্য। এদের মধ্যে ইরাক প্রবাসী, দুজন ছাত্র ও দুজন ব্যবসায়ী রয়েছেন।
এমনই এক ব্যক্তি ইরাক প্রবাসী শাকিল (ছদ্মনাম)। তিনি বলেন, ২০২৩ সালে ইরাকে থাকাকালে আমার সম্পর্ক হয় তাসমি নামে এক মেয়ের সঙ্গে। প্রেমের অভিনয় করে পড়াশোনা ও ভরণপোষণ বাবদ আমার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা নেয়। এক পর্যায়ে তাসমি ও তার চক্র সম্পর্কে জেনে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিই আমি। কিন্তু দেশে আসার পর আমার ওপর তারা নির্যাতন চালায়। আমার বিরুদ্ধে মামলা দেয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এই চক্রের দেহ ব্যবসার অংশে নেতৃত্ব দেন সোনাডাঙ্গা থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাহিম হাসান আকাশ। অনিক নামে একজনের গাড়িতে সাতক্ষীরা থেকে নিয়মিত ফেনসিডিল ও গাঁজার চালান আনতেন বলে অভিযোগ আছে। নগরীর মজিদ স্মরণী রোডের ধাবা রেস্টুরেন্টে চলে এসব ফেনসিডিল ও গাঁজার অবৈধ বেচাকেনা।
রেস্টুরেন্টের সাবেক এক কর্মচারী বলেন, এলাকার কাউন্সিলর রাজুল ইসলাম রাজুর ডান হাত হিসেবে পরিচিত হওয়ায় রেস্টুরেন্টটি মূলত ফাহিমের নিয়ন্ত্রণে ছিল। যা ইচ্ছা তাই করত। এখানেই মাদক সেবনসহ সব ধরনের অপকর্ম করত সে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিশেষ করে যারা গরিব এবং সুন্দরী তাদের টার্গেট করেন ফাহিমের কথিত স্ত্রী নুসরাত তাসমি। তাসমির বিরুদ্ধে ইরাক প্রবাসী ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, ধনীর ছেলেদের টার্গেট করে কৌশলে ফাঁসিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক প্রমাণ মিলেছে।
গ্রুপের অপর সদস্য নুসরাত জাহান অর্না। কাতার প্রবাসী ব্যবসায়ী, কলেজ শিক্ষার্থী, মোটরসাইকেল শোরুম মালিক এবং এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অর্নার এসব কাজে তার মূল হাতিয়ার মা সালমা বেগম। এ ছাড়া সুমাইয়া সুলতানা রিমা নামে গ্রুপের অপর সদস্যের নামে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, ভয়ংকর এই চক্রের গড মাদার হিসেবে রয়েছে ফাতেমা আফরোজ। খুলনা অনলাইন শপিং নামে এক ফেসবুক পেজের এডমিন তিনি। মিল শ্রমিক বাবার দরিদ্র সংসারের মেয়ে ফাতেমা আফরোজ এখন একাধিক ফ্ল্যাট ও গাড়ির মালিক। খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, শেখ সোহেলের বন্ধু হিসেবে পরিচিত কাজী ফয়েজ এবং একজন সাংবাদিক নেতার বন্ধু হিসেবে পরিচিত এই ফাতেমা আফরোজ।
দীর্ঘদিন ব্ল্যাকমেইল হওয়া এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, আমার মতো গ্রাম থেকে আসা অনেকেই এই চক্রের মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছে। নর্দান এবং নর্থওয়েস্টার্ন এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এবং বর্তমান কিছু শিক্ষার্থী সোনাডাঙ্গা দ্বিতীয় ফেজ আবাসিক এলাকায় একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে এসব অবৈধ কার্যক্রম চালায়। আমি এদের বিচার চেয়ে কোথাও বিচার পাইনি। পরে আত্মহত্যা করার জন্য আমি ছাদ থেকে লাফ দিই। কিন্তু প্রাণে বেঁচে যাই। সেখান থেকে আমি খুলনার বাইরে। এখনো খুলনায় যেতে পারছি না।
অভিযোগের বিষয়ে ফাহিম হাসান আকাশ বলেন, কাতার প্রবাসী যে ছেলে সব জায়গায় অভিযোগ করেছে তার সাথে অর্ণা নামে এক মেয়ের সম্পর্ক ছিল। অর্ণা আমাদের ছোট বোন। অর্ণার সাথে কোনো ছেলেকে কথা বলতে দেখলে বা জানলে ওই কাতার প্রবাসী তাকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিত। এভাবে অর্ণার জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। আমরা শুনেছি যে, ওই ছেলে কাতার থেকে ফিরেছে এবং পুলিশ তাকে এসব অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। তখন আমিসহ অন্তত ৫০-৬০ জন সদর থানায় তাকে দেখতে যাই। কিন্তু আর কোনোদিন তার সাথে আমার দেখা বা কথা হয়নি।
তিনি বলেন, আমার স্ত্রী তাসমি ওই ছেলেটার কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়নি। আমার স্ত্রী বরং ওকে বিভিন্ন সময়ে টাকা পাঠিয়েছে যার তথ্য আমার কাছে আছে।
অভিযোগের বিষয়ে চক্রের অন্যতম সদস্য নুসরাত তাসমি বলেন, সাইমুম নামে আমার কোনো স্বামী নেই। দুই বছর আগে আমাদের একটা সম্পর্ক ছিল। এখন তার লাইফ নিয়ে সে ভালো আছে, আমার লাইফ নিয়ে আমি ভালো আছি। আমাদের বিষয় সেটেল্ড হয়ে গেছে, এই বিষয় নিয়ে আমি আর কোনো কথা বলতে চাই না। অপরদিকে ফাতেমা আফরোজের মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপে একাধিকবার কল দিলেও কলটি রিসিভ হয়নি। পরে অভিযোগের বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দেওয়া হলেও তার কোনো রিপ্লাই পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, ‘আমি সদ্য যোগদান করেছি। এখন পর্যন্ত এ ধরনের অভিযোগ পাইনি। অপরাধের সঙ্গে পুলিশ সদস্য বা যেই জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সেতুতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, ৬ মাস না পেরোতেই পাটাতনে ধস
মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার চিনাটোলা বাজারে হরিহর নদের ওপর নির্মিত সেতুতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মানুষের চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেওয়ার ছয় মাস না পেরোতেই পাটাতনের বিভিন্ন স্থানে ধসে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ পাটাতন সংস্কারের কাজ শুরু করলে স্থানীয়রা বাধা দিয়েছেন। এলাকাবাসী নতুন করে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, চিনাটোলা বাজার থেকে মনোহরপুর বাজার সড়কের হরিহর নদের ওপর ৪২ মিটার লম্বা একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ১২ লাখ ৯৩ হাজার ২১১ টাকা। গত বছরের ১২ নভেম্বর সেতু উদ্বোধনের কথা থাকলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে তা হয়নি। পরে চলতি বছরের মার্চে জনসাধারণের চলাচলের জন্য সেতু উন্মুক্ত করা হয়। গত আগস্টের প্রথম দিকে সেতুর পাটাতনের পলেস্তারা ধসে পড়তে শুরু করে। ধীরে ধীরে বড় একটি অংশ ধসে রড বেরিয়ে পড়ে। দুই মাস ধরে সেতু পারাপারে ভোগান্তিতে পড়েছে পথচারীরা। এই সেতুর সড়ক দিয়ে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শাহীন চাকলাদারের ভাই শামীম চাকলাদার সেতু নির্মাণের ঠিকাদার ছিলেন। যশোর-৫ আসনের (মনিরামপুর) এমপি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের অনুসারী শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের সহযোগিতায় দায়সারাভাবে সেতুর কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদার। বরাদ্দের সিংহভাগ টাকা লোপাট হওয়ায় উদ্বোধনের পরপরই সেতুতে ধস নেমেছে।
দায়সারাভাবে সেতুর কাজ করার সময় স্থানীয়রা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তখন শাহীন চাকলাদার ও আলম চেয়ারম্যানের ভয় দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
গতকাল বৃহস্পতিবার সেতুর দুপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে চিনাটোলা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালের ৬ অক্টোবর সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে নির্ধারিত মেয়াদের এক বছরের বেশি সময় পর দায়সারাভাবে সেতুর কাজ শেষ করেছেন।
সেতুর পূর্ব পাশের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, ‘সেতু খুলে দেওয়ার চার-পাঁচ মাসের মাথায় পাটাতনের পলেস্তারা ফেটে নদীতে পড়ে কয়েকটি গর্ত সৃষ্টি হয়। পরে উপজেলায় খবর দিলে ইঞ্জিনিয়ার অফিসের লোক এসে গর্তগুলো বন্ধ করে দিতে চান। আমরা বাধা দিয়েছি। বলেছি, সেতু ভেঙে নতুন করে করতে হবে। তখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে আরও লোকজন আসে। আমাদের বাধার মুখে তাঁরা সেতুর পাটাতন ভাঙা শুরু করেন। এখন কাজ বন্ধ করে রেখেছে ইঞ্জিনিয়ার অফিস। এতে করে সেতু দিয়ে চলাচলে আমাদের কষ্ট হচ্ছে।’
আমির হোসেন আরও বলেন, ‘সেতুর জন্য আনা রড অনেক দিন ফেলে রেখেছিল। এতে রডে মরিচা পড়েছিল। পরে কিছু রড তুলে নিয়ে যান ঠিকাদার। বাকি রড দিয়ে কোনো রকমে সেতুর কাজ করেছেন। যে মাপের রড ব্যবহার করার কথা, সেটা এখানে করা হয়নি।’
স্থানীয় জিয়ারুল গাজী বলেন, ‘সেতু তৈরির সময় ঠিকাদারের লোকজন দায়সারাভাবে কাজ চালাচ্ছিলেন। তাঁরা অন্য এলাকা থেকে সিমেন্ট ও বালু মিশিয়ে ট্রাকে করে এনে ঢালাই দিয়েছেন। যতটুকু মোটা করে পাটাতন ঢালাই দেওয়ার কথা ছিল, সেই নিয়মে ঢালাই দেওয়া হয়নি। এখন সেতুর পাটাতন ভাঙার সময় হাতুড়ির আঘাতে ধুলো উড়ছে। পায়ের আঙুল দিয়ে খোঁচা দিতেই খণ্ড খণ্ড ইট-বালু উঠে আসছে। এ ছাড়া সেতুর মাঝের অংশ নিচের দিকে চাপা। একটু বৃষ্টি হলেই সেখানে পানি জমে।’
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলমের লোকজন সেতুর কাজ চলার সময় উপস্থিত থাকতেন বলে জানান জিয়ারুল গাজী। তিনি বলেন, ‘কাজে অনিয়ম দেখে বাধা দিতে গেলে শাহীন চাকলাদার ও আলম চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে বলা হতো। তখন ভয়ে আমরা চুপ হয়ে যাই।’
সেতুপাড়ের চা দোকানদার আব্দুর রহমান বলেন, ‘সেতুর পূর্ব পাশে উদ্বোধনের একটি নামফলক স্থাপন করা আছে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য সেতু উদ্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি উদ্বোধন করতে আসেননি। নামফলকে উদ্বোধনের যে তারিখ দেওয়া আছে, তারও ২০-২২ দিন পরে এসে নামফলক লাগানো হয়েছে।’
স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি লুৎফর গাজী বলেন, ‘কাজের অনিয়ম দেখে বাধা দিতে গেলে চেয়ারম্যান আলমগীর আমাকে পাত্তা দেননি। “বিএনপি-জামায়াতের কথা চলবে না” বলে আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা চাই জোড়াতালি দিয়ে নয়, নতুন করে সেতুর কাজ করতে হবে, যাতে আমরা অনেক বছর সেতু ব্যবহার করতে পারি।’
এ বিষয়ে শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ‘স্থানীয়দের অভিযোগ সত্যি না। ক্ষোভ থেকে এখন তাঁরা অনেক কথা বলছেন।’
সেতু নির্মাণের ঠিকাদার শামীম চাকলাদার বলেন, ‘আমার লাইসেন্সে অন্য একজন ঠিকাদার কাজ করেছেন। পাটাতন ঢালাইয়ের সময় অন্য জায়গায় সিমেন্ট-বালু মিশিয়ে এনে কাজ করা হয়েছে। এতে উপাদানের স্থায়িত্ব কমে যাওয়ায় এমনটি হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু আমার লাইসেন্সে কাজ করা হয়েছে। পাটাতন ধসে পড়ার দায় আমার ওপর বর্তায়। পাটাতনের কাজ নতুনভাবে করা হবে।
সেতুর কাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী গাউসুল আজম বলেন, ‘শুনেছি, ৫ আগস্ট সরকােরর পতনের দিন স্থানীয় লোকজন পিটিয়ে সেতুর মেঝে ভেঙে ফেলেছে। ঠিকাদার ও স্থানীয় আলমগীর চেয়ারম্যান একই দাবি করেছেন।’
মনিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ দাস বলেন, ‘সেতুর পাটাতন ধসে পড়ার খবর পেয়ে আমরা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। প্রথম দিকে স্থানীয়রা বাধা দিয়েছিলেন। এখন সবার সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত সেতুর সংস্কারকাজ শুরু করা হবে।’
দল-মত-ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার ও নিরাপত্তা পাওয়ারও অধকিার সবার:এ্যাডঃ মোমরেজুল ইসলাম
কয়রা(খুলনা)প্রতিনিধি
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজাকে ঘিরে অপতৎপরতা ঠেকাতে মাঠে থাকবে বিএনপি উল্লেখ করে দলটির কয়রা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এ্যাডঃ মোমরেজুল ইসলাম বলেছেন, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার। পরাজিত পতিত শক্তি শারদীয় দূর্গাপূজাকে ঘিরে অপতৎপরতা শুরু করেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজায় কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার চক্রান্ত যাতে কেউ করতে না পারে, সে বিষয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সব ধর্মের মানুষের নির্বিঘ্নে ধর্ম পালনের অধিকারে বিশ^াসী বিএনপির নেতাকর্মীরা সার্বক্ষণিক সজাগ দৃষ্টি রাখবে।
বাংলাদেশ আপনার আমার সবার। প্রতিটি নাগরিক সবক্ষেত্রে সমান অধিকার ভোগ করবে, এটাই বিএনপির নীতি ও রাজনীতি। বিএনপি বিশ^াস করে দলমত ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার। তিনি আরও বলেন, আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সব সময় বলেন যে , আমি সংখ্যালঘু কথাটিতে বিশ^াসী বিশ^াস করি না, আমি বিশ^াস করি এদেশে যারা আছেন সবাই বাংলাদেশের নাগরিক, তাদের পরিচয় একটা তারা বাংলাদেশি। আপনার সংখ্যায় কম হতে পারেন, কিন্তু অধিকার সবার সমান। এসময় তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং নিজের পক্ষ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের জনগণকে শারদীয় শুভেচ্ছা জানান এবং তাদের সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি কামনা করে বলেন, আপনারা প্রত্যেক উৎসব উদযাপন করুন নির্ভয়ে নিশ্চিন্তে নিরাপদে। শুধু উৎসবের সময় নয় বরং আপনাদের সুখ-দুঃখসহ যেকোন পরিস্থিতিতে আপনারা আমাদের ডাকলে আমি ছুটে আসব।
শনিবার (১২ অক্টোবর) সারাদিন ব্যাপী উপজেলায় বিভিন্ন পুজা মন্ডপ পরিদর্শন করে, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ নারী পুরুষ সহ সকলের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং খোঁজ খবর নেন।
এসময় তার সফর সঙ্গী হিসেবে ছিলেন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এম এ হাসান, মনিরুজ্জামান বেল্টু, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন লিটন, আবুল বাসার ডাবলু, শহিদুল্লাহ শাহীন, যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ইসানুর রহমান, আকবর হোসেন, ইউনুছ আলী, জিয়া প্রজন্ম দলের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সেচ্ছাসেবক দলের, রবিউল ইসলাম, শাহিনুর রহমান, মাছুম বিল্লাহ, আনিছুর, জামাল হোসেন, ছাত্রদলে সভপাতি আরিফ বিল্লাহ সবুজ, ছাত্র নেতা ইমরান হোসেন, রুহুল আমিন বাবুসহ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সহ বিএনপির সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
নানান আয়োজনে বিশ্ব ডিম দিবস পালিত
খবর বিজ্ঞপ্তি
১১ অক্টোবর ’২৪ শুক্রবার ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ উপলক্ষে গত ১০ অক্টোবর ’২৪ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বিভাগীয় ও জেলা পাণিসম্পদ দপ্তর, খুলনার আয়োজনে বিশ্ব ডিম দিবসের এক বর্ণাঢ্য র্যালী নগরীর পাওয়ার হাউস পশু হাসপাতাল চত্বর থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ডিএলও অফিস মিলনায়তনে আলোচনা সভা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা খুলনা ডা. শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। “ডিমে পুষ্টি ডিমে শক্তি, ডিমে আছে রোগমুক্তি” শীর্ষক প্রতিপাদ্যে এবারের ডিম দিবসের উপর পাওয়ার প্রেজেন্টেশনের উপস্থাপনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. নুরুল্লাহ মোঃ আহসান। বিশেষ অথিতি হিসেবে বক্তৃতা করেন উপপরিচালক ডা. এ বি এম জাকির হোসেন, এডিএলও ডা. রঞ্জিতা চক্রবর্ত্তী, খুলনা পোল্ট্রি ফিশ ফিড শিল্প মালিক সমিতি’র সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা ইব্রাহিম ফয়জুল্লাহ, মহাসচিব প্রাণিপ্রেমী এস এম সোহরাব হোসেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাগণ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ভেটেনারী সার্জন, ডিম উৎপাদনকারী-খামারী-ব্যবসায়ীরা।
১১ অক্টোবর ’২৪ শুক্রবার বিপিআইএফ, খুলনা বিভাগীয় কমিটি : খুলনা পোল্ট্রি ফিশ ফিড শিল্প মালিক সমিতি’র উদ্যোগে বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে অন্ধ-প্রতিবন্ধীদের সংগঠন খুলনা ট্রেনিং রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার অব ব্লাইন্ড-এর সদস্যদের এবং মৌলভীপাড়া সুলতান আহমেদ সড়কস্থ কোচিং সেন্টারে দুঃস্থ ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিনা মূল্যে নিরাপদ-পুষ্টিকর সিদ্ধ ডিম বিতরণ করা হয়।
১২ অক্টোবর শনিবার বিকেল ৪টায় খুলনা পোল্ট্রি ফিশ ফিড শিল্প মালিক সমিতি’র উদ্যোগে সংগঠনের ডাল মিলস্থ কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা ইব্রাহিম ফয়জুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব প্রাণিপ্রেমী এস এম সোহরাব হোসেনের পরিচালনায় বক্তারা বলেন, ডিম আমদানী না করে দেশে উৎপাদন বাড়াতে হবে। ক্ষুদ্র-মাঝারী খামারীদের উৎপাদনের খরচ কমালে ডিমের মূল্য কমে যাবে। ভোক্তা সাধারণ ও খামারীদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকল্পে সরকারের সকল ভর্তুকী-সারচার্জ সহায়তায় দেশী-বিদেশী বহুজাতিক লটেরা কোম্পানীগুলো নিয়ে যায়, তা বন্ধ করতে হবে। বক্তারা সরকারকে মুনাফালোভী বড় কোম্পানির লাগাম টেনে ন্যায্যমূল্যে ভোক্তাদের ডিম খাওয়ার ব্যবস্থা করার দাবী জানান। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তৃতা করেন সহ-সভাপতি সৈয়দ মোঃ বেলাল হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব আরিফুল রহমান বাবু, তপন পাল, কোষাধ্যক্ষ আলহাজ্ব মামুনুর রহমান, প্রচার সম্পাদক শেখ আব্দুল হালিম, নির্বাহী সদস্য শাহ জাফর মামুদ মেহেতা, শেখ আইনুল হক, মেঃ মোতালেব শেখ, মোঃ সাইদুল মোল্লা, সরদার মোশারফ হোসেন, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, এস এম তামজিদ হোসেন সৌরভ, সোহেল রানাসহ খামারী-ব্যবসায়ীরা।